নিহত বাংলাদেশি ১২ শান্তিরক্ষীকে সম্মান জানাল জাতিসংঘ

‘আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবস’ উপলক্ষে গতকাল বাংলাদেশি ১২ শান্তিরক্ষীকে মরণোত্তর ‘দ্যাগ হ্যামারশোল্ড মেডেল’ দিয়েছে জাতিসংঘ।
un
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই মেডেল নেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। ছবি: সংগৃহীত

‘আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবস’ উপলক্ষে গতকাল বাংলাদেশি ১২ শান্তিরক্ষীকে মরণোত্তর ‘দ্যাগ হ্যামারশোল্ড মেডেল’ দিয়েছে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে কর্তব্যরত অবস্থায় বিশ্বের ২৭টি দেশের ১১৯ জন আত্মোৎসর্গকারী কর্মীকে সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য এই পুরস্কার প্রদান করেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

মরণোত্তর ‘দ্যাগ হ্যামারশোল্ড মেডেল’ প্রাপ্ত বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা হলেন- সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিক আরজান হাওলাদার ও সৈনিক মো. রিপুল মিয়া; মালি মিশনের সৈনিক মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন, ওয়ারেন্ট অফিসার মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, সৈনিক মোহাম্মদ রায়হান আলী, ল্যান্স করপোরাল মোহাম্মাদ আক্তার হোসেন ও সৈনিক মোহাম্মদ রাসেদুজ্জামান; কঙ্গো মিশনের সৈনিক মো. জানে আলম এবং সাউথ সুদান মিশনের সৈনিক মো. মতিয়ার রহমান, সৈনিক মো. মঞ্জুর আলী, ল্যান্স করপোরাল মো. মিজানুর রহমান ও লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মো. আশরাফ সিদ্দিকী।

আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের শুরুতেই মহাসচিব গুতেরেস কর্তব্যরত অবস্থায় জীবনদানকারী সামরিক ও বেসামরিক শান্তিরক্ষী কর্মীর বিদেহী আত্মার স্মরণে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের উত্তর লনে অবস্থিত পিসকিপিং মেমোরিয়াল সাইটে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, “আজ আমরা ১১৯ জন অসম সাহসী পুরুষ ও নারীকে সম্মান জানাচ্ছি, যারা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত হয়েছেন। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে যুদ্ধের বিভীষিকা থেকে নিরাপদ রাখার যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে জাতিসংঘ কাজ করে যাচ্ছে তা উজ্জীবিত রাখার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এসব বীর শান্তিরক্ষী অমলিন স্বাক্ষর রেখে গেছেন।”

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই মেডেল নেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের ডিফেন্স অ্যাডভাইজার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খান ফিরোজ আহমেদসহ জাতিসংঘে কর্মরত বাংলাদেশ সেনা, নৌ, বিমান ও পুলিশ বাহিনীর কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

নিহত বাংলাদেশি ১২ শান্তিরক্ষীর প্রাপ্ত মেডেল তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তরের জন্য বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন বিশেষ অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করবে বলে জানানো হয়।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ বর্তমানে দ্বিতীয় বৃহত্তম শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। জাতিসংঘের বিভিন্ন শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের ৬ হাজার ৬শ’ শান্তিরক্ষী কাজ করছেন। এ পর্যন্ত শান্তিরক্ষা মিশনে কর্তব্যরত অবস্থায় বাংলাদেশের ১৪৬ শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন।

Comments