যে স্মৃতির জোরে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানো যায়

আব্দুর রাজ্জাকের বলে মাখায়া এনটিনির ক্যাচ যখন মাশরাফি বিন মর্তুজা লুফে নিলেন তখন সে কী উল্লাস বাংলাদেশ দলের। সেই উল্লাসের ঢেউ ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ পেরিয়ে জলোচ্ছ্বাসে রূপ নিয়ে আছড়ে পড়েছিল বঙ্গোপসাগরের তীরের এই ভূখণ্ডে।
Bangladesh Cricket Team
২০০৭ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের স্মরণীয় জয়ের মুহূর্ত। ছবি: এপি

আব্দুর রাজ্জাকের বলে মাখায়া এনটিনির ক্যাচ যখন মাশরাফি বিন মর্তুজা লুফে নিলেন তখন সে কী উল্লাস বাংলাদেশ দলের। সেই উল্লাসের ঢেউ ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ পেরিয়ে জলোচ্ছ্বাসে রূপ নিয়ে আছড়ে পড়েছিল বঙ্গোপসাগরের তীরের এই ভূখণ্ডে।

সেই সুখস্মৃতিই রবিবার (২ জুন) প্রেরণা দেবে বাংলাদেশকে। এদিন ফের বিশ্বকাপের মঞ্চে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে টাইগাররা। লন্ডনের কেনিংটন ওভালে ম্যাচ শুরু বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে তিনটায়।

স্মৃতি বিজড়িত ম্যাচটা ছিল ২০০৭ বিশ্বকাপে। প্রথমবারের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিজে বসেছিল ক্রিকেটের মহাযজ্ঞ। ওই বিশ্বকাপের শুরুতেই চমক দেখিয়েছিল বাংলাদেশ। আগের আসরে সবগুলো ম্যাচ হারের হতাশা ঝেড়ে ফেলে প্রথম ম্যাচেই ভারতকে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এরপর বারমুডাকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো গ্রুপ পর্বের বাধা পাড়ি দেওয়া। তারপর আরেক ইতিহাস, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দাপুটে জয়।

গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে ওয়ানডের শীর্ষ দল দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হয়েছিল টাইগাররা। টসে হেরে ব্যাটিংয়ে মোহাম্মদ আশরাফুলের ৮৭ রানে ভর করে বাংলাদেশ তুলেছিল ৮ উইকেটে ২৫১ রান। তামিম ইকবালের ব্যাট থেকে এসেছিল ৩৮ রান। শেষদিকে ঝড় তুলে মাশরাফি বিন মর্তুজা করেছিলেন ১৬ বলে ২৫ রান। বাংলাদেশ পেয়েছিল জয়ের পুঁজি।

সুনিপুণভাবে বাকি দায়িত্বটা সেরেছিলেন বোলাররা। রাজ্জাক ২৫ রানে নিয়েছিলেন ৩ উইকেট। সৈয়দ রাসেল আর সাকিব আল হাসান পেয়েছিলেন ২টি করে উইকেট। তাতে প্রোটিয়ারা গুটিয়ে গিয়েছিল ১৮৪ রানে। ৬৭ রানের অসাধারণ এক জয় পেয়েছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। আর ওই হারে র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানটাও খুইয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।

বাংলাদেশের ওই স্মরণীয় জয়ের ১২ বছর পর আবার বিশ্বমঞ্চে দেখা দুদলের। মাঝে আরেকবার মুখোমুখি হয়েছিল তারা। ২০১১ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হওয়া ওই দ্বৈরথে অবশ্য শোধ তুলে নিয়েছিল প্রোটিয়ারা। জিতেছিল ২০৬ রানের বিশাল ব্যবধানে। সবমিলিয়ে বিশ্বকাপে মুখোমুখি হওয়া ম্যাচে জয়ের সংখ্যায় এগিয়ে তারাই। দক্ষিণ আফ্রিকার দুই জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশের সঙ্গী ক্যারিবিয়ান সাগর তীরের সেই উচ্ছ্বাস।

প্রোটিয়া বধের স্বাদ নেওয়া চার ক্রিকেটার এবারের বিশ্বকাপেও বাংলাদেশের জার্সিতে খেলছেন। সেই তরুণরা এখন অনেক পরিণত। অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ। মাশরাফি অধিনায়ক, তামিম-মুশফিক ব্যাট হাতে অবিশ্বাস্য ধারাবাহিক আর সাকিব বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ আসরে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর মন্ত্রটাও তাদের জানা।

সেই মন্ত্র নিশ্চয়ই দলের বাকিদের কানে পৌঁছেও দিয়েছেন তারা? নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে সেরা দল নিয়ে বিশ্বকাপে যাওয়া বাংলাদেশ তাতে উদ্দীপ্ত হয়ে আবারও নিশ্চয়ই প্রস্তুত দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাতে? প্রশ্নগুলোর উত্তর ‘হ্যাঁ’ হওয়ার অপেক্ষাতেই পুরো ৫৬ হাজার বর্গমাইল!

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

6h ago