নায়ক থেকে খলনায়ক

সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়— সরকারিভাবে এটিই আমাদের পররাষ্ট্রনীতির মৌলিক প্রতিপাদ্য। গত ৪৮ বছরে এ নীতির ওপর ভিত্তি করেই এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি। সরকার পরিবর্তন হলেও এ নীতির তেমন উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়নি।
Ferdous
পশ্চিমবঙ্গে উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ আসনে তৃণমূল প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারে ফেরদৌস

সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়— সরকারিভাবে এটিই আমাদের পররাষ্ট্রনীতির মৌলিক প্রতিপাদ্য। গত ৪৮ বছরে এ নীতির ওপর ভিত্তি করেই এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি। সরকার পরিবর্তন হলেও এ নীতির তেমন উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়নি।

সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সমর্পক এক অনন্য উচ্চতায় আছে যা দুই দেশের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ বহুবার বলেছেন। এ সম্পর্ক শুধুই এগিয়ে যাওয়ার। যদিও বিএনপিসহ কিছু রাজনৈতিক দল অনেকবার চেষ্টা করেছে বলার জন্য যে বাংলাদেশ শুধুই দিয়েছে বিনিময়ে কিছুই পায়নি। কিন্তু সে প্রচারণা খুব বেশি হালে পানি পায়নি।

গত রোববার (১৪এপ্রিল) উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ লোকসভা আসনে তৃণমূলের প্রার্থীর হয়ে প্রচার চালিয়েছেন বাংলাদেশ ও কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেতা ফেরদৌস। হুডখোলা জিপে এই প্রচারাভিযানে ছিলেন স্থানীয় অভিনেতা অঙ্কুশ হাজরা এবং অভিনেত্রী পায়েল।

ভোটের প্রচারে বাংলাদেশি চলচ্চিত্র অভিনেতার অংশ নেওয়ার ঘটনা নিয়ে ভারতের নির্বাচনের চলমান আবহে রীতিমত তোলপাড় শুরু হয়েছে।

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, ফেরদৌস আহমেদের ভিসা–সংক্রান্ত আচরণ লঙ্ঘনের প্রতিবেদন পাওয়ার পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার ভিসা বাতিল করেছে। তাকে দেশত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে তাকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

ফের‌দৌস তার সি‌নেমা ক্যা‌রিয়ারের সাফল্য পান ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ থেকে এবং সেটা কলকাতা থে‌কেই। ফ‌লে বাংলাদেশের সঙ্গে সঙ্গে কলকাতাতেও ফের‌দৌস জনপ্রিয়। পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিবিদরা তার জনপ্রিয়তাকে ভোটের মাঠে কাজে লাগাতে চেয়েছে। তিনিও হয়তোবা এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে পশ্চিমবঙ্গে জনগণের আরও কাছে যেতে চেয়েছেন, জনপ্রিয়তার পারদটা একটু বাড়িয়ে নিতে চেয়েছেন।

আর এটা করতে গিয়েই তি‌নি বি‌দেশি নাগ‌রিক হিসে‌বে ভার‌তের আইন লঙ্ঘন ক‌রে‌ছেন।

এক জন বিদেশি হয়ে কখনো কোনো গণতান্ত্রিক দেশে তাও আবার সেদেশের জাতীয় নির্বাচনে একটি নির্দিষ্ট দলের পক্ষে ভোট চাওয়া অন্যায় এবং সংবিধান পরিপন্থী। গণতন্ত্রের স্বার্থে ভারত সঠিক কাজটিই করেছে।

ফেরদৌস সীমা লঙ্ঘন করেছেন। তিনি শুধু নিজেরই নয় দেশের ভাবমূর্তিও নষ্ট করেছেন। আজ যদি ঢাকার রাস্তায় অন্য কোনো দেশের শিল্পী এমন কাজ করতেন তাহলে আমাদের প্রতিক্রিয়া কী হতো?

তিনি নাকি আবেগের বশবর্তী হয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছিলেন। তাহলে সেই সহকর্মীরা কেন তাকে কালো তালিকাভুক্ত হওয়া থেকে বাঁচাতে পারলেন না।

বরং উল্টো জামাতের তকমা লাগিয়েছেন গায়ে।

লোকসভার প্রচারণায় অংশ নিয়ে ভক্তদের কাছে নায়ক থেকে সোজা খলনায়ক হয়েছেন, ভক্তদের কাছে, দেশের কাছে, দেশের মানুষের কাছে। দেশ বিদেশে হয়েছেন প্রশ্নবিদ্ধ, ভারতে কালো তালিকাভূক্ত। হয়েছেন সর্বত্র ধিক্কৃত।

 

মোহাম্মদ আল-মাসুম মোল্লা: সাংবাদিক

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

8h ago