পশ্চিমবঙ্গে ভোটগ্রহণ চলছে, চলছে সংঘর্ষ

India vote
১৮ এপ্রিল ২০১৯, ভারতে চলমান দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে সংঘর্ষ হয়। ছবি: স্টার

বেশ কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে ভারতের দ্বিতীয় দফার ভোট গ্রহণ চলছে পশ্চিমবঙ্গে। রাজ্যের ৪২ আসনের মধ্যে আজ (১৮ এপ্রিল) ভোট নেওয়া হচ্ছে দার্জিলিং, রায়গঞ্জ এবং জলপাইগুড়ি আসনে।

বিভিন্নস্থানে সংঘর্ষে অন্তত ৬০ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে দুজন সাংবাদিক ও দুজন পুলিশ সদস্য রয়েছেন।

ভোটে অশান্তির জেরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২৫ জনকে।

ভারতের স্থানীয় সময় সকাল সাতটা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হলে প্রথম তিন ঘণ্টায় ভোট পড়েছে গড়ে ১৮ শতাংশ। ভোট চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সকালে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ শুরু হয় শৈলশহর দার্জিলিংয়ে। শুধু পাহাড় নয়, দার্জিলিং আসনের সমতলেও ছবিটিও প্রায় একই ছিলো। কিন্তু, সময় গড়াতেই ভোটের অশান্তির আবহ স্পষ্ট হয়ে উঠে।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উত্তপ্ত হতে শুরু করে রায়গঞ্জ এবং দার্জিলিং আসনের বেশ কিছু এলাকা।

দার্জিলিংয়ের চোপড়ায় রাজ্যের শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোট সন্ত্রাসের অভিযোগ তোলে দেশটির ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন গ্রামবাসীরা।

এর আগে রায়গঞ্জের ইসলামপুর মহকুমার স্থানীয় একটি টেলিভিশন চ্যানেলের সাংবাদিক ও চিত্রগ্রাহকে বেঁধে পেটানো হয়। তারা দুজনই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়াও, সেখানে আরও আটজন আহত হয়েছেন।

এদিকে, চোপড়ার ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যসহ আহত হয়েছেন ৫০ জন। তবে তাদের মধ্যে কেই গুরুত্বর জখম নন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এদিন ১২৮ নম্বর বুথে ভোট দিতে গিয়ে বাধা পান। বলা হয়, ভোট দিলে প্রত্যেকেই বিজেপিকে ভোট দেবে। তাই তাদের ভোট কেন্দ্রের ভেতর ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এমনকী, দু-তিনজন ভোটারকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ তোলেন গ্রামবাসী ভোটাররা।

এর প্রতিবাদে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের বসে পড়েন ভোট দিতে না পারা গ্রামবাসীরা। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর সেখানে পুলিশ ও নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধি পৌঁছালে বিক্ষোভকারীরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে শুরু করেন।

পুলিশ বাধ্য হয়ে তখন প্রথমে লাঠিচার্জ এবং পরে টিয়ারসেল ছোড়ে। দু-পক্ষের মধ্যে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ চলে।

এই অশান্তি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি এখনও। এমনকী, নির্বাচন কমিশনও কোনও বিবৃতি দেয়নি।

তবে রাজ্যের নির্বাচন কমিশনের নিযুক্ত বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দূবে জানিয়েছেন, ভোটে এ ধরণের কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে এটিই স্বাভাবিক।

ওদিকে কিছুক্ষণ আগে রায়গঞ্জের বামফ্রন্ট প্রার্থী মহম্মদ সেলিমের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। তার অভিযোগ শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। বিষয়টি লিখিতভাবে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করা হবে বলে টেলিফোনে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে জানান।

একইভাবে মালবাজারে বিজেপি অফিস ভাঙচুর করে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠছে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে।

জলপাইগুড়ি আসনে ১৭ লাখ ৩১ হাজার, রায়গঞ্জে ১৫ লাখ ৯৯ হাজার এবং দার্জিলিং আসনের ভোটারের সংখ্যা ১৬ লাখ ৫শ ৬৪। এই তিনটি আসনের রাজ্যের প্রধান চার প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি, বামফ্রন্ট এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।

ওদিকে গোটা দেশের এদিন ১১টি প্রদেশ এবং ১টি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে ভোট নেওয়া হচ্ছে। ১৫ কোটি ৫৩ লাখ ৬৪ হাজার ৩২৩ জন ভোটার আজ ৯৫ লোকসভা আসনের ১ হাজার ৫৯৬ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ করবেন।

সাত দফার ভোটের প্রথম দফা ভোট নেওয়া হয় গত ১১ এপ্রিল। সেদিন ২০ রাজ্যের ৯১ আসনের ভোট হয়।

Comments

The Daily Star  | English

7 colleges to continue operating under UGC until new university formed

Prof AKM Elias, principal of Dhaka College, to be appointed as the administrator

29m ago