রোমাঞ্চকর ম্যাচে উইন্ডিজকে হারাল অস্ট্রেলিয়া

ছবি: রয়টার্স

কি দারুণ ভাবেই ম্যাচের শুরুটা করেছিলে উইন্ডিজ। অসিদের টপ অর্ডার ধসিয়ে দিয়ে শুরু। কিন্তু সে চাপ ধরে রাখতে ব্যর্থ হয় স্টিভ স্মিথের দায়িত্ব ইনিংস। ও নাথান কোল্টার-নাইলের বিস্ময়কর ইনিংসে। বোলারদের লড়াই করার পুঁজি এনে দেন তারা। এরপর বাকী কাজ করেন বোলাররা। বিশেষ করে মিচেল স্টার্ক অবতীর্ণ হন রুদ্ররূপে। একাই তুলে নেন পাঁচ উইকেট। তাতে ১৫ রানের রোমাঞ্চকর এক জয় পেয়েছে অসিরা।

লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি উইন্ডিজের। দলীয় ৭ রানেই সাজঘরমুখী হন এভিন লুইস। এরপর খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি আরেক ওপেনার ক্রিস গেইলও। অবশ্য গেইল আউট হওয়ার আগে বেশ নাটক দেখা গেছে। মিচেল স্টার্কের এক ওভারেই দুই দুইবার রিভিউ নিয়ে বেঁচেছেন। পরের ওভারেও প্রায় বেঁচে গিয়েছিলেন। কিন্তু আম্পায়ার্স কলের কারণে হয়নি।

দলীয় ৩১ রানে ২ উইকেট হারানো দলের হাল নিকোলাস পুরানকে নিয়ে ধরেন ফর্মের তুঙ্গে থাকা শেই হোপ। গড়েন ৬৮ রানের জুটি। পুরানকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন জাম্পা। এরপর শিমরন হেটমায়ারকে নিয়ে ৫০ রানের আরও একটি কার্যকরী জুটি গড়েন হোপ। দলীয় ১৯০ রানে অবশ্য হোপ ফিরে যান প্যাট কামিন্সের দারুণ এক ডেলিভারিতে। তবে এক প্রান্ত আগলে ক্যারিবিয়ানদের আশা টিকিয়ে রেখেছিলেন অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। কিন্তু স্টার্কের বাউন্সারে দলীয় ২৫২ রানে হোল্ডার বিদায় নিলে কঠিন হয়ে যায় তাদের স্বপ্ন। শেষ দিকে আর কেউই দায়িত্ব নিতে ব্যর্থ হলে ৯ উইকেটে ২৭৩ রানের বেশি করতে পারেনি দলটি।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৮ রানের ইনিংস খেলেন হোপ। ১০৫ বলে ৭টি চারের সাহায্যে এ রান করেন তিনি। ৫৭ বলে ৭টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫১ রান করেন অধিনায়ক হোল্ডার। এছাড়া পুরানের ব্যাট থেকে আসে ৪০ রান। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ৪৬ রানের খরচায় ৫টি উইকেট নেন স্টার্ক। এছাড়া ২টি উইকেট পেয়েছেন কামিন্স।

আগের আগে টস জিতে বোলিং করতে নেমে শুরুতেই অসিদের চেপে ধরেছিল ক্যারিবিয়ান পেসাররা। ক্যারিবিয়ানদের ঝড়ো গতির বাউন্সার সামলাতে না পেরে দলীয় ৩৮ রানেই টপ অর্ডারের চার ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে বড় চাপে পড়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। ৫ উইকেটে ছিল ৭৯ রান। রীতিমতো খাঁদের কিনারা থেকে দলকে টেনে তুলেছেন স্মিথ। প্রথম ক্যারেকে নিয়ে, এরপর কোল্টার-নাইল। ষষ্ঠ উইকেটে ৬৮ রানের জুটি গড়ার পর সপ্তম উইকেটে ১০২ রানের জুটি উপহার দেন স্মিথ। তাতে লড়াইয়ের পুঁজি পেয়ে যায় দলটি।

তবে স্মিথের ইনিংসটি হতে পারতো আরও লম্বা। শেল্ডন কটরেলের দুর্দান্ত এক ক্যাচের বলী হয়েছেন তিনি। ওশেন থমাসের বলে অনেকটা ফ্লিক করেছিলেন স্মিথ। বাউন্ডারি লাইনে বল ধরে ভারসাম্য রাখতে পারছিলেন না কটরেল। শূন্যে ছুঁড়ে দিয়ে মাঠের বাইরে চলে যান তিনি। ঢুকে দ্বিতীয় দফায় ধরে সাবেক অসি অধিনায়ককে ফেরান তিনি। তবে এর আগে দলের জন্য কার্যকরী ইনিংসটি খেলেন স্মিথ। ১০৩ বলে ৭৩ রানের ধৈর্যশীল ইনিংসটি ৭টি চারের সাহায্যে সাজিয়েছেন তিনি।

তবে কিছুটা বিস্ময় উপহার দিয়ে এদিন দারুণ ব্যাটিং করেন কোল্টার-নাইল। ক্যারিয়ারের প্রথম হাফসেঞ্চুরি তুলে এগিয়ে গিয়েছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। রানের গতি বাড়াতে গিয়েই আউট হন নার্ভাস নাইন্টিজে। কার্লোস ব্র্যাথওয়েটের বলে ক্যারিবীয় অধিনায়ক জেসন হোল্ডারের হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে খেলেন ৯২ রানের ইনিংস। বিশ্বকাপে আট নম্বরে নামা কোন ব্যাটসম্যানের এটাই সর্বোচ্চ স্কোর। মাত্র ৬০ বলে ৯টি চার ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে এ রান করেন। ক্যারের ব্যাট থেকে আসে ৪৫ রান।

তবে মাঝে ছন্দ হারিয়ে ফেলা উইন্ডিজের শেষটা ভালোই হয় ব্র্যাথওয়েটের দারুণ বোলিংয়ে। লেজের দিকের ব্যাটসম্যানদের ছেঁটেছেন তিনি। ফলে এক ওভার বাকী থাকতেই ২৮৮ রানে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ৬৭ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নেন ব্র্যাথওয়েট। এছাড়া ২টি করে উইকেট নেন কটরেল, আন্দ্রে রাসেল ও ওশেন থমাস।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া: ৪৯ ওভারে ২৮৮ (ওয়ার্নার ৩, ফিঞ্চ ৬, খাওজা ১৩, স্মিথ ৭৩, ম্যাক্সওয়েল ০, স্টয়নিস ১৯, ক্যারে ৪৫, কোল্টার-নাইল ৯২, কামিন্স ২, স্টার্ক ৮, জাম্পা ০*; থমাস ২/৬৩, কটরেল ২/৫৬, রাসেল ২/৪১, ব্র্যাথওয়েট ৩/৬৭, হোল্ডার ১/২৮, নার্স ০/৩১)।

উইন্ডিজ: ৫০ ওভারে ২৭৩/৯ (গেইল ২১, লুইস ১, হোপ ৫৮, পুরান ৪০, হেটমায়ার ২১, হোল্ডার ৫১, রাসেল ১৫, ব্র্যাথওয়েট ১৬, নার্স ১৯*, কটরেল ১, থমাস ০*; স্টার্ক ৫/৪৬, কামিন্স ২/৪১, কোল্টার-নাইল ০/৭০, ম্যাক্সওয়েল ০/৩১, জাম্পা ১/৫৮, স্টয়নিস ০/১৭)।

ফলাফল: উইন্ডিজ ১৫ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: নাথান কোল্টার-নাইল (অস্ট্রেলিয়া)।

Comments

The Daily Star  | English
BDR protest Kakrail today

Cops use water cannons to disperse protesting dismissed BDR members in Kakrail

Police barred them when they were marching towards the chief adviser’s residence, Jamuna

1h ago