নুসরাতের ভিডিও ওসি মোয়াজ্জেম নিজেই করেছিলেন
ফেনীর সোনাগাজী থানার সাময়িক বরখাস্তকৃত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিও রেকর্ড করেন এবং তা অন্য আরেকজনের মোবাইলে দিয়ে দেন। এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার সংস্থাটির তদন্তে পাওয়া বিভিন্ন তথ্য ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর পর গতকাল (২৬ মে) দ্য ডেইলি স্টারকে এ কথা জানান।
তিনি বলেন, সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে মোয়াজ্জেমের সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া যায়নি। মোয়াজ্জেম যাকে সেই ভিডিওটি পাঠিয়েছিলেন, তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে থাকতে পারেন।
গত ১৫ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন শিক্ষার্থী নুসরাতের অনুমতি ছাড়াই তার বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন।
মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনাল পিবিআইয়ের মহাপরিদর্শককে বিষয়টি তদন্ত করে সে সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন জমা দিতে বলে।
পিবিআই প্রধান বলেন, “এই মামলার অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে অনেকগুলো অভিযোগ রয়েছে। তবে আমরা তিনটি অভিযোগের স্বপক্ষে প্রমাণ পেয়েছি।”
আইনজীবী সুমন তার অভিযোগপত্রে জানান, নুসরাতের সঙ্গে একজন শিক্ষার্থী এবং মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাকে ওসি তার কার্যালয়ে নিয়ে আসেন এবং নুসরাতকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
ওসি মোয়াজ্জেম নুসরাতকে প্রশ্ন করার সময় অনুমতি ছাড়াই তার বক্তব্য ভিডিও রেকর্ড করেন এবং তা আইন বহির্ভূতভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ায় ভূমিকা রাখেন।
ভিডিওতে দেখা যায় ওসি শিক্ষার্থী নুসরাতকে একের পর এক ‘অপমানজনক ও আপত্তিকর প্রশ্ন’ করছেন।
অভিযোগকারী মোয়াজ্জেমকে গ্রেপ্তারের জন্যে আদালতে আবেদন করেন।
গত ১০ এপ্রিল নুসরাতের পরিবার তাদেরকে সহযোগিতা না করার অভিযোগ আনলে ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়।
দায়িত্বে অবহেলার জন্যে গত ৮ মে মোয়াজ্জেমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং তাকে রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি কার্যালয়ে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, পরিকল্পিতভাবে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দিলে ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজে তার মৃত্যু হয়।
Comments