ভাবনায় বদল এনেই অমন বিস্ফোরণ সৌম্যের

উইকেট ছিল ব্যাটিং বান্ধব। তবু তিনশোর বেশি রান তাড়া করতে যাওয়া বরাবরই চ্যালেঞ্জের। শুরুতে সৌম্য সরকার একটু স্নয়ুচাপে ভুগলেও সময়ের সঙ্গে উবে গেছে সব। ছক্কার বৃষ্টিতে মাত করে লণ্ডভণ্ড করেছেন বিকেএসপির মাঠ। রেকর্ড বই উলট পালট করে গড়েছেন নতুন ইতিহাস। তবে অমন খেলার পরও তার মনে হচ্ছে, ব্যাটিংয়ের ধরণে বাড়তি কিছু না, কেবল নিজের খেলাটাই খেলেছেন তিনি। তবে কিছুটা বদল এনেছিলেন ভাবনার জগতে।
Soumya Sarkar
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

উইকেট ছিল  ব্যাটিং বান্ধব। তবু তিনশোর বেশি রান তাড়া করতে যাওয়া বরাবরই চ্যালেঞ্জের। শুরুতে সৌম্য সরকার একটু স্নয়ুচাপে ভুগলেও সময়ের সঙ্গে উবে গেছে সব। ছক্কার বৃষ্টিতে মাত করে লণ্ডভণ্ড করেছেন বিকেএসপির মাঠ। রেকর্ড বই উলট পালট করে গড়েছেন নতুন ইতিহাস। তবে অমন খেলার পরও তার মনে হচ্ছে, ব্যাটিংয়ের ধরণে বাড়তি কিছু না, কেবল নিজের খেলাটাই খেলেছেন তিনি। তবে কিছুটা বদল এনেছিলেন ভাবনার জগতে।

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে ৩১৭ রান তাড়ায় সৌম্য একাই করেন ১৫৩ বলে ২০৮ রান। মেরেছেন ১৪ চার আর ১৬ ছক্কা। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে লিস্ট-এ ক্রিকেটে করেছেন ডাবল সেঞ্চুরি। এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কার নিজের আগের রেকর্ড উড়িয়ে গড়েন নতুন কীর্তি।

তার ব্যাটের দাপটে প্রায় খড়কুটোর মতো উড়ে গেছে শেখ জামাল ধানমন্ডি। অথচ এমন দিনে ব্যাট করতে নামার সময় স্নায়ুচাপ বেড়েছিল সৌম্যের। ইতিহাস গড়ার দিনে সাংবাদিকদের জানালেন নিজের প্রতিক্রিয়া, ‘প্রথমে একটু নার্ভাস ছিলাম যে লক্ষ্য ৩০০ ।  ৩০০ রানের বেশি তাড়া করা সব সময়ই কঠিন। ব্যাটিংয়ে যাওয়ার আগে ভাবছিলাম আগের ম্যাচে আমরা ৩০০ করছিলাম, রূপগঞ্জ একটু তাড়াহুড়ো করেছিল। পাওয়ার প্লেতে উইকেট যাওয়াতে সেভাবে তাড়া করতে পারেনি। উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য খুব ভালো।’

কিন্তু সেই চাপ মিলিয়ে গেছে ঠিকঠাক পরিকল্পনায়, ‘আমরা পরিকল্পনা করছিলাম খুব স্বাভাবিক ক্রিকেট খেলব। প্রথম ১০ ওভারে যদি ৪০ রানও হয় কোনো সমস্যা না। এই উইকেটে যখন–তখন মারা যায়। সব ব্যাটসম্যানের এই সামর্থ্য আছে। আর উইকেটটা খুব ভালো ছিল। বল ব্যাটে আসছি। চেষ্টা করেছি বড় জুটি করতে যেন ২০ ওভারের মধ্যে এমন কিছু করি যাতে পরের ৩০ ওভার সহজ হয়।’

এবার লিগে প্রথম ১১ ম্যাচে সৌম্য করতে পেরেছিলেন মাত্র ১৯৭ রান। কিন্তু শেষ দুই ম্যাচেই করলেন ৩১৪ (১০৬ ও ২০৮) রান। এই দুই সেঞ্চুরির আগের চার ইনিংসে তার স্কোর ছিল ১,২,১৭ আর ০ রান। শেষ দুই ম্যাচের তাণ্ডব ওসব ব্যর্থতাকে ফেলে দিচ্ছে বহুদূরে।

কীভাবে হুট করে ভোজবাজির মতো পালটে ফেললেন নিজেকে? সৌম্য জানালেন ব্যাটিংয়ের ধরণে কোন পার্থক্য নেই, কেবল ভাবনা চিন্তার আদলটা একটু বদলেছিলেন, ‘ ব্যাটিংয়ে পার্থক্য নেই।  আমার ব্যাটিং আমার কাছেই আছে। আগের ম্যাচগুলোয় রান করিনি। এখন করছি। আক্ষেপ হচ্ছিল, শুরুতে ৩০–৪০ করে আউট হচ্ছিলাম। মাঝে কিছু ম্যাচ ১,২ ,০ রানে আউট হয়েছি। পরে মনে হলো ১,২, ০ শূন্য রানের চেয়ে ৩০–৪০ ভালো, ওটাতে আগে ফিরতে হবে। যখন ৩০–৪০ রান করেছি, তখন মনে হয়েছে আজ এই রানে ফেরা যাবে না। আজ ৫০ করতেই হবে। মাঠেই পরিকল্পনা করেছি। আগ থেকেই পরিকল্পনা করে গেলে হচ্ছিল না। চিন্তা করছিলাম উইকেট ভালো ছিল। সুযোগ ছিল রানটা বড় করা।’

ছক্কার রেকর্ড পেরিয়ে যখন তাকে হাতছানি দিচ্ছিল ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ড। তখন কিছুটা হানা দিচ্ছিল নার্ভাসনেস,  ‘উমমম...১৯০ পর্যন্ত ছিল না। তারপরে একটু ছিল। তখন মনে হচ্ছিল না সুযোগটা ছাড়া যাবে না। যেকোনো উপায়ে করতেই হবে। একটু নার্ভাসনেস কাজ করছিল, কোনো কারণে যদি বাই রান হয়ে যায় অমি (জহুরুল ইসলাম) ভাইয়ের (সেঞ্চুরি) হবে না, আমারও (ডাবল সেঞ্চুরি) হবে না। তখন দুজনই এক–এক করে খেলছিলাম। একই সঙ্গে যাচ্ছিলাম।’

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

10h ago