আফ্রিদির চড় খেয়েই সত্য স্বীকার করেছিলেন আমির
নিজের আত্মজীবনীতে কদিন আগেই পাকিস্তানের শহীদ আফ্রিদি লিখেছিলেন মোহাম্মদ আসিফ, মোহাম্মদ আমির ও সালমান বাটের স্পট ফিক্সিংয়ের ব্যাপারটা তিনি জানতেন। আরও জানিয়েছিলেন সন্দেহ করে সাবেক অলরাউন্ডার আব্দুল রাজ্জাকই তাকে প্রথম জানান এ তথ্য। তবে ঠিক কীভাবে সত্য উদ্ধার করেছিলেন আফ্রিদি তা প্রকাশ করেননি। এবার সে সত্য প্রকাশ করেন রাজ্জাক। ভারতীয় গণমাধ্যম ফলাও করে ছাপিয়েছে এ সংবাদ।
তিন খেলোয়াড়ের কেলেঙ্কারির খবর আফ্রিদি জানলেও তা প্রকাশ করেননি। পরে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম নিউজ অব দ্যা ওয়ার্ল্ড ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নো বল সূত্র ধরে ফিক্সিংয়ের বিষয়টি জনসম্মুখে ফাঁস করে। অথচ রাজ্জাকের কথা কানে নেননি আফ্রিদি। স্রেফ ছেলেমানুষি সন্দেহ ভেবে উড়িয়ে দেন। এ তিন খেলোয়াড়কে আগে থেকেই সন্দেহ করতেন রাজ্জাক। ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই বুঝতে পেরেছিলেন কিছু একটা ঠিক হচ্ছে না তাদের।
২০১০ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে একটি ম্যাচে বাটের কাছে অনেক করে সিঙ্গেল চেয়েও পাননি রাজ্জাক। অথচ অপর প্রান্তে একের পর এক ডট দিয়ে যাচ্ছিলেন বাট। তখনই তার সন্দেহটা গাঢ় হয়। সম্প্রতি পাকিস্তানের নিউজ চ্যানেল জিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাজ্জাক বলেন, 'আমি আমার ধারণাটা আফ্রিদির সঙ্গে শেয়ার করেছিলাম। তখন সে আমাকে বলেছিল এটা আমার ভুল ধারণা, কোন কিছুই ভুল নেই। কিন্তু যখন আমি ওয়েস্ট ইন্ডিজে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সালমান বাটের সঙ্গে ব্যাটিং করি তখন আমি নিশ্চিত হই সে দলকে হারাচ্ছে।'
'আমি বিস্মিত হয়েছিলাম যখন সে আমার কৌশল ফিরিয়ে দেয়। যখন আমি বুঝতে পারি সে কিছু করছে তখন আমাকে স্ট্রাইক দেওয়া জন্য জোর করি। কিন্তু প্রতি ওভারেই সে দুই তিন বল খেলে আমাকে স্ট্রাইক দিয়েছে। আমি এতে হতাশ হয়ে যাই, শেষে চাপে পড়ে আউট হয়ে যাই।' - যোগ করে আরও বলেন রাজ্জাক।
নিজের সন্দেহর কথা আফ্রিদিকে জানালে বুম বুম খ্যাত এ দাবেক তারকা তরুণ আমিরকেই বেছে নেন সত্য উদ্ধারে। শুরুতে স্পট ফিক্সিংয়ের কথা স্বীকার করেননি আমির। রাজ্জাকের ভাষায়, 'সে আমাকে বলেছিল রুম থেকে চলে যাও কিন্তু কিছুক্ষণ পর আমি একটা চড় মারার শব্দ শুনতে পাই এবং এরপর আমির সব সত্যি বলতে শুরু করে।'
তখনই যদি আসিফ, আমির ও বাটকে শাস্তি দেওয়া হতো তাহলে দেশের ক্রিকেটের ভাবমূর্তি নষ্ট হতো না বলে মনে করেন রাজ্জাক, 'আমি ভেবেছিলাম আইসিসি এ ঘটনার প্রমাণ করার আগে পিসিবির আগে অ্যাকশন নেওয়া উচিৎ। সে তিন খেলোয়াড় সত্যিটা অস্বীকার করলেও তাদের দেশে পাঠিয়ে দেওয়া উচিৎ ছিল। তখনই এক বছর কিংবা তার বেশি নিষেধাজ্ঞা দেওয়া উচিৎ ছিল। কিন্তু সেটা তারা করেনি, পরে এ তিন জন পাকিস্তান ক্রিকেটের মানসম্মান ডুবিয়েছে।'
অবশ্য পরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একটি নো বলকে কেন্দ্র করে স্পট ফিক্সিং ধরা পড়ে আমির, আসিফ ও বাটের। এরপর নিষিদ্ধও হন তারা। পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে মোহাম্মদ আমির জাতীয় দলে ফিরলেও আসিফ ও বাট আর ফিরতে পারেননি।
Comments