৫২টি নিম্নমানের পণ্য: বিএসটিআই ও বিএফএসএ’র কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন হাইকোর্ট

পরীক্ষায় নিম্নমানের প্রমাণিত হওয়ায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৫২টি পণ্যের বিষয়ে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্স অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) ও বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (বিএফএসএ) কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন হাইকোর্ট।
restaurant fine
৩ জুন ২০১৮, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ড থেকে দুই বছর আগে আমদানিকৃত মেয়াদোত্তীর্ণ নুডলস পরীক্ষা করছেন র‌্যাবের ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম। ছবি: সংগৃহীত

পরীক্ষায় নিম্নমানের প্রমাণিত হওয়ায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৫২টি পণ্যের বিষয়ে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্স অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) ও বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (বিএফএসএ) কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন হাইকোর্ট।

আজ (৯ মে) আদালতের এক আদেশে, বিএসটিআই ও বিএফএসএ’র ঊর্ধ্বতন দুইজন কর্মকর্তাকে (উপ-পরিচালকের নীচে নন) আগামী রোববারের মধ্যে আদালতে হাজির হয়ে নিম্নমানের এসব পণ্যের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

এছাড়াও, বিএসটিআই ও বিএফএসএ’র দুইজন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে ওইদিন তাদের আদালতে হাজির থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেসুর রহমানকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

৫২টি নিম্নমানের পণ্য জব্দ করে বাজার থেকে প্রত্যাহার এবং এসব পণ্য উৎপাদন বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে দায়ের করা রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ এবং বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আগামী সোমবার বিএসটিআই ও বিএফএসএ’র কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ব্যাখ্যা শোনার পর এই রিটের বিষয়ে পরবর্তী আদেশ দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন আদালত।

আজ রিটকারীর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিহাব উদ্দিন খান আদালতে তার যুক্তি তুলে ধরেন।

এর আগে, কনসাস কনজ্যুমার সোসাইটি (সিসিএস) নামের একটি ভোক্তা অধিকার সংস্থা আজ সকালে হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করে।

৬ মে বিএসটিআই কর্তৃক বাজারে এসব পণ্যে ভেজাল ধরা পড়ার পরও জব্দ না করা, সেগুলো বাজার থেকে প্রত্যাহারের ব্যবস্থা না নেওয়া ও প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ না নেওয়ায় আইনি নোটিশ পাঠায় কনসাস কনজ্যুমার্স সোসাইটি। কিন্তু কোনো জবাব না পাওয়ায় আজ এ রিট দায়ের করা হয়।

রিটে ওই সব প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট পণ্য কেন জব্দ করা হবে না বা বাজার থেকে কেন প্রত্যাহার করা হবে না এবং তাদের বিরুদ্ধে কেনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আরজি পেশ করা হয়েছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিএসটিআইর মহাপরিচালক (ডিজি), বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।

৩ ও ৪ মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে উল্লেখ করা হয়েছে, বিএসটিআই সম্প্রতি ২৭ ধরনের ৪০৬টি খাদ্য পণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছে। এর মধ্যে ৩১৩টি পণ্যের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে যেখানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৫২টি পণ্য নিম্নমানের ও ভেজাল রয়েছে। এর আগে ২ মে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিএসটিআই।

বিএসটিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে খোলা বাজার থেকে ৪০৬টি পণ্যের নমুনা ক্রয় করে বিএসটিআইয়ের ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ৩১৩টি পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। যার মধ্যে ৫২টি পণ্য পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছে। ভেজাল পণ্যগুলো হলো সিটি অয়েলের সরিষার তেল, গ্রিন বি¬চিংয়ের সরিষার তেল, শমনমের সরিষার তেল, বাংলাদেশ এডিবল অয়েলের সরিষার তেল, কাশেম ফুডের চিপস, আরা ফুডের ড্রিংকিং ওয়াটার, আল সাফির ড্রিংকিং ওয়াটার, মিজান ড্রিংকিং ওয়াটার, মর্ণ ডিউয়ের ড্রিংকিং ওয়াটার, ডানকান ন্যাচারাল মিনারেল ওয়াটার, আরার ডিউ ড্রিংকিং ওয়াটার, দিঘী ড্রিংকিং ওয়াটার, প্রাণের লাচ্ছা সেমাই, ডুডলি নুডলস, শান্ত ফুডের সফট ড্রিংক পাউডার, জাহাঙ্গীর ফুড সফট ড্রিংক পাউডার, ড্যানিশের হলুদগুঁড়া, প্রাণের হলুদগুঁড়া, ফ্রেশের হলুদগুঁড়া, এসিআইর ধনিয়াগুঁড়া, প্রাণের কারি পাউডার, ড্যানিশের কারি পাউডার, বনলতার ঘি, পিওর হাটহাজারী মরিচগুঁড়া, মিষ্টিমেলা লাচ্ছা সেমাই, মধুবনের লাচ্ছা সেমাই, মিঠাইর লাচ্ছা সেমাই, অয়েল ফুডের লাচ্ছা সেমাই, এসিআইর আয়োডিনযুক্ত লবণ, মোল্লা সল্টের আয়োডিনযুক্ত লবণ, কিংয়ের ময়দা, রূপসার দই, মক্কার চানাচুর, মেহেদীর বিস্কুট, বাঘাবাড়ীর স্পেশাল ঘি, নিশিতা ফুডসের সুজি, মঞ্জিলের হলুদগুঁড়া, মধুমতির আয়োডিনযুক্ত লবণ, সান ফুডের হলুদগুঁড়া, গ্রীন লেনের মধু, কিরণের লাচ্ছা সেমাই, ডলফিনের মরিচগুঁড়া, ডলফিনের হলুদগুঁড়া, সূর্যের মরিচগুঁড়া, জেদ্দার লাচ্ছা সেমাই, অমৃতের লাচ্ছা সেমাই, দাদা সুপারের আয়োডিন যুক্ত লবণ, মদীনার আয়োডিনযুক্ত লবণ, নুরের আয়োডিনযুক্ত লবণ।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

6h ago