ছাত্রলীগের সাবেক নেতার হাতের ৪ আঙুল কেটে নিলো বর্তমান নেতারা
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় এক ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতার ডান হাতের চারটি আঙুল কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। স্থানীয় ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ সাগর হোসেন ও সম্পাদক মেহেদি হাসান নাইসের নেতৃত্বে তাদের সহযোগীরা এই বর্বরতা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার দুপুর ১২টার দিকে কলারোয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভিতর এ ঘটনা ঘটে।
আহত জি এম তুষার (২৮) কলারোয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি। কলারোয়া পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তুষার ইলেক্ট্রনিকস নামে তার একটি দোকান রয়েছে।
আহত তুষার জানান, তার বড় কাকা আবু সিদ্দিকী কলারোয়া উপজেলা কাজীরহাট এলাকায় সাত মাস আগে একখণ্ড জমি কিনেছিলেন। জমির সীমানা নির্ধারণ নিয়ে দেগং গ্রামের রেজাউল করিম সঙ্গে তার বিরোধ তৈরি হয়েছিল। এরই জের ধরেই সকাল ১১টার দিকে মন্টু নামের একজন তাকে মুঠোফোনে ডেকে নিয়ে কলারোয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে আসতে বলেন। মোটরসাইকেলে চড়ে সেখানে গেলে উপজেলা ছাত্রলীগে সভাপতি সগর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান নাহিস, শিমুলসহ ১০-১২ জন লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে তাকে জখম করে।
কলারোয়া আওয়ামী লীগ কর্মী ফজলুল হক ও শহীদুল ইসলাম জানান, হামলায় আহত তুষার অন্যদের সহযোগিতায় থানায় গিয়েছিলেন অভিযোগ জানাতে। কিন্তু থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান এই ঘটনাকে ‘অভ্যন্তরীণ বিরোধের জের’ আখ্যা দিয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা না নিয়ে আগে চিকিৎসা ও পরে ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দেন।
তারা আরও বলেন, আহত তুষারকে কলারোয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে ডাক্তাররা তাকে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন। ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ওষুধ কিনতে গেলে সভাপতি সগর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান নাহিস, মন্টু, পলাশ, জুয়েলসহ কয়েকজন নেতা-কর্মীরা তুষারকে সেখানে ফের পেটায়। তুষার এ সময় দৌড়ে পালাতে গেলে রামদা দিয়ে তার ডান হাতের চারটি আঙ্গুল কেটে নেওয়া হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তুষারকে উদ্ধার করে প্রথমে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থার অবনতি হলে পরে তাকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় নেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে কলারোয়া ছাত্রলীগের সভাপতি সগর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান নাহিসের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ইকবাল মাহমুদ জানান, বেলা দেড়টার দিকে তুষারকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়েছিল। তার ডান হাতের চারটি আঙুল বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ছিল। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান আঙুল কাটার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আহত তুষারের চাচা আবু সিদ্দিকী বাদী হয়ে কলারোয়া ছাত্রলীগের সভাপতি সগর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান নাহিস রেজাউল করিম ও মন্টুসহ পাঁচজনের নামে উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেছে। ইতিমধ্যে রেজাউল করিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
Comments