চরম রাজনৈতিক অশান্তি পশ্চিমবঙ্গে, মাঠে নামলেন রাজ্যপাল
ক্রমাগত রাজনৈতিক অস্থিরতা ছাড়িয়ে পড়ায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সব রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক ডাকলেন রাজ্যটির রাজপাল কেশরী নাথ ত্রিপাঠি।
লোকসভা ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর রাজ্য জুড়ে প্রধান দুই রাজনৈতিক শক্তি তৃণমূল কংগ্রেস এবং ভারতীয় জনতা পার্টির স্থানীয় নেতা-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় ওই বৈঠকে রাজ্যের সব দল যোগ দেবে বলে জানা গিয়েছে।
এর আগে বুধবার দুপুরে বিজেপির কলকাতার পুলিশ সদর দফতর লালবাজার ঘেরাও অভিযান ঘিরে তুলকালাম কান্ড বেধে যায়।
রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতির জন্য রাজ্য সরকারের পুলিশ প্রশাসনকে দায়ী করে এদিন লালবাজারের অভিযান শুরু করে বিজেপি। কিন্তু পথেই তাদের বাধার মুখে পড়তে হয়। কলকাতার প্রাণকেন্দ্র সেন্ট্রাল এভিনিউসহ উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতা কার্যতস্তব্ধ হয়ে যায় এই আন্দোলনের পাল্টাপাল্টি অবস্থানের কারণে।
পুলিশ বিজেপি সমর্থকদের ওপর ঢালাও লাঠিচার্জ, কাদানে গ্যাসের সেল ফাটায় এবং ব্যবহার করে জল কামান। প্রায় দুই ঘন্টা রণক্ষেত্রের চেহারা নেওয়ার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে দেখে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব তাদের কর্মসূচি প্রত্যহার করে নেন।
পরে রাজ্য বিজেপি দিলীপ ঘোষ বলেন, পুলিশ বিনা কারণে শান্তিপূর্ণ একটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের লাঠি ও টিয়ার গ্যাস মেরেছে। পুলিশ প্রশাসন এতোটাই ভীত হয়ে পড়েছে যে আন্দোলনের ভয়ে অগণতান্ত্রিক কাজ করেছে।
গোটা ঘটনায় তিনি মমতা ব্যানার্জি এবং তার দল তৃণমূল কংগ্রেসকে দায়ী করে আরও বৃহত্তর আন্দোলনে যাওযার ঘোষণা করেন। একইভাবে বিজেপি নেতা মুকুল রায়ও মমতা ব্যানার্জি, তাদের ভাইপো অভিষেক ব্যানার্জির সমালোচনা করেন। বলেন, পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে তৃণমূল নেতারা বাইরে পর্যন্ত বের হতে পারবেন না। জনগণ থেকে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন।
যদিও তৃণমূল নেতা অভিষেক ব্যানার্জি আইনশৃঙ্খলা অবনতির জন্য বিজেপিকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেছেন, রাজ্যের মানুষ ওদের সঙ্গে নেই। অন্য রাজ্য থেকে মানুষ এনে ওরা বাংলাকে অশান্ত করছে। কিন্তু বাংলার মানুষ সব দেখছেন।
লালবাজার অভিযানে বিজেপি ধংসাত্বক আচরণ করেছে বলেও অভিযোগ করেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতা।
২৩ মে ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে পশ্চিমবঙ্গে চরম রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। রাজ্যটির জেলায় জেলায় প্রধান দুই দলের মধ্যে তীব্র লড়াই শুরু হয়েছে। প্রতিদিন প্রাণহানীর ঘটনা ঘটেছে। গত ২৪ ঘণ্টাও রাজ্যে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। ভোটের ফল প্রকাশের পর এখন পর্যন্ত বেসরকারি হিসাবে রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ২০ ছাড়িয়েছে।
Comments