বিজেপির ইশতেহার: অনুপ্রবেশ ও এনআরসির ওপর জোর
ভারতের প্রথম দফার লোকসভা নির্বাচনের দুই দিন আগে শেষ মুহূর্তে ইশতেহার প্রকাশ করল বিজেপি। গত পাঁচ বছরের কর্মকাণ্ডের খতিয়ান তুলে ধরে ইশতেহার মূল ভাবনা করা হয়েছে ‘কাম করনেওয়ালি’ সরকার।
পাশাপাশি প্রতিশ্রুতি সমৃদ্ধ এই ইশতেহারকে ‘সংকল্প পত্র’ বলে দাবি করেছে বিজেপি। ইশতেহারে ভারতে কাশ্মীরিদের বিশেষ অধিকার প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার কথাও বলা হয়েছে এতে।
এদিন বিজেপির ইশতেহার প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। অমিত শাহ ইশতেহার প্রকাশের পর বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গত পাঁচ বছরে সরকার ৫০টি বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমাদের সরকার দেশ বদলাতে বড় ভূমিকা নিয়েছে। আমরা এই সংকল্পপত্র তৈরির আগে ভারতের ৬ কোটি মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। ২০১৪ সালে আমরা যখন ক্ষমতায় আসি, তখন ভারত বিশ্বের একাদশ অর্থনীতিতে ছিল, আজ আমরা পৃথিবীর মধ্যে পঞ্চম বৃহৎ অর্থনীতিতে অবস্থান করছি।
এবারে বিজেপির এই ইস্তেহারে (সংকল্পপত্রে) বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়েছে সন্ত্রাসবাদ ও অনুপ্রবেশ। ২০১৪ সালের মতোই সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে একই অবস্থানে রয়েছে বিজেপি। ইশতেহারে বলা হয়েছে, বিজেপির নেতৃত্বাধীন সরকার এলে তারা সন্ত্রাসবাদকে মেনে নেবে না। পাশাপাশি উগ্রবাদকেও সহ্য করা হবে না বলে জানানো হয়েছে।
বিজেপির এই ইশতেহারে স্পষ্ট বলা হয়েছে, বেশ কিছু সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে ভারতীয় সেনাকে যেমন স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে সেই নীতিতেই আগামীতে চলতে চায় বিজেপি। জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র কেনার উপর জোর দিয়েছে দলটি। ভারতের আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা জোরদার করতে সেন্ট্রাল আর্মড পুলিশ ফোর্সকে আরও বেশি শক্তিশালী করে তোলার ভাবনার কথাও উল্লেখ রয়েছে।
ইস্তেহারে সাফ জানানো হয়েছে, কোনোমতেই অনুপ্রবেশকে তারা সহ্য করবে না। দাবি করা হয়েছে, ভারতের বিভিন্ন জায়গায় অনুপ্রবেশের জন্য সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত প্রভাব পড়েছে। এনআরসির (জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন) ওপরে জোর দেওয়ার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
বিজেপির ইশতেহারে আরও বলা হয়েছে, সীমান্ত নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সাঁড়াশী চাপ বাড়ানো হবে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটান সীমান্তে চেক পোস্ট বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। এর আগে কংগ্রেস তাদের ইশতেহারে বেশ কিছু চমক রাখলেও বিজেপি মূলত দেশের নিরাপত্তা এবং সমৃদ্ধিকেই পাখির চোখ করেছে।
কংগ্রেস তাদের ইশতেহারে ভারতের গরিব জনগণকে বছরে ৭৫ হাজার রুপি সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে চমক দিয়েছে। সেখানে দাঁড়িয়ে বিজেপি মূলত ‘দেশভক্তি’র তাস খেলে কৃষকদের ও গ্রাম উন্নয়নের ওপর জোর দিতে চেয়েছে।
এই ইশতেহার প্রকাশের পর একে প্রকৃত জনদরদী ইশতেহার বলে দাবি করেছেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। পাশাপাশি তিনি পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের ইশতেহারকে উগ্রপন্থীদের ইশতেহার বলেও কটাক্ষ করেন।
Comments