অবৈধভাবে বিদেশে না যেতে দেশবাসীর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহবান

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারের দেওয়া বৈধ সুযোগ-সুবিধার বদলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবৈধভাবে বিদেশে না যাওয়ার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
PM at Tokyo
ছবি: বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারের দেওয়া বৈধ সুযোগ-সুবিধার বদলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবৈধভাবে বিদেশে না যাওয়ার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

গতকাল (২৮ মে) টোকিওর সিটি হোটেলে প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে জাপানে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ভাষণদানকালে তিনি বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি অবৈধভাবে বিদেশে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। বহুলোক তাদের গন্তব্য সম্পর্কে না জেনে, চাকরির ধরন না বুঝে ভালো ভবিষ্যতের সন্ধানে বিদেশে পাড়ি জমায়।”

তিনি বলেন, অনেক মানুষ তাদের ঘর-বাড়ি, জমি-জমা বিক্রি করে টাকা দালালের হাতে তুলে দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদেশে যায়। অথচ তারা সঠিকভাবে জানে না কোথায় চাকরি হবে অথবা কতো বেতন এবং কী সুবিধা তারা পাবে।

প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর প্রতি যথাযথভাবে সবকিছু জেনে বৈধভাবে বিদেশে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, প্রথমে ডিজিটাল কেন্দ্রে আপনার নাম (বিদেশে চাকরি প্রত্যাশীদের) নিবন্ধন করুন এবং পরে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে সবকিছু জেনে বিদেশে যান।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার ইতোমধ্যে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছে। বৈধভাবে বিদেশে যাওয়ার জন্য বিদেশে চাকরি প্রার্থীরা সেখান থেকে ঋণ নিতে পারেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একই সঙ্গে সরকার সারাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠাসহ অনেকগুলো চাকরির সুযোগ সৃষ্টিকারী প্রকল্প গ্রহণ করেছে।

তিনি আরও বলেন, তাছাড়া সরকার দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার প্রদান করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, সরকারের এসব উদ্যোগের ফলে বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে এবং খাদ্যশস্য, শাক-সবজি, ফল, মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে শীর্ষ দেশগুলোর অন্যতম বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, “জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত একটি সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে জনগণের মুখে হাসি ফুটানোর একটা লক্ষ্য আমার রয়েছে।”

প্রধানমন্ত্রী জাপানে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি কেবল নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ার বদলে দেশের এবং দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “দূতাবাসের উদ্যোগের পাশাপাশি বিদেশে বাংলাদেশি পণ্যের বাজার খুঁজে বের করুন।”

জাপানকে বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু ও উন্নয়ন অংশীদার আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জাপান আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ এবং তারা আমাদের যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ (১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ শেষে) পুনর্গঠনে প্রচুর সহায়তা করেছে।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যকার গভীর সম্পর্ক প্রমাণ করতে ক্ষমতায় আসার পর পরই আমি জাপান সফর করি।”

এ প্রসঙ্গে তিনি সোনারগাঁও হোটেল ও যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধুসেতু নির্মাণ এবং পদ্মাসেতু নির্মাণে সমীক্ষা পরিচালনায় জাপানের অবদানের কথা স্মরণ করেন।

জাপানের আরও বিনিয়োগ কামনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিনিয়োগে তাদের আকর্ষণ করতে আমরা নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও গাজীপুরের কালিয়াকৈরে জমি বরাদ্দ দিয়েছি।” তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুসরণ করে কৃষিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ শিল্পায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমেদ, পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, দুই প্রবাসী বাংলাদেশি সালেহ মোহাম্মদ আরেক ও সাকুরা সাবের বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।

Comments

The Daily Star  | English

Over 5,500 held in one week

At least 738 more people were arrested in the capital and several other districts in 36 hours till 6:00pm yesterday in connection with the recent violence across the country.

13h ago