আবারো কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখার সম্ভাবনা
বিনিয়োগে উৎসাহ দিতে সরকার আবারও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার কথা বিবেচনা করছে। এক্ষেত্রে বেসরকারি শিল্প ক্ষেত্রে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হতে পারে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ১০ শতাংশ হারে কর পরিশোধ করলেই কালো টাকার মালিকদের ওই অর্থের উৎস সম্পর্কে কোনো প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে না।
শিল্পক্ষেত্রে বিনিয়োগের মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ এর আগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের আমলে ২০০৩-২০০৪ অর্থবছরে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দুবছরের মধ্যেই বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনার মুখে ওই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছিল তৎকালীন সরকার।
এর পর ২০০৬-২০০৭ অর্থবছরে আবার কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয় সেসময়ের তত্ত্বাবধায়ক সরকার। তবে সেবার এই সুযোগ নিতে জরিমানার বিধান রাখা হয়েছিল।
গত কয়েক বছর থেকেই জিডিপির ২২ শতাংশ থেকে ২৩.৪০ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে বেসরকারি বিনিয়োগের পরিমাণ। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এখন বেসরকারি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়াতে সরকার আবার টাকা সাদা করার সুযোগ দিতে চাইছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এর তথ্য অনুযায়ী শেষ হতে চলা বর্তমান অর্থবছরে বেসরকারি বিনিয়োগ ১ দশমিক ৩৭ পয়েন্ট বেড়ে জিডিপির ২৩ দশমিক ৪০ শতাংশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। যেখানে ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরে এই বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ২২ দশমিক ০৩ শতাংশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, সরকারের বিশ্বাস বেসরকারি বিনিয়োগ উৎসাহিত করা গেলে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রসারিত হবে।
বর্তমানে অপ্রদর্শিত অর্থ পুঁজি বাজার, আবাসিক ভবন ও অ্যাপার্টমেন্টে বিনিয়োগের সুযোগ দিয়ে রেখেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এই সুযোগ নেওয়ার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিমাণ ট্যাক্সের বিধান রাখা হয়েছে। এক্ষেত্রেও অপ্রদর্শিত অর্থের উৎস্য সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন করা হচ্ছে না।
স্বাধীনতার পর থেকে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ সংক্রান্ত যা তথ্য পাওয়া যায় তাতে দেখা যাচ্ছে, ১৯৭২ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ১৩ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা সাদা করা হয়েছে। এখান থেকে এনবিআর ট্যাক্স হিসেবে পেয়েছে ১ হাজার ৪৫৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধুমাত্র গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলেই ৯ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা সাদা করা হয়।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, অতীতেও একই ধরনের সুযোগ দেওয়া হলেও কাঙ্ক্ষিত সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে শিল্প ক্ষেত্রে বিনিয়োগের সুযোগ রাখাকে ইতিবাচক ভাবেই দেখলেও পুরো ব্যাপারটি কতটা ফলপ্রসূ হবে সে ব্যাপারেও সন্দিহান এই অর্থনীতিবিদ।
ঈষৎ সংক্ষেপিত, মূল প্রতিবেদনটি পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে
Comments