ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবি: রাজধানীতে ৩ মানবপাচারকারী গ্রেপ্তার
লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে তিউনিসিয়ার উপকূল সংলগ্ন ভূমধ্যসাগরে গত ৯ মে রাতে নৌকাডুবে বাংলাদেশি নিহতের ঘটনায় জড়িত মানবপাচার চক্রের তিন সদস্যকে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব)।
আজ (১৭ মে) দুপুরে কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এক র্যাব কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক ভূঁইয়া (৩৪), আক্কাছ মাতুব্বর (৩৯) এবং এনামুল হক তালুকদার (৪৬)
এ সময় র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার মুখপাত্র কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে এনামুল হক ১০ থেকে ১২ বছর ধরে মানবপাচারে জড়িত রয়েছেন।
এনামুল সিলেটের জিন্দাবাজারের ইয়াহিয়া ওভারসিজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক এবং রাজ্জাক তার মানবপাচারকারী চক্রের অন্যতম সদস্য বলে জানান এই র্যাব কর্মকর্তা।
এছাড়া, আক্কাছ অপর একটি মানবপাচারকারী চক্রের সদস্য বলেও জানান তিনি। এই চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত থাকায় আক্কাছের ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
মুফতি মাহমুদ খান বলেন, “মানবপাচারে জড়িত এই চক্রগুলো অভিবাসনপ্রত্যাশী প্রত্যেক ব্যক্তির কাছ থেকে আট থেকে নয় লাখ টাকা করে নিতো এবং তিনটি পথের মাধ্যমে তাদেরকে ইউরোপে পাঠানোর চেষ্টা করতো।”
এজন্য প্রথমত তাদেরকে সড়কপথে তুরস্কের ইস্তাম্বুল নেওয়া হতো, তারপর সেখান থেকে লিবিয়া এবং পরবর্তীতে তিউনিসিয়া হয়ে ইউরোপে পাঠানো হতো।
দ্বিতীয়ত, অবৈধ অভিবাসীদের প্রথমে ভারত থেকে শ্রীলঙ্কা নেওয়া হতো এবং সেখান থেকে ইস্তাম্বুল ও লিবিয়া হয়ে ইউরোপে পাঠানো হতো।
গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও জানান, এই চক্রের সদস্যরা বাংলাদেশিদের প্রথমে বিমান যোগে দুবাই নিয়ে যেতো এবং সেখান থেকে জর্ডানের রাজধানী আম্মান এবং লিবিয়ার বেনগাজীতে নেওয়ার পর ইউরোপে পাঠাতো।
মুফতি মাহমুদ খান জানান, সর্বশেষ মানবপাচারের কাজটি সম্পন্ন করতে তারা দ্বিতীয় পথটি ব্যবহার করছিলো, যেটি গত ৯ মে রাতে ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির মাধ্যমে শেষ হয়ে যায়।
তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই ধাপে বাংলাদেশ ছাড়ার আগেই অভিবাসনপ্রত্যাশী প্রত্যেক ব্যক্তির কাছ থেকে তারা ৪ থেকে ৫ লাখ করে টাকা নিয়েছিলো এবং চুক্তি অনুযায়ী লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর বাকি টাকা নেয়।
লিবিয়াতে থাকা ও খাবারের জন্য অভিবাসন প্রত্যাশীদের জোরপূর্বক বিভিন্ন ধরনের কাজ করানো হতো বলেও জানান তিনি।
Comments