ভারতের কাছে বড় হারে প্রস্তুতিটা ভালো হলো না বাংলাদেশের
লক্ষ্যটা ছিল বিশাল। ৩৬০ রানের। বড় লক্ষ্য তাড়ায় যা প্রয়োজন ছিল উড়ন্ত সূচনা। সেটা সে অর্থে দুই ওপেনার লিটন কুমার দাস ও সৌম্য সরকার না দিতে পারলেও ভালো সূচনা করেছিলেন। এক সময় টাইগারদের সংগ্রহ ছিল ২ উইকেটে ১৬৯ রান। কিন্তু এরপর ভারতীয় স্পিনারদের ঘূর্ণিতে ধসে পড়ে টাইগারদের ইনিংস। ২৬৪ রানে গুটিয়ে যায় দলটি। ভারত পায় ৯৫ রানের বড় জয়।
পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে বৃষ্টির কারণে একটি বলও মাঠে গড়ায়নি। তাই ভারতের বিপক্ষে এ ম্যাচটি ছিল টাইগারদের ঝালিয়ে নেওয়ার শেষ সুযোগ। তবে প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে পারেনি দলটি। ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে এদিন বোলাররাও ছিলেন বিবর্ণ।
যদিও দিনের শুরুতে দারুণ বোলিং করেছিলেন চার পেসার মোস্তাফিজুর রহমান, সাইফউদ্দিন, রুবেল হোসেন ও অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। তাতে ভারতের ১০২ রানে চারটি উইকেট তুলে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন টাইগাররা। কিন্তু সে ধারা ধরে রাখতে পারেননি পরের দিকের বোলাররা। বিশেষ করে স্পিনাররা। ফলে ৩৫৯ রানের বড় সংগ্রহই পায় ভারত।
শেখর ধাওয়ান, রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলির মতো ব্যাটসম্যানদের আটকে দিয়েছিল টাইগাররা। কিন্তু টাইগারদের ভোগান্তি বাড়ান লোকেশ রাহুল ও সাবেক অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। দুইজনই পেয়েছেন সেঞ্চুরি। ৯৯ বলে ১২টি চার ও ৪টি ছক্কায় খেলেছেন ১০৮ রানের ইনিংস। তবে বেশি আগ্রাসী ছিলেন ধোনি। মাত্র ৭৮ বলে ১১৩ করেন এ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। ৮টি চারের সঙ্গে মারেন ৭টি ছক্কা। বাংলাদেশের সাকিব ও রুবেল ২টি করে উইকেট নেন।
জবাবে দলীয় ৪৯ রানে ইনফর্ম ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকারের বিদায়ে ভাঙে ওপেনিং জুটি। তিন নম্বরে নেমে প্রথম বলেই বোল্ড সাকিব। এরপর আরেক ওপেনার লিটন দাসের সঙ্গে দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন মুশফিকুর রহিম। স্কোর বোর্ডে ১২০ রান যোগ করে এ দুই ব্যাটসম্যান। তাতে টাইগারদের স্বপ্নের পরিধিটা বড় হয়। কিন্তু লিটনের আউটেই বদলে যায় সব। এরপর উইকেট হারানোর মিছিলে যোগ দেন ব্যাটসম্যানরা। তিন ব্যাটসম্যান পেয়েছেন গোল্ডেন ডাক। ফলে ২৬৪ রানে শেষ হয় তাদের ইনিংস।
৯৪ বলে ৯০ রানের ইনিংস খেলেছেন মুশফিক। তাতে ৮টি চার ও ২টি ছক্কার মার ছিল। তবে আরও এক বার ইনিংস শেষ করে না আসার ব্যর্থতায় পুড়েছেন তিনি। এছাড়া লিটনের ৭৩ রানের ইনিংসটি ছিল বলার মতো। ৯০ বলে ১০টি চারে এ রান করেন তিনি। টাইগারদের হারের ব্যবধান হতে পারতো আরও বড়। যদি না নবম উইকেটে সাইফউদ্দিন ও মেহেদী হাসান মিরাজ ৪৬ রানের জুটি না গড়তেন।
মূলত বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ভুগিয়েছেন ভারতের স্পিনাররা। কুলদিপ যাদব, জুজবেন্দ্র চাহাল ও রবিন্দ্র জাদেজার বল খেলতে কঠিন পরীক্ষা দিতে হয়েছে তাদের। কুলদিপ ও চাহাল দুইজনই নিয়েছেন ৩টি করে উইকেট। এছাড়া শুরুর দিকে জাসপ্রিত বুমবাহও দারুণ বোলিং করেছেন। তুলে নিয়েছেন ২ই উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ৫০ ওভারে ৩৫৯/৭ ( রোহিত ১৯, ধাওয়ান ১, কোহলি ৪৭, রাহুল ১০৮, শঙ্কর ২, ধোনি ১১৩, পান্ডিয়া ২১, কার্তিক ১১*, কার্তিক ৭*; মুস্তাফিজ ১/৪৩, মাশরাফি ০/২৩, সাইফ ১/২৭, রুবেল ২/৬২, আবু জায়েদ ০/৪১, সাকিব ২/৫৮, মিরাজ ০/৪০, মোসাদ্দেক ০/৩২, সাব্বির ১/৩০)।
বাংলাদেশ: ৪৯.৩ ওভারে ২৬৪ (লিটন ৭৩, সৌম্য ২৫, সাকিব ০, মুশফিক ৯০, মিঠুন ০, মাহমুদউল্লাহ ৯, সাব্বির ৭, মোসাদ্দেক ০, সাইফউদ্দিন ১৮, মিরাজ ২৭, রুবেল ০*; শামি ০/২২, বুমরাহ ২/২৫, ভুবনেশ্বর ০/১৯, কুলদীপ ৩/৪৭, শঙ্কর ০/৪৬, চাহাল ৩/৫৫, জাদেজা ১/৪০)
ফলাফল: ভারত ৯৫ রানে জয়ী।
Comments