শ্রীলঙ্কার হামলাকারীদের আন্তর্জাতিক সংযোগ ছিল
শ্রীলঙ্কায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্তকারীরা বলেছেন, ইস্টার সানডেতে চার্চ ও হোটেলে বোমা হামলায় সরাসরি মোট সাত জন জড়িত ছিলেন। আর দেশটির সরকারের একজন মুখপাত্র বলেছে, এই হামলাকারীদের আন্তর্জাতিক সংযোগ ছিল।
সরকারের ফরেনসিক বিভাগের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, কলম্বোর সমুদ্র তীরের বিলাসবহুল হোটেল শাংগ্রি-লায় সকালের নাস্তার সময় দুজন হামলাকারী বিস্ফোরক দিয়ে নিজেদের উড়িয়ে দেন। অন্যরা তিনটি চার্চ ও দুটি হোটেলে বিস্ফোরণ ঘটায়। কলম্বোর শহরতলীতে চতুর্থ একটি হোটেলে ও বাড়ি লক্ষ্যবস্তু করা হলেও সে সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে বিস্তারিত জানা সম্ভব হয়নি।
পবিত্র ইস্টার সানডেতে প্রার্থনারত মানুষকে লক্ষ্য করে এই হামলায় সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ২৯০ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন আরও চার শতাধিক মানুষ। তবে এখন পর্যন্ত কেউ হামলার দায় স্বীকার করেনি।
বিস্ফোরণের অব্যবহিত পরের অবস্থার বর্ণনা দিয়ে কিংসবারি হোটেলের একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, নাস্তার জন্য আসা অতিথিরা সবাই মেঝেতে রক্তাক্ত পড়ে ছিলেন। মৃত আহত সবাইকেই আমরা তুলে অব্যবহিত হোটেলের বাইরে নিয়ে যাই।
শ্রীলঙ্কার মন্ত্রিপরিষদের মুখপাত্র রাজিথা সেনারত্ন বলেছেন, হামলায় আন্তর্জাতিক একটি চক্র জড়িত। তবে তারা কারা বা কী তাদের লক্ষ্য ছিল সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু তিনি বলেননি।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি না যে শুধুমাত্র দেশের সীমানার ভেতরে তৎপর কোনো গোষ্ঠী এই হামলা চালাতে পারে। আন্তর্জাতিক সংযোগ ছাড়া এমন হামলা সম্ভব ছিল না।
প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা এক বিবৃতিতে বলেছেন, হামলাকারীদের আন্তর্জাতিক সংযোগ খুঁজে বের করতে তার দেশ আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চাইবে।
প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে রোববারই জানান, চার্চে হামলা হতে পারে এমন আভাস সরকার গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাছ থেকে আগেভাগেই পেয়েছিল। হামলার পেছনে অল্প পরিচিত একটি ইসলামপন্থী গোষ্ঠীকে তারা সন্দেহের তালিকায় রেখেছিল।
শ্রীলঙ্কার স্থানীয় গোয়েন্দা সংস্থার এরকম একটি প্রতিবেদন রয়টার্স দেখেছে। ১১ এপ্রিল তারিখের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, বিদেশি একটি গোয়েন্দা সংস্থা সম্ভাব্য হামলার ব্যাপারে শ্রীলঙ্কা সরকারকে সতর্ক করেছে। তবে ওই বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার নাম সেখানে উল্লেখ ছিল না।
রোববার সকাল পৌনে ৯টার দিকে প্রায় একই সময়ে চারটি জায়গায় বোমা বিস্ফোরণ হয়। এর ২০ মিনিটের মধ্যে অন্য দুই জায়গায় হামলা হয়। আর চতুর্থ হোটেল ও বাড়িতে বিস্ফোরণ হয় বিকেলের দিকে।
হতাহতদের মধ্যে বেশিরভাগই শ্রীলঙ্কান হলেও সরকারি কর্মকর্তা বলেছেন, ৩২ জন বিদেশি নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ব্রিটিশ, আমেরিকান, তুর্কী, ভারতীয়, চীনা, ডেনিশ ও ডাচ নাগরিকরা রয়েছেন।
Comments