রেকর্ড পুঁজি বাংলাদেশের, জিততে বিশ্বরেকর্ড গড়তে হবে দ.আফ্রিকার
শুরুতে ঝড় তুলে সুর ধরিয়ে দিয়েছিলেন সৌম্য সরকার। সেই সুর ধরেই দারুণ জুটিতে ভিত গড়ে দেন সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ-মোসাদ্দেক হোসেন মিলে শেষটা যেমন হওয়া দরকার ঠিক যেন সেটাই করলেন।
রবিবার (২ জুন) লন্ডনের ওভালে এবারের বিশ্বকাপের নিজেদের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পুরো ৫০ ওভার ব্যাট করে ৩৩০ রান করেছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে তো বটেই, এটাই ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। এর আগে ২০১৫ বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৩২২ রান করেছিল মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। আর এশিয়া কাপে ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩২৯ করেছিল বাংলাদেশ। এই রান তাড়া করে জিততে হলে বিশ্বরেকর্ড গড়তে হবে দক্ষিণ আফ্রিকার। কারণ বিশ্বকাপে এত রান তাড়া করে জেতেনি আর কেউ। ২০১১ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের তোলা ৩২৭ রান তাড়া করে জিতে রেকর্ড গড়েছিল আয়ারল্যান্ডের।
রেকর্ড পুঁজি এনে দিতে দলের হয়ে ৮০ বলে সর্বোচ্চ ৭৮ রান করেন মুশফিক, সাকিব করেন ৮৫ বলে ৭৫। দুজনে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পক্ষে রেকর্ড ১৪২ রানের জুটি গড়েন। ইনিংসের শুরুতে সৌম্য ৩০ বলে ৪২ রানে ঝড় তুলে ফেরেন। শেষ দিকে রান বাড়ানোর কাজ করেছেন মাহমুদউল্লাহ-মোসাদ্দেক। ২০ বলে ২৬ করে ফেরেন মোসাদ্দেক। ৩৩ বলে ৪৬ করে অপরাজিত থেকে যান মাহমুদউল্লাহ।
ইনিংসের শুরুতে উইকেট দেখে মনে হচ্ছিল ২৭০ রানও চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু সময় গড়াতেই বদলেছে ছবি। সৌম্য সরকার যখন মারতে শুরু করলেন, তরতর করে বাড়ল রান। ভালো শুরু এনে দুই ওপেনার ফেরার পর সাকিব আল হাসান আর মুশফিকুর রহিম খেলতে থাকলেন অনায়াসে। তাদের জুটি আভাস দিচ্ছিল, বাংলাদেশ ছাড়িয়ে যাবে ৩৩০ রানও। মাঝের সময়টায় কিছুটা মন্থর গতি এলেও শেষ দিকের ঝড়ে ঠিকই ৩৩০ ছুঁয়েছে বাংলাদেশের সংগ্রহ।
বিশাল পুঁজি। তবে উইকেটের বিবেচনায় দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে চ্যালেঞ্জটা আসলে কতটা কঠিন? উইকেটে সেরকম বাউন্স নেই, বল ব্যাটে আসছে ভালো। তবে আশার কথা, স্পিনাররা মাঝে মাঝেই গ্রিপ পাচ্ছেন। ব্যাটসম্যানদের জন্য বিষ না থাকলেও বোলাররা বুদ্ধি খাটিয়ে বল করলে রান আটকে চাপ তৈরি করতেই পারেন। সেই চাপ থেকে মিলতে পারে উইকেটও।
বাংলাদেশের ইনিংসটা এগিয়েছে উঠা-নামার মধ্য দিয়ে। প্রথম দশ ওভারে এসেছে ৬৫ রান। কিন্তু শুরুর ৫ ওভারে রান ছিল মাত্র ১৪। পরের ৫ ওভার সৌম্যের ঝড়ে আসে ৫১ রান। এই সময়ে সৌম্যের ৩০ বলে ৪২ রানের ইনিংসটাই গড়ে দেয় সুর।
তামিমের পর সৌম্য ফিরে গেলেও সেই সুর নিয়েই দলকে টেনেছেন মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান। এগারো থেকে বিশ ওভারে এসেছে ৫৯ রান, একুশ থেকে ত্রিশ ওভারে এসেছে ৬৬ রান। তবে সাকিব—মুশফিক রেকর্ড জুটি ভাঙায় ৩১ থেকে ৪০ ওভারের ধাপে রান আসে ৫৪।
শেষ দশ ওভারে এসেছে ৮৬ রান। বিশেষ করে শেষ ৫ ওভারে তাণ্ডব চালিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। নিয়েছেন ৫৯ রান। দক্ষিণ আফ্রিকার শক্ত ব্যাটিং লাইনআপের কথা মাথায় নিলেও বলার অপেক্ষা রাখে না, তাদের কঠিন চ্যালেঞ্জই দিয়েছে বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ৩৩০/৬ (তামিম ১৬, সৌম্য ৪২, সাকিব ৭৫, মুশফিক ৭৮, মিঠুন ২১, মাহমুদউল্লাহ ৪৬*, মোসাদ্দেক ২৬, মিরাজ ৫*; এনগিদি ০/৩৪, রাবাদা ০/৫৭, ফেলুকওয়ায়ো ২/৫২, মরিস ২/৭৩, মার্করাম ০/৩৮, তাহির ২/৫৭, ডুমিনি ০/১০)
Comments