‘সৌম্য-লিটনের দেখিয়ে দেওয়ার এখনই সময় তারা কতটা ভালো’

সৌম্য সরকার আর লিটন দাস যেদিন খেলেন সবাইকে মুগ্ধ হয়ে দেখতে হয়, আবার প্রায়ই রান খরায় তাদের তেতো কথাও শুনতে হয়। সামর্থ্যের বিচ্ছুরণ নিয়মিত দেখাতে পারেন না বলে বদনাম তাদের। তবে তামিম ইকবাল মনে করছেন গোটা বিশ্বকে নিজেদের সামর্থ্য প্রমাণের এখনি সময় তাদের।
Tamim-Soumya
ফাইল ছবি: ফিরোজ আহমেদ

সৌম্য সরকার আর লিটন দাস যেদিন খেলেন সবাইকে মুগ্ধ হয়ে দেখতে হয়, আবার প্রায়ই রান খরায় তাদের তেতো কথাও শুনতে হয়।  সামর্থ্যের বিচ্ছুরণ নিয়মিত দেখাতে পারেন না বলে বদনাম তাদের। তবে তামিম ইকবাল মনে করছেন গোটা বিশ্বকে নিজেদের সামর্থ্য প্রমাণের এখনি সময় তাদের।

নিউজিল্যান্ড থেকে ফিরে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেও রান পেতে ভুগছিলেন সৌম্য। কিন্তু শেষ দুই ইনিংসে যা করেছেন তাতেই উবে গেছে আগের সব হিসেব। ৭৯ বলে ১০৬ করার পরের ম্যাচে তোলপাড় করেছেন রেকর্ড বই। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে লিস্ট-এ ক্রিকেটে ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন, এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড নতুন করে ভেঙেছেন। সর্বোচ্চ রানের জুটিতে হয়েছেন অংশীদার।

আয়ারল্যান্ড সফর আর বিশ্বকাপে তামিমের ওপেনিং সঙ্গী হিসেবে লড়াইয়ে লিটনের সঙ্গে আছেন সৌম্য। অমন বিস্ফোরক ব্যাটিং করে বিবেচনায় হয়ত কিছুটা এগিয়েও তিনি। সম্ভাব্য ওপেনিং সঙ্গীর এমন ইনিংসকে প্রশংসায় ভাসালেন তামিম,   ‘এটা অসাধারণ অর্জন, বাংলাদেশের প্রথম কেউ দুইশ করেছে। যদিও আমরা সামনে খেলব ভিন্ন কন্ডিশন, ভিন্ন বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে। তবু রান করাটা সবসময়ই ইতিবাচক। এটা আত্মবিশ্বাস জোগায়। কোথায় রান করেছে সে, এটির চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো রান করেছে। সবশেষ দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি না করে যদি ৫ ও ১০ করতো, তাহলে এক শতাংশ বেশি হলেও চাপে থাকত।’

‘এখন সে (সৌম্য) রান করেছে। কেউ যখন রান করে, সে জানে কিভাবে রান করতে হয়। কারও ফর্ম খারাপ থাকলে ভুলে যায় যে কিভাবে রান করতে হয়। এটা খুবই ইতিবাচক দিক যে আয়ারল্যান্ডে যাওয়ার আগে সে দুটি বড় ইনিংস খেলেছে।’

এবার লিগে সেঞ্চুরি না পেলেও রানের মধ্যে ছিলেন লিটনও। খেলেছেন বরাবরের মতই আগ্রাসী মেজাজে। এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে ওরকম সেঞ্চুরি করার পর ওপেনিংয়ে জায়গাটা মোটামুটি পাকা হয়েছিল লিটনের। জিম্বাবুয়ে আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও কিছুটা রান পেয়েছেন। কিন্তু নিউজিল্যান্ড সফর ভয়াবহ কেটেছে তার। তিন ইনিংসেই ১ রান করে আউট হয়েছেন।

আয়ারল্যান্ড সিরিজে তাই ফের ওপেনিং সঙ্গী বদলাতে হতে পারে তামিমকে। গত কয়েক বছর থেকেই বারবার ওপেনিং সঙ্গীর বদল হয়েছে তামিমের। এবার তাই একজন থিতু সঙ্গীর আশায় তিনি। আর সেজন্য লিটন-সৌম্যের সামর্থ্যের উপরই আস্থা রেখে প্রত্যাশা তার,  ‘নিয়মিত এক সঙ্গী থাকলে যেটি হয়, দুজনই পরস্পরের খেলাটাকে বুঝতে পারি। অনেক সময় হয়তো আমার টাইমিং ভালো হচ্ছে না, শট খেলছি কিন্তু ফিল্ডারের কাছে চলে যাচ্ছে, তখন সে বুঝতে পারে যে তার বাড়তি চান্স নিতে হবে। একইভাবে ওর সঙ্গে এরকম হলে আমার চান্স নিতে হবে। কিন্তু কেউ দলে থিতু না হলে তাকে ঝুঁকি নিতে বলা অন্যায়। কারণ একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয় তাকে।’

‘আমি নিশ্চিত, লিটন ও সৌম্যর সামর্থ্য আছে। যথেষ্ট সুযোগ পাচ্ছে। আমি নিশ্চিত, এখনই ওদের সময়, গোটা বিশ্বকে দেখিয়ে দেওয়ার যে তারা কতটা ভালো।’

বিশ্বের বিখ্যাত ওপেনিং জুটি দাঁড়িয়েছেন পোক্ত রসায়নের কারণে। সেই রসায়ন আবার তৈরি হয় লম্বা সময়ে একসঙ্গে খেললে। নিজেদের খেলা আরেকটু উপরের  পর্যায়ে তুলতে এমন রসায়নের খোঁজ তামিমের। সেখানেও সৌম্য আর লিটনের উপর ভরসা সব সংস্করণে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের,  ‘যে কোনো পেশায় যদি লম্বা সময় কারও সঙ্গে কাজ করেন, তাহলে সে আপনার পছন্দ-অপছন্দের ব্যাপারগুলো জানবে। বিশ্বের সেরা ওপেনিং জুটিগুলো, হেইডেন-গিলক্রিস্ট, সৌরভ-শচিন, শেবাগ-শচিন, সবারই দেখবেন বোঝাপড়া ভালো ছিল। ওদের খেলা দেখলে মনে হতো যে তারা দারুণ উপভোগ করছে এবং বুঝতে পারছে, সঙ্গী কোনটি চায়।’

‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এ রকম সুযোগ আমাদের এখনও হয়নি। তবে আমি নিশ্চিত, সৌম্য-লিটন বিশ্বকাপে যাচ্ছে, দুজনই বাংলাদেশের হয়ে আরও ১০-১৫ বছর খেলার সামর্থ্য রাখে। এজন্যই আমি মনে করি, ওদের ভালো পারফরম্যান্স দেখানোর সেরা সময় এটিই।’

Comments

The Daily Star  | English

S Alam sons: They used fake pay orders even to legalise black money

Ashraful Alam and Asadul Alam Mahir, two sons of controversial businessman Mohammed Saiful Alam, deprived the state of Tk 75 crore in taxes by legalising Tk 500 crore in undisclosed income, documents obtained by The Daily Star have revealed.

51m ago