মুশফিকের সেঞ্চুরিতে দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড গড়েও হারল বাংলাদেশ

mushfiq
ফাইল ছবি: রয়টার্স

নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়ল বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তোলা ৩৩০ রান ছাড়িয়ে উঠল আরও উঁচুতে। মুশফিকুর রহীম হাঁকালেন দুর্দান্ত সেঞ্চুরি। মাহমুদউল্লাহ, তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসানরাও অবদান রাখলেন। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার ছুঁড়ে দেওয়া রানের পাহাড় ডিঙাতে তা যথেষ্ট হলো না।

বৃহস্পতিবার (২০ জুন) নটিংহ্যামের ট্রেন্ট ব্রিজে অসিদের বিপক্ষে ৩৮২ রান তাড়া করে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ৮ উইকেটে ৩৩৩ রান। লড়াই করে পাওয়া হারটা মাত্র ৪৮ রানের।

লক্ষ্য তাড়ায় বাংলাদেশ শুরুতেই ধাক্কা খায় সৌম্য সরকারের বিদায়ে। তামিম ইকবালের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির খেসারত দিয়ে সাজঘরে ফেরেন এই বাঁহাতি। তার ব্যাট থেকে আসে ১০ রান। মারকুটে সৌম্যর বিদায়ে ইতিহাস গড়তে যে উড়ন্ত শুরু দরকার ছিল তা আর পাওয়া হয়নি।

চাপ জেঁকে বসার সুযোগ না দিয়ে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে ৭৯ রানের জুটি গড়েন তামিম। রানের চাকাকে শ্লথ হতে দেননি তারা। টানা ষষ্ঠ পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস খেলার সুবাস জাগিয়ে সাকিব ফেরেন ৪১ রান করে। এরপর ছোট ছোট আরও দুটি জুটি। বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আসে রান। এবারের আসরে ব্যক্তিগত প্রথম হাফসেঞ্চুরি হাঁকিয়ে তামিম করেন ৬২। লিটনের ব্যাট থেকে আসে ২০ রান।

এরপর জুটি বাঁধেন মুশফিকুর রহিম আর মাহমুদউল্লাহ। যে জুটিতে আশা দানা বাঁধে। অসম্ভবকে সম্ভব করার স্বপ্ন চোখের কোণে উঁকি দিতে থাকে। হাতে ৬ উইকেট নিয়ে শেষ ৫ ওভারে দরকার দাঁড়ায় ৮২ রান।

৪৬তম ওভারে পরপর দুই বলে মাহমুদউল্লাহ ও সাব্বির রহমান ফিরে গেলে বাংলাদেশের লক্ষ্য থেকে দূরে থামাটা নিশ্চিত হয়ে যায়। ৫০ বলে ৬৯ রান করা মাহমুদউল্লাহর বিদায়ে ভাঙে ৯৭ বলে ১২৭ রানের অসাধারণ জুটি। সাব্বির খুলতে পারেননি রানের খাতা।

হার লেখা হয়ে গেলেও গ্যালারিতে থাকা সমর্থকদের উল্লাসের উপলক্ষের কমতি হয়নি। মুশফিক তুলে নেন বিশ্বকাপে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি। অপরাজিত থাকেন ৯৭ বলে ১০২ রানে। শেষদিকে মেহেদী হাসান মিরাজ ও মাশরাফি বিন মর্তুজা ফিরে গেলে ৮ উইকেটে ৩৩৩ রানে থামে বাংলাদেশ।

এর আগে ট্রেন্টব্রিজে টস জিতে ব্যাট করে ৫ উইকেটে  ৩৮১ রান করে অস্ট্রেলিয়া। এই রান তাড়া করে জিততে হলে বাংলাদেশকে ভাঙতে হতো রান তাড়ায় নিজেদের রেকর্ড। ভাঙতে হতো বিশ্বকাপের রান তাড়ার রেকর্ডও। সেই দাবি মেটানো যায়নি।

এদিন ফিল্ডিংয়ে খেলোয়াড়দের শরীরী ভাষা ছিল মাঝারি মানের। বোলাররা রানের গতিতে লাগাম টানতে পারেননি। ইনিংসের ৩০ ওভারের পর অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা রান বাড়ান তরতরিয়ে। বেশ কয়েকবার হাত ফসকে রান হয়, সবচেয়ে দামি ডেভিড ওয়ার্নারের ক্যাচ পড়ে শুরুতেই। সাব্বির রহমানের হাতে ১০ রানে জীবন পেয়ে তিনি পরে থামেন ১৬৬ রান করে।

অসিদের হয়ে ওয়ার্নার ছাড়া উসমান খাওয়াজা করেন ৮৯ রান। অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চের ব্যাট থেকে এসেছে ৫৩। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ঝড় তুলে ১০ বলেই করেন ৩২ রান। ৫৮ রানে ৩ উইকেট নেন সৌম্য সরকার। নিয়মিত বোলারদের করুণ দশা বোঝা যাচ্ছে তার বোলিং ফিগার থেকেই। মোস্তাফিজুর রহমান শেষ দিকে পান ১ উইকেট। বাকিটি রানআউট।

ফিঞ্চকে নিয়ে ১২১ রানের উদ্বোধনী জুটির পর দ্বিতীয় উইকেটে খাওয়াজার সঙ্গে ১৯২ রানের জুটি গড়েই ম্যাচ বাংলাদেশের নাগালের বাইরে নিয়ে যান ওয়ার্নার। প্রথমে ধীরেসুস্থে খেলে অবস্থা বুঝে হাত খুলে এগিয়ে খেলার নিয়ন্ত্রণ নেন তিনি। ১৪৭ বলের ইনিংসে ১৪ চার আর ৫ ছক্কায় করেন ১৬৬।

৩০ ওভার শেষে অসিদের রান ছিল ১৬৮। ৪০ ওভারে গিয়ে সেটা হয় ২৫০। নখদন্তহীন বোলিং আরও হতশ্রী দশা পায় শেষ ১০ ওভারে। অসিরা তোলে আরও ১৩১ রান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া: ৫০ ওভারে  ৩৮১/৫ (ফিঞ্চ ৫৩, ওয়ার্নার ১৬২, খাওয়াজা ৮৯ , ম্যাক্সওয়েল ৩২, স্টয়নিস ১৭*, স্মিথ ১, ক্যারি ১১*; মাশরাফি ০/৫৬, মোস্তাফিজ ১/৬৯, সাকিব ০/৫০, রুবেল ০/৮৩, মিরাজ ০/৫৯, সৌম্য ৩/৫৮ )

বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ৩৩৩/৮ (তামিম ৬২, সৌম্য ১০, সাকিব ৪১, মুশফিক ১০২*, লিটন ২০, মাহমুদউল্লাহ ৬৯, সাব্বির ০, মিরাজ ৬, মাশরাফি ৬; স্টার্ক ২/৫৫, কামিন্স ০/৬৫, ম্যাক্সওয়েল ০/২৫, কোল্টার-নাইল ২/৫৮, স্টয়নিস ২/৫৪, জ্যাম্পা ১/৬৮)।

Comments

The Daily Star  | English

Early US intel assessment suggests strikes on Iran did not destroy nuclear sites: CNN

Israeli Prime Minister Benjamin Netanyahu said Israel had agreed to Trump's ceasefire proposal

2d ago