‘কত রান করলেন তারচেয়ে জরুরী কত বলে করলেন’
১২০ বলে সেঞ্চুরি করলেন কিংবা ৭০ বলে করলেন ৫০। নিয়মিতই রান পেলেন কিন্তু দল হারল, লাভ হলো না কিছুই। বিশ্বকাপে পাটা উইকেটে তাই আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের বিকল্প দেখছেন না মুশফিকুর রহিম। সেখানে কত রান করলেন তারচেয়ে বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিতে পারে কত বলে করলেন।
২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ৩০৫ রান করেছিল বাংলাদেশ। ওই রান মাত্র দুই উইকেট খুইয়ে ১৬ বল হাতে রেখেই পেরিয়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ড। ইংল্যান্ডের ব্যাটিং বান্ধব উইকেট মানে কেবল তিনশো রান নিরাপদই নয়, অনেক সময় আপনাকে ম্যাচ জিততে হলে করতে হবে সাড়ে তিনশো। কিংবা প্রায়ই তাড়া করতে হবে ৩৩০ রানও।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ওই প্রসঙ্গ টেনে এবারের বিশ্বকাপে স্ট্রাইক রেটটা নিয়ে তাই ভাবছেন মুশফিক, ‘স্ট্রাইক রেটটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি কত রান করলেন, কত গড়ে রান করলেন, তারচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে স্ট্রাইক রেট। আপনি যদি দেখেন, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আমরা ৩২০ (আসলে ৩০৫) এর মতন করেও ইংল্যান্ডের কাছে হেরে গেছি। এটাই প্রমাণ করে যে ওই উইকেটে আমাদের ৩৫০-৩৬০ রান করা উচিত ছিল।’
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সে ম্যাচে ১৪২ বলে ১২৮ রান করেছিলেন তামিম ইকবাল। মুশফিক নিজে ৭২ বলে করেছিলেন ৭৯ রান। এবারও বাংলাদেশের টপ অর্ডারে বড় ভরসা তারা দুজন। তবে আগেরবারের চেয়ে আরও দ্রুত ওই রান তোলার তাগিদ দেখছেন মুশফিক, ‘আমরা টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা সেটাই চিন্তা করছি। আমরা যদি ১০০ করি, সেটাকে কিভাবে ১৩০-১৫০ এ নিয়ে যাওয়া যায় এবং কত দ্রুত সময়ে নিয়ে যাওয়া যায়। শুধু বাউন্ডারি না, মাঠ গুলো হয়তো বড় হবে, তাই আপনার রানিং বিটউইন দ্য উইকেটও গুরুত্বপূর্ণ।’
কন্ডিশন, উইকেটের হাবভাব ভালোমতই টের পেয়েছে বাংলাদেশ। মুশফিক জানালেন সব বুঝে নিয়েই প্রস্তুত হচ্ছেন তারা, ‘চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে যদি খেয়াল করেন, উইকেট ফ্লাট থাকে। টিপিক্যাল ইংল্যান্ড কন্ডিশনের মত উইকেট থাকে না। আর তিনশোর বেশি তো যেকোনো গ্রাউন্ডেই হয়ে থাকে। আমরাও ওইভাবে অনুশীলন করছি, নিশ্চিত করছি যাতে স্ট্রাইক রেটটা বেশি থাকে। ফলে ৩৩০-৩৫০ ক্রস করলেও যেন আমরা তাড়া করতে পারি। আবার ওই পরিমাণ রান করতে পারি, যেন আমাদের বোলাররা সেটা ডিফেন্ড করতে পারে।’
বলে বলে ছক্কা মারার মতো ব্যাটসম্যান নেই বাংলাদেশের ডেরায়। তবে যা আছে, যারা আছেন তা নিয়েই পুষিয়ে দেওয়ার উপায় ঠিক করেছেন মুশফিকরা, ‘রাতারাতি আমরা ক্রিস গেইল, পোলার্ড বা রাসেলকে বের করতে পারবো না রশিদ খানকেও না। আমাদের যেটা আছে, তা নিয়েই আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তাদের মাটিতে হারিয়েছি। অথচ পাওয়ার হিটিংয়ে তাদের মতো প্লেয়ার আমাদের নেই। আমাদের কিছু জায়গা আছে, যেখানে আমরা ভালো। মাথা খাটিয়ে খেলতে পারলে আমাদের দল অনেক ভালো। আমরা হয়তো ছয় খুব বেশি নয়, কিন্তু চার মারতে পারি। আমার মনে হয় যে, ওইভাবে ১০ বা ১৫টা রান যদি আমরা ব্যাটিংয়ে বেশি করতে পারি বা ফিল্ডিংয়ে ঠেকাতে পারি, তাহলে তা ২০-৩০ রানের তফাৎ তৈরি করতে পারে।
Comments