টানা আন্দোলনে ভেঙে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসা পরিষেবা

West Bengal
এক কনিষ্ঠ চিকিৎসক লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় কার্যত গোটা চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। ছবি: সংগৃহীত

এক কনিষ্ঠ চিকিৎসক লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় কার্যত গোটা চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে সাড়ে সাত কোটি মানুষের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে।

টানা তিনদিন ধরে রাজ্যের কোনও সরকারি হাসপাতালের বহির্ভিবাগে চিকিৎসা পেরিষেবা যেমন হচ্ছে না, তেমনই জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রেও কার্যত ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে সঠিকভাবে চিকিৎসা পাওয়া যাচ্ছে না।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ (১৩ জুন) দুপুর ১২টার দিকে কলকাতার পিজি হাসপাতালে আন্দোলনরত চিকিৎসক ও ভুক্তভোগী রোগীদের দেখতে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়েই মুখ্যমন্ত্রী চিকিৎসকদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। ন্যায় বিচারের দাবিতে মুখ্যমন্ত্রীর সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে চিকিৎসকরা স্লোগান তুলেন। “উই ওয়ান্ট জাস্টিস” এই স্লোগানেও রীতিমত ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।

তিনি চার ঘণ্টা সময় বেধে দিয়ে বলেন, “দুপুর ২টার মধ্যে পুরোপুরি চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু করতে হবে। যেসব জুনিয়র চিকিৎসকরা আন্দোলন করছেন তাদের কাজে ফেরার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

কড়া ভাষায় তিনি বলেন, “যারা কাজে ফিরবেন না তাদের সরকার আর কোনও সুযোগ সুবিধা দেবে না।”

শুধু তাই নয়, তিনি এই আন্দোলনের বিজেপি, সিপিএম এবং ধর্মীয় উস্কানীর অভিযোগ তোলেন। চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলেন, “অনেক ক্ষেত্রেই নাম পরিচয় শুনে চিকিৎসা করা হচ্ছে। এই ঘটনা চলতে পারে না।”

আর হাসপাতালের এই আন্দোলনের বহিরাগতদের অনুপ্রবেশকে দায়ী করেন মমতা। বলেন, “বাংলার ছেলেমেয়েরা এই আন্দোলন করছেন না।”

মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য পরিস্থিতি আরও জটিল করেছে। চিকিৎসকদের এই আন্দোলনে রাজনৈতিক চেহারায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকরাও। রাজ্যের অনেক জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক ইতিমধ্যেই এই আন্দোলনের সহমর্মীতা জানিয়েছেন। এমন কি এইএমস হাসপাতালের কনিষ্ঠ চিকিৎসকরাও কলকাতার নীলরতন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনার প্রতিবাদে  শুক্রবার দেশ জুড় আউটডোর পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এদিকে জেলায় জেলায় সাধারণ রোগীরা চিকিৎসা না পেয়ে সরকারি হাসপাতালগুলোর বাইরে অপেক্ষা করছেন। তীব্র মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দুজন শীর্ষ বিজেপি নেতা। মুকুল রায় বলেছেন, “রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ঘটনা পর পদত্যাগ করা উচিৎ।”

দিলীপ ঘোষের দাবি, “মুখ্যমন্ত্রী সব জায়গায় গিয়ে ধর্মীয় উস্কানীমূলক কথা বলেন। ঈদের নামাজে গিয়েও তিনি জয় হিন্দ জয় বাংলা স্লোগান তোলেন। রাজনীতির জায়গায় ধর্ম এমন ধর্মের জায়গায় গিয়ে রাজনীতির কথা বলে নিজেই পরিস্থিতি জটিল করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”

রাজ্যের এই অচলাবস্থার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আরও ভুগতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

Comments

The Daily Star  | English
NCP will not accept delay in Teesta master plan

Won’t accept any implementation delay: Nahid

National Citizen Party Convener Nahid Islam yesterday said his party would not accept any delay or political maneuver over implementing the Teesta master plan.

6h ago