আলগা বোলিং, বাজে ফিল্ডিং, দুর্বল শরীরী ভাষা

আকাশে ছিল ঝলমলে রোদ। কিন্তু ঘাসে ভরা উইকেট আর বাতাসে মুভমেন্ট থাকায় শুরুতে পেসারদের জন্যই সুবিধা ছিল বেশি। টস জিতে প্রত্যাশিত ফিল্ডিংও পেল বাংলাদেশ। শুরুর পাঁচ ওভার হলো দারুণ। এরপরই ছুটে গেল বাঁধন। আলগা হয়ে গেল সব। আরেকজন পেসার না থাকা প্রকট হলো ক্ষণে ক্ষণে। প্রথম আধঘণ্টা ঝাপটা সামলে ভয়ংকর হয়ে উঠল ইংলিশ ব্যাটিং। তা থেকে নিজেদের বাঁচানোর মতো বারুদ দেখা গেল না বাংলাদেশের।

শনিবার (৮ জুন) কার্ডিফে আগে ব্যাটিং পেয়ে ৫০ ওভারে ৩৮৬ রানের পাহাড় গড়েছে ইংল্যান্ড। এত রান তাড়া করে জিতলে নিজেদের তো বটেই, বিশ্বকাপের ইতিহাসে রান তাড়ার রেকর্ড গড়বে বাংলাদেশ। উইকেট ব্যাট করার জন্য ভীষণ ভালো হলেও বাংলাদেশের জন্য কাজটা আসলে দুর্গম গিরি-কান্তার মরু পাড়ি দেওয়ার মতোই।

ইংলিশদের হয়ে ১২১ বলে সর্বোচ্চ ১৫৩ রান করেন জেসন রয়। ৪৪ বলে ৬৪ রানের ঝড় তোলেন জস বাটলার। ইংলিশদের চেনা খুনে রূপ ছিল। তবে ওটা ঠেকাতে কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি বাংলাদেশের। ইংল্যান্ডের পুরো ইনিংস জুড়েই বাংলাদেশের শরীরী ভাষা ছিল নিস্তেজ। ফিল্ডিং হয়েছে দুর্বল। গ্রাউন্ড ফিল্ডিংয়ে দেখা যায়নি ক্ষিপ্রতা। উল্টো হাত ফসকে রান বেরিয়েছে অনেক। দুই ফিল্ডারের মাঝ দিয়ে চার হয়েছে বেশ কয়েকটি। কে ডাইভ দেবেন এই দ্বিধা-দ্বন্দ্ব দেখা গেছে ফিল্ডারদের মধ্যে।

অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা প্রথম স্পেলে বল হাতে নিয়ে বেশ ভালো মুভমেন্ট পেয়েছিলেন। তার বলে প্রথম পাঁচ ওভারের মধ্যে টপ এজ হয়ে ক্যাচের মতো উঠল বারদুয়েক। জায়গামতো না থাকায় নিতে পারলেন না কেউ। জেসন রয়কে ভড়কে দিয়ে বোলিং শুরু করেছিলেন সাকিব আল হাসান। মাঝে মাঝে ভড়কেও দিতে পেরেছিলেন তিনি। কিন্তু উইকেট নেওয়ার কাছাকাছি যেতে পারেননি। সিঙ্গেল বের করার পথ বন্ধ করে ফিল্ডাররাও দিতে পারেননি সমর্থন।

সবচেয়ে দৃষ্টিকটু ছিল প্রথম স্পেলে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বোলিং। শুরুর চাপ তাকে পিটিয়ে সরিয়ে দেন জনি বেয়ারস্টো-জেসন রয়। তিনি প্রথম তিন ওভারে দিয়েছেন ১০ এর বেশি করে রান। জো রুটকে পরে বোল্ড করেছেন, ঝড় তোলা জস বাটলারকেও আউট করেছেন বটে, কিন্তু তার আগেই মার খেয়ে অবস্থা হয়ে গেছে বেগতিক।

পরিকল্পিতভাবে প্রথম ব্রেক থ্রু আনেন মাশরাফি। রাউন্ড দ্য উইকেটে বল করে মুভমেন্ট আদায় করে বেয়ারস্টোকে টপ এজ বানিয়েছেন। বাকিদের তুলনায় বেশ ভদ্রস্থ তার বোলিং ফিগার।

জেসন রয়কে থামান মেহেদী হাসান মিরাজ। এই অফ স্পিনার শুরুতে ভালো বল করেছিলেন, কিন্তু তাল রাখা সম্ভব হয়নি তার। ১২১ বলে ১৪ চার আর ৫ ছক্কায় ১৫৩ রানের দানবীয় ইনিংস খেলে যখন রয় বিদায় নিচ্ছেন, ইংল্যান্ড তখনই দেখছে সাড়ে তিনশো ছাড়িয়ে যাওয়ার পথ।

রয়ের পর তাণ্ডব চালিয়েছেন বাটলার। গায়ের জোরে তছনছ করেছেন বাংলাদেশের বোলিং। শেষ দিকে ইয়ন মরগান, বেন স্টোকসদেরও ফেরানো গিয়েছিল। কিন্তু ইংলিশ ব্যাটিং কত লম্বা আর শক্তিশালী তা দেখিয়েছেন লিয়াম প্লাঙ্কেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ইংল্যান্ড:  ৫০ ওভারে  ৩৮৬/৬  (রয় ১৫৩, বেয়ারস্টো ৫১, রুট ২১, বাটলার ৬৪, মরগান ৩৫ , স্টোকস ৬,   ওকস ১৮*, প্লাঙ্কেট ২৭*; সাকিব ০/৭১, মাশরাফি ১/৬৮ , সাইফউদ্দিন ২/৭৮, মোস্তাফিজ ১/৭৫, মিরাজ ২/৬৭, মোসাদ্দেক ০/২৪)

Comments

The Daily Star  | English

Large-scale Chinese investment can be game changer for Bangladesh: Yunus

The daylong conference is jointly organised by Bangladesh Economic Zones Authority and Bangladesh Investment Development Authority

2h ago