টটেনহ্যামকে হারিয়েও সিটির বিদায়
অবিশ্বাস্য! দুর্দান্ত! সব বিশেষণই কম পড়বে টটেনহ্যাম হটস্পার্স ও ম্যানচেস্টার সিটির ম্যাচ বর্ণনা করতে। কি ছিল না ম্যাচে। শুরু থেকেই টান টান উত্তেজনা। ১১ মিনিটেই চার গোল। একবার ম্যানচেস্টার সিটি এগিয়ে গেলে পরের বার যায় টটেনহ্যাম হটস্পার্স। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জিতে নেয় সিটিই। কিন্তু তারপরও সেমিফাইনালে উঠতে পারেনি দলটি। দুই লেগ মিলিয়ে ব্যবধান ৪-৪। অ্যাওয়ে গোলের সুবাধে সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয় মাউরিসিও পচেত্তিনোর শিষ্যরা।
ম্যাচের শেষ মুহূর্তে হয় বড় নাটক। আগুয়েরোর পাসে রহিম স্টার্লিংয়ের দারুণ এক শটে বল জালে। উল্লাসে ফেটে পড়ে পুরো ইতিহাদ স্টেডিয়াম। খেলোয়াড়রা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে আনন্দে মাতেন। কম যাননি কোচ পেপ গার্দিওলাও। ওইদিকে পিনপতন নীরবতা টটেনহ্যামে শিবিরে। মুখের ভাষা যেন হারিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু হাসি ফিরল রেফারির সিদ্ধান্তে। ভিএআরের সাহায্যে গোলটি যে বাতিল করেছেন রেফারি। অফসাইডে ছিলেন আগুয়েরো। রং বদলে যায় ম্যাচের। এভাবে ম্যাচের প্রতি মুহূর্তেই রং বদলেছে। তবে শেষ হাসি হাসলো টটেনহ্যামই।
ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে রহিম স্টার্লিংয়ের গোলে এগিয়ে যায় সিটি। কেভিন ডি ব্রুইনের পাস থেকে বাঁ প্রান্তে ডি বক্সে ঢুকে দুর্দান্ত এক কোণাকোণি শটে লক্ষ্যভেদ করেন এ ইংলিশ ফরোয়ার্ড। গোল শোধ করতে তিন মিনিট সময় নেয় টটেনহ্যাম। সপ্তম মিনিটে ডিফেন্ডারের ভুলে ডি বক্সের সামনে ফাঁকায় বল পেয়ে যান সন হিউং-মিন। আর সে সুযোগ থেকে গোল আদায় করে নিতে কোন ভুল করেননি এ কোরিয়ান তারকা।
তিন মিনিট পর এবার এগিয়ে যায় টটেনহ্যাম। ক্রিস এরিকসনের ক্রস থেকে দুর্দান্ত এক কোণাকোণি শটে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন সন। তবে গোল শোধ করতে এক মিনিটের বেশি সময় নেয়নি সিটি। একাদশ মিনিটে ডি ব্রুইনের ক্রস থেকে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে লক্ষ্যে শট নেন বেরনার্দো সিলভা। ড্যানি রোজের পায়ে লেগে দিক বদলে জালে জড়ায় সে শট।
২১তম মিনিটে আবার এগিয়ে যায় সিটি। ডান প্রান্ত থেকে সের্জিও আগুয়েরো গোলমুখে ক্রস দেন। আলতো টোকায় সে বল জালে জড়ান স্টার্লিং। ৪৩তম মিনিটে নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করতে পারতেন সন। এরিকসনের পাস থেকে কোণাকোণি জোরালো এক শট নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অল্পের জন্য তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
৫০তম মিনিটে টটেনহ্যামের ত্রাতা গোলরক্ষক হুগো লরিস। দাভিদ সিলভার পাস থেকে লক্ষ্যে শট নিয়েছিলেন স্টার্লিং। সে শট দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন টটেনহ্যাম গোলরক্ষক। চার মিনিট পর আবারো টটেনহ্যামকে রক্ষা করেন তিনি। এবার ডি ব্রুইনের জোরালো শট ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন এ ফরাসী।
৫৮ মিনিটে ডেলে আলীর ক্রস থেকে একেবারে ফাঁকায় হেড দেওয়ার সুযোগ পেয়েও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি ফের্নান্দো লোরেন্তে। তার হেড ফিরিয়ে দেন সিটি গোলরক্ষক এডেরসন। পরের মিনিটে পাল্টা আক্রমণ থেকে কাঙ্ক্ষিত গোল পায় সিটি। ডি ব্রুইনের পাস থেকে ডান প্রান্তে দুর্দান্ত এক কোণাকোণি শটে বল জালে জড়ান আগুয়েরো।
কিন্তু ৭৩ মিনিটের সিটির হাসি কেড়ে নেয় টটেনহ্যাম। ব্যবধান কমায় তারা। যে গোলের সুবাদে সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয় দলটি। কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে টবি অল্ডারওয়েরেল্ডের হেড লোরেন্তের গায়ে লেগে বল জালে জড়ায়। ভিএআরের সাহায্য নিয়ে গোলের বাঁশি বাজান রেফারি।
৭৯ মিনিটে কাইল ওয়াকারের ক্রস থেকে দারুণ এক হেড নিয়েছিলেন আগুয়েরো। কিন্তু সে যাত্রা আরও একবার দলকে রক্ষা করেন হুগো লরিস। ৮৫ মিনিটে লড়ে সানে হেড থেকে ফাঁকায় শট নিয়েছিলেন গুন্ডুগান। কিন্তু লক্ষ্যে থাকেনি। ফলে জিতেও মাথা নিচু করেই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের।
Comments