ঈদে ঘরমুখো মানুষের বাড়ি ফেরা নিয়ে শিমুলিয়ায় ব্যাপক প্রস্তুতি
আসন্ন ঈদুল ফিতরে দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার শিমুলিয়া ঘাটে নির্বিঘ্ন যাতায়াতের জন্য নানা উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন।
ইতোমধ্যে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কারণে জেল-জরিমানা, শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে ফিটনেসবিহীন লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা, স্পিডবোটে লাইফ জ্যাকেট, লঞ্চের প্রয়োজনীয় বয়া এবং অন্যান্য সরঞ্জমাদি ব্যবহারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঈদের সময় ঘাটের নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, কোস্টগার্ড ও শতাধিক আনসার সদস্য মোতায়েন করা হবে।
এছাড়াও ঈদের ৩ দিন আগে থেকে মহাসড়কের উন্নয়ন কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
দূরপাল্লার বাস বিশেষ করে খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরাসহ আশেপাশের এলাকার যাত্রীবাহী বাসগুলো ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক পরিহার করে আরিচা দিয়ে চলাচলের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের উন্নয়নমূলক কাজ চলছে বিধায় এমন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে প্রশাসন।
লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কাবিরুল ইসলাম জানান, “ঈদের তিনদিন আগে ও পরে মোট ৬ দিন ট্রাক চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হবে। ঈদ উপলক্ষে শিমুলিয়া ঘাট থেকে ঢাকার বাস ভাড়া ১০০ টাকা এবং শিমুলিয়া ঘাট থেকে কাঁঠালবাড়ি ঘাট পর্যন্ত স্পিডবোট ভাড়া ১৮০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। লঞ্চে যাত্রী প্রতি ৩০ টাকা ভাড়া আদায় করতে বলা হয়েছে। নৌরুটে ৮৭টি লঞ্চ, ১৮টি ফেরি ও দুই ঘাট মিলিয়ে ৫৪০টি স্পিডবোট চলাচল করবে। সন্ধ্যার পর স্পিডবোট ছাড়া হবে না। লাইফ জ্যাকেট ও ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী যাত্রী নিয়ে স্পিডবোট ঘাট ছাড়বে।”
“আসন্ন ঈদে শিমুলিয়া ঘাটে যাত্রীদের দুর্ভোগের কোনও আশঙ্কা নেই,” উল্লেখ করে তিনি জানান, “চারজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ঘাট এলাকায় থাকবে ভ্রাম্যমাণ আদালত।”
এছাড়া ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের জন্য শিমুলিয়া ঘাটে ভ্রাম্যমাণ ১০টি টয়লেট এবং ঈদের দিনে বিশেষ জামাতের ব্যবস্থা করা হবে। ইউএনও আরও জানান, উত্তাল পদ্মায় যাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোনও নৌযান চলাচল করতে না পারে তা প্রতিরোধে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম পিপিএম (বার) জানান, “চার শতাধিক পুলিশ সদস্য শিমুলিয়া ঘাটে নিয়োজিত থাকবে। ওয়াচ টাওয়ার, কন্ট্রোল রুম, প্রাথমিক চিকিৎসা রুম ইত্যাদি স্থাপন করা হবে। সিসিটিভি ক্যামেরায় পুরো ঘাট এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। যাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা মালিকদের জেল-জরিমানা করা হবে। যাত্রীরা যাতে নির্বিঘ্নে ঈদে বাড়ি যেতে পারে সেজন্য ঘাট এলাকায় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।”
মাওয়া হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর আমিনুল ইসলাম জানান, ঈদে ঘরমুখো মানুষের নিরাপদে পৌঁছাতে সকল ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কোনও ধরনের বিশৃঙ্খলা সহ্য করা হবে না। ঘাটের বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক। ঈদের ৪/৫ দিন আগে থেকে এই ঘাটে চাপ বাড়তে থাকে। এখন এই রুটে ১৪টি ফেরি চলছে তবে সে সময় ১৮টি ফেরি দিয়ে ঘরমুখো যাত্রীদের পার করা হবে।
Comments