ফিরেই অস্ট্রেলিয়াকে জেতালেন ওয়ার্নার

ছবি: রয়টার্স

নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে গত মার্চেই ফিরেছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। তবে জাতীয় দলের জার্সিতে খেলা হয়নি। ইনজুরির কারণে এদিনও শঙ্কায় ছিলেন। ফিটনেস টেস্ট উতরে মাঠে নামেন। নেমেই ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। তবে জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিল অসি বোলাররাই। নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে আফগানদের ২০৭ রানেই বেঁধে ফেলে তারা। এরপর দুই ওপেনারের ফিফটিতে ভর করে ৭ উইকেটের জয়ে আসর শুরু করে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।

ব্রিস্টলের ব্যাটিং স্বর্গে সাদামাটা লক্ষ্যে অসিদের শুরুটা হয় দুর্দান্ত। ১৬.২ ওভারে ৯৬ রানের ওপেনিং জুটি উপহার দেন অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ ও ডেভিড ওয়ার্নার। ওয়ার্নার দেখে শুনে ব্যাট করলেও শুরু থেকেই আগ্রাসী ঢঙে ব্যাট চালিয়ে ৪৯ বলে ৬৬ রানের ইনিংস খেলেন ফিঞ্চ। ৬টি চার ও ৪টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। অধিনায়কের বিদায়ের পর ধীরে ধীরে খোলস ছেড়ে বের হন ওয়ার্নার। ইনফর্ম ব্যাটসম্যান ওসমান খাওজাকে নিয়ে ৬০ রানের আরও একটি জুটি গড়েন ওয়ার্নার।

দারুণ এক গুগলিতে খাওজাকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন রশিদ। এরপর মাঠে নামেন স্মিথ। নিষেধাজ্ঞা থেকে ফেরা দুই তারকার দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে এরপর জয় তুলে নিতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। যদিও জয় থেকে ২ রান দূরে থাকতে ভুল করে বসেন স্মিথ। মুজিবের বলে ক্যাচ তুলে দেন জাজাইয়ের হাতে। এরপর গ্লেন ম্যাক্সওয়েল মাঠে নেমে প্রথম বলেই চার মেরে ৯১ বল বাকী থাকতে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন দলকে। শেষ পর্যন্ত ব্যাট করে ৮৯ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন ওয়ার্নার। ১১৪ বলের ইনিংসটি ৮টি চারের সাহায্যে সাজান এ ওপেনার।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নিয়েছিল আফগানিস্তানই। শুরুটা আশানুরূপ হয়নি। ইনিংসের তৃতীয় বলেই মিচেল স্টার্কের বলে বোল্ড হয়ে যান মোহাম্মদ শাহজাদ। তখন স্কোরবোর্ডে কোন রান যোগ করতে পারেনি আফগানিস্তান। পরের ওভারে খালি হাতে আউট আরেক ওপেনার হজরতউল্লাহ জাজাই। তবে আফগানদের আশা দেখিয়েছিল তৃতীয় উইকেট জুটি। রহমত শাহ ও হাসমতউল্লাহ শাহিদি মিলে ১২ ওভার সামলে গড়েন ৫১ রানের জুটি।

অসিদের বোলিং বদলেই ম্যাচ ঘুরে যায়। ১৪তম ওভারে বল হাতেই নিয়ে হসমতকে আউট করে জুটি ভাঙেন অ্যাডাম জাম্পা। নিজের তৃতীয় ওভারে আরেক সেট ব্যাটসম্যান রহমতকেও বিদায় করেন তিনি। যদিও এ আউটের কৃতিত্ব স্টিভ স্মিথেরই বেশি। দারুণ ক্যাচ ধরেছেন। পরের ওভারে দলের অন্যতম ভরসা মোহাম্মদ নবিও আউট হন স্মিথের কৃতিত্বে। দারুণ ফিল্ডিংয়ে রানআউট করেন নবিকে। তখন উপমহাদেশের বাকী দুই দলের লো স্কোরের কথাই মনে হচ্ছিল।

কিন্তু ষষ্ঠ উইকেটে অধিনায়ক গুলবাদিন নাইবের সঙ্গে নজিবুল্লাহ জাদরানের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে লড়াইয়ের পুঁজি পায় আফগানিস্তান। ৮৩ রানের দারুণ এক জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটসম্যান। তবে ৩১তম ওভারে আরও একবার বোলিং পরিবর্তন কাজে দেয় অসিদের। দ্বিতীয় স্পেলে বল হাতে নিয়ে এ দুই সেট ব্যাটসম্যানকেই বিদায় করেন মার্কাস স্টয়নিস। পরের ওভারে দৌলত জাদরানের বিদায়ে মনে হচ্ছিল দুইশ রানের অনেক আগেই গুটিয়ে যাবে দলটি। ৮ উইকেটে তখন আফগানদের সংগ্রহ ১৬৬ রান।

কিন্তু বিস্ময় উপহার দিয়ে আফগানদের হাল ধরেন দুই স্পিনার রশিদ খান ও মুজিব উর রহমান। ঝড়ো গতিতে ব্যাট করতে থাকেন এ দুই ব্যাটসম্যান। আগের ওভারে জোড়া উইকেট নেওয়া স্টয়নিসের পরের ওভারে ২টি করে চার ও ছক্কায় ২১ রান তুলে নেন রশিদ। কামিন্সের পরের ওভারে ১টি করে চার ও ছক্কা মারেন মুজিবও। তবে এ জুটি ভাঙেন জাম্পা। তার বলে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়ার আগে মাত্র ১১ বলে ২৭ রান করেন রশিদ।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫১ রানের ইনিংস খেলেন নজিবুল্লাহ। ৪৯ বলে ৭টি চার ও ১টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। জাম্পার করা ২৯তম ওভারে টানা চারটি বাউন্ডারি মারেন এ ব্যাটসম্যান। যার শেষটি ছিল ছক্কা। এছাড়া রহমত ৪৩ ও অধিনায়ক গুলবাদিন ৩১ রান করেন।

অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ৪০ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নিয়েছেন প্যাট কামিন্স। ৩টি উইকেট নিয়েছেন জাম্পাও। তবে খরচ করতে হয়েছে ৬০ রান। এছাড়া ২টি উইকেট পেয়েছেন স্টয়নিস।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আফগানিস্তান: ৩৮.২ ওভারে ২০৭ (শাহজাদ ০, জাজাই ০, রহমত ৪৩, হাসমত ১৮, নবি ৭, গুলবাদিন ৩১, নজিবুল্লাহ ৫১, রশিদ ২৭, দৌলত ৪, মুজিব ১৩, হামিদ ১*; স্টার্ক ১/৩১, কামিন্স ৩/৪০, কোল্টার-নাইল ০/৩৬, স্টয়নিস ২/৩৭, জাম্পা ৩/৬০)।

অস্ট্রেলিয়া: ৩৪.৫ ওভারে ২০৯/৩ (ফিঞ্চ ৬৬, ওয়ার্নার ৮৯*, খাওজা ১৫, স্মিথ ১৮, ম্যাক্সওয়েল ৪*; মুজিব ১/৪৫, হামিদ ০/১৫, দৌলত ০/৩২, গুলবাদিন ১/৩২, নবি ০/৩২, রশিদ ১/৫২)।

ফলাফল: অস্ট্রেলিয়া ৭ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ডেভিড ওয়ার্নার (অস্ট্রেলিয়া)।

Comments

The Daily Star  | English

First day of tariff talks ends without major decision

A high-level meeting between Bangladesh and the Office of the United States Trade Representative (USTR) ended in Washington yesterday without a major decision, despite the looming expiry of a 90-day negotiation window on July 9.

1h ago