যে ভাবনায় কোচিংয়ের পাঠ নিচ্ছেন আশরাফুল, নাফীসরা
জাতীয় দলের বাইরে ছিটকে গেছেন অনেক আগে। তবে এখনো ক্রিকেট ছাড়েননি। মোহাম্মদ আশরাফুল, শাহরিয়ার নাফীস, আব্দুর রাজ্জাকরা পুরোদমে খেলে যাচ্ছেন ঘরোয়া ক্রিকেট। কিন্তু খেলতে খেলতেই নিচ্ছেন ‘লেভেল-ওয়ান’ কোচিংয়ের পাঠ। জাতীয় দলে কোন না কোন সময়ে খেলেছেন এমন ১৬জন সহ মোট ২৭ জনকে নিয়ে পাঁচ দিনের কোচিং কর্মশালার আয়োজন করেছে বিসিবি।
বিসিবির গেম ডেভোলাপমেন্টের অধীনে হওয়া এই কর্মশালায় কি চিন্তা থেকে অংশ নিচ্ছেন আশরাফুল, নাফীসরা। বৃহস্পতিবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একাডেমিতে তা শেয়ার করলেন গণমাধ্যমের সঙ্গে।
টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে কম বয়েসে সেঞ্চুরির রেকর্ডধারী সাবেক অধিনায়ক আশরাফুলের মতে, তারা কেউ যদি ভাবেন ক্যারিয়ারের ইতি দেখে ফেলছেন বলেই শিখছেন কোচিং তাহলে ভুল হবে, ‘এখানে ১২-১৩ জনের মতো ক্রিকেটার বাংলাদেশ দলে খেলেছে এবং এখনো ঘরোয়া ক্রিকেট খেলছে। প্রত্যেক ক্রিকেটারকে তাদের পারফর্মেন্সে উন্নতি করার জন্য এই ধরণের কোর্স করা উচিৎ। আমাদের চিন্তা ভাবনা আসলে নেতিবাচক। ভাবা হয় এখানে আসলে বোধহয় খেলা ছেড়ে কোচিং পেশায় যোগ দিচ্ছে। আপনি যদি ইংল্যান্ডে ক্রিকেট খেলতে যান, ক্লাব কিংবা কাউন্টি খেলতে যান তাহলে আপনাকে লেভেল টু করতেই হবে। এই কোর্স জানলে আপনি উন্নতি করতে পারবেন।’
এখন যেহেতু কোন খেলা নেই। বসে না থেকে তাই সময়টা কাজে লাগাতে চাইছেন তারা। সবে এখনি খেলা না ছাড়লেও একসময় খেলা ছেড়ে দেওয়ার পর যে কোচিং তাদের পেশা হতে পারে সেই চিন্তাতেই মূলত এই কর্মশালা। শাহরিয়ার নাফীস দিলেন তেমনই ইঙ্গিত, ‘আমাদের দেশের চিন্তা ভাবনা ভিন্ন। ভাবা হয় হয়ত কোচিংয়ের জন্যই এই প্রশিক্ষণ। আমরা ব্যাপারটা এভাবে দেখছি না। এই মুহূর্তে আমাদের কোন খেলা নেই। অফ সিজন যাচ্ছে যেহেতু বিসিবি লেভেল ওয়ান কোচের প্রশিক্ষণটা দিচ্ছে সেহেতু কিছু জ্ঞান নেয়ার জন্যই এই প্রশিক্ষণে অংশ নেয়া। ভবিষ্যতে যদি ক্রিকেটের কোচিং পেশায় থাকতে চাই তাহলে এই কোচিংটা লাগবে। যেহেতু সুযোগ পেয়েছি আগে ভাগেই করে রাখছি। একটা রাস্তা খুলে গেল আর কি।’
কদিন আগেই বলে কয়ে সব ধরণের ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়েছেন দেশের ক্রিকেটে বিস্তৃত হয়ে পড়া পেসার নাজমুল হোসেন। এরমধ্যেই তিনি নাম লিখিয়েছেন পেশাদার কোচিংয়ে। এদিক থেকে আশরাফুল-নাফীসদের থেকে তার কর্মশালায় অংশ নেওয়ার চিন্তা আরেকটু ভিন্ন, ‘আসলে খারাপ লাগতেছে খেলা ছেড়েছি, তবে এই কোচিংটা বিশেষ করে আমার জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অনেক কিছু শেখার আছে। মাঠে ক্রিকেট খেলেছি, কিন্তু এই লেভেল ওয়ানের কোচিং অনেক কাজে দেবে । বিশেষ করে আমার কোচিং ক্যারিয়ারে অনেক কাজে দিবে।’
কি শিখছেন এখানে তারও ধারনা দিলেন নাজমুল, ‘খুবই বেসিক একটা প্রোগ্রাম। ছোট বেলায় যা শিখেছি সেগুলোই মনে করিয়ে দেয়া হচ্ছে। কিছু ছোট ছোট জিনিস আছে যেগুলো আমরা প্র্যাক্টিক্যালি জানি কিন্তু এর ভেতরের জিনিসগুলো আরও ভালোভাবে জানা যাবে এই কোচিংয়ের মাধ্যমে।’
নাজমুলের মতই এখন আর মাঠে দেখা যায় না বাঁহাতি পেসার সৈয়দ রাসেলকে। তবে রাসেল দিলেন ভিন্ন এক তথ্য, ‘একটা তথ্য দেই, এখন যদি কোন ক্রিকেটার ইংল্যান্ডে খেলতে যায় তাহলে তাদের কোচিং লেভেল লাগে। তা না হলে সে কাউন্টিতে খেলতে পারবে না। আমার মনে হয় এখানে এই ধরণের ক্রিকেটাররা আসছে বাইরে (দেশের বাইরে) যাওয়ার মানসিকতা নিয়ে। সবার যে এখানে ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে এটা ঠিক না। ’
‘তরুণ ক্রিকেটাররা যদি করে আগে থেকেই কোচিং করে তাহলে অনেক কিছু শিখতে পারবে। আমাদের ঐ ধারণা থেকে বের হয়ে আস তে হবে কোচিং করলেই ক্রিকেট ক্যারিয়ার শেষ।’
তবে অনেকে যে পেশা হিসেবে নিতেই যে এই কর্মশালা করছেন তাও জানালেন রাসেল, ‘যারা এটাকে পেশা হিসেবে নিতে চায় তারা যদি বাংলাদেশ ক্রিকেটে ভূমিকা রাখে তাহলে এটা আমাদের দেশের ক্রিকেটে উন্নতি আনবে। কারণ এখানে যারা আছে তারা অনেকেই অভিজ্ঞ।’
Comments