বাল্যবিবাহ রুখতে প্রধান শিক্ষকের কাছে ছাত্রীর আবেদন

Early Marriage logo
প্রতীকী ছবি: স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় বাল্যবিবাহ রুখতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাহায্য চেয়ে আবেদন করেছে দশম শ্রেণির এক ছাত্রী শ্রাবণীর কর (১৬)।

তার বাবা শমশেরনগর চা বাগানের দরিদ্র শ্রমিক রাম গড়। অপ্রাপ্ত বয়সে মেয়ের বিয়ে দিতে পাত্রপক্ষকে নিয়ে শ্রবণীর বাবা আজ (২৮ এপ্রিল) আলোচনায় বসবেন বলে জানা যায়।

শ্রাবণী মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের শমশেরনেগর হাজী মো. উস্তওয়ার বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। সে আরও লেখাপড়া করে প্রাপ্তবয়সে বিয়ে করতে চায়। বিষয়টি বাবাকে বোঝালেও কোনো কাজ হচ্ছে না। অবশেষে নিজের বিয়ে রোধে সাহায্য চেয়ে গতকাল (২৭ এপ্রিল) বিকালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে সে লিখিত আবেদন করে।

চা বাগানগুলিতে বাল্য বিবাহ একটি সাধারণ বিষয় বলেই দশম শ্রেণির এ ছাত্রীর বাবাও মেয়ের বিয়ের জন্য আলোচনা করতে পাত্রপক্ষকে তার বাসায় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বিষয়টি টের পেয়ে ছাত্রী গতকাল বিদ্যালয়ে এসে প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত আবেদন করে বাল্যবিবাহের হাত থেকে রক্ষা করার অনুরোধ জানায়।

ছাত্রীর আবেদন পেয়ে হাজী মো. উস্তওয়ার বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নূরে আলম সিদ্দিক গতকাল দ্রুত পরিচালনা কমিটির সভাপতিসহ সদস্যদের ডেকে এনে আলোচনাক্রমে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, তিনি সরকারি কাজে ঢাকায় অবস্থান করছেন। তিনি বিষয়টি জানার পর বর্তমানে কমলগঞ্জে নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বরত সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমী আক্তারকে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা দেন।

প্রধান শিক্ষক মো. নূরে আলম সিদ্দিক এ প্রতিনিধিকে জানান, ছাত্রীর আবেদন পেয়ে পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্তক্রমে তিনি কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। পরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমী আক্তারের ফোন পেয়ে তিনি নিজে উপজেলা প্রশাসন কার্যালয়ে গিয়ে ছাত্রী আবেদনটি দিয়ে আসেন।

ছাত্রীর বাবা রাম কর বলেন, “সুযোগমতো একটি ভালো বর পেয়েছি। তাই বিয়ে দিতে চাচ্ছি।” এটি একটি বাল্যবিবাহ হবে আর বাল্যবিবাহ আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ- এ কথা জানালে তিনি বলেন, “বিয়ে ঠিক করে রেখে দিবো। পরে মেয়ের বিয়ে দিবো।”

কমলগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমী আক্তার বাল্যবিবাহের চেষ্টার অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “২৮ এপ্রিল ছাত্রীর বাড়িতে বরপক্ষ আসলে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।”

Comments

The Daily Star  | English

Nusraat Faria's arrest sends the wrong signal

The incident has been especially jarring even in this current environment where arbitrary murder cases have been filed against hundreds of individuals

45m ago