সাইফুদ্দিন-মোসাদ্দেকের চোট আসলেই কতটা না খেলার মতো ছিল?
অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের আগের দিন হুট করে জানা যায় পীঠের চোটে পড়েছেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। কাঁধের ব্যথায় কাতরাচ্ছেন মোসাদ্দেক হোসেন। ম্যাচের দিন অনুমিতভাবেই এই দুজনকে বাইরে রেখে একাদশ সাজিয়ে নামে বাংলাদেশ। কিন্তু আসলেই কতটা না খেলার মতো ছিল এই দুজনের চোট?
বাংলাদেশের দলীয় সূত্র জানা গেছে, মোসাদ্দেকের বাম কাঁধে সমস্যা থাকলেও সাইফুদ্দিনের চোটের ধরনটি বেশ রহস্যে ঘেরা। টনটনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নাকি তিনি পিঠে চোট পেয়েছিলেন। কিন্তু ম্যাচের মাঝখানে তাকে কোন শুশ্রূষা নিতে দেখা যায়নি। টনটন থেকে দল নটিংহ্যামে আসার পরই আবিষ্কার হয় পীঠের চোটে ভুগছেন এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার। ফলাফল, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মহাগুরুত্বপূর্ন ম্যাচে টুর্নামেন্টে দলের হয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেট পাওয়া (৪ ম্যাচে ৯ উইকেট) এই পেসারকে পাওয়া যাচ্ছে না।
গেল ক’মাসে ডেথ বোলিংয়ে দারুণ করা সাইফুদ্দিনের বদলে রুবেল হোসেনকে নিয়ে নামে বাংলাদেশ। এবার বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচে নেমে রুবেল ৯ ওভারেই দেন ৮৩ রান। শেষ ১০ ওভারে ১৩১ রান নিয়ে নেয় অসিরা। ওই সময়টায় সাইফুদ্দিনে অভাব টের পেয়েছেন অধিনায়ক। ম্যাচ শেষে জানান, ‘আসলে ম্যাচের ভেতরে (টন্টনে ম্যাচের সময়)ফিজিও তাকে দেখার সুযোগ পায়নি। আশা করছি তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে যাবে। অবশ্যই সে উইকেট পাচ্ছিল। কঠিন সময়ে এসে ব্রেক থ্রো দিয়েছে। যেকোনো ইনফর্ম খেলোয়াড়কে মিস ত করতেই হয়, তাকে মিস করেছি।’
যে চোটে ম্যাচের ভেতরে তাৎক্ষণিক শুশ্রূষা নিতে হয়নি, সেই চোটেই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ কেন খেলতে চাইবেন না সাইফুদ্দিন। তা থেকে গেছে অস্পষ্ট। প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া বলেই কি সাহসটা করতে পারেননি তিনি? কারণ যাইহোক, চোটের ব্যাপারে ধোঁয়াশা থেকে যাওয়ায় টিম ম্যানেজমেন্ট তার নেতিবাচক অ্যাপ্রোচে সন্তুষ্ট নয়।
এদিন সাইফুদ্দিনের চেয়েও অবশ্য মোসাদ্দেক হোসেনকে বেশি মিস করেছে বাংলাদেশ। বাঁহাতি ডেভিড ওয়ার্নার জীবন পেয়ে জমে যাওয়ায় বাঁহাতি স্পিন নিয়ে কার্যকর হতে পারেননি সাকিব আল হাসান। আরেক ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চ আউট হওয়ার পর ওয়ানডাউনে স্টিভেন স্মিথের জায়গায় অসিরা পাঠায় বাঁহাতি উসমান খাওয়াজাকে। দুই বাঁহাতি থাকায় কোনভাবেই সুবিধা করতে পারছিলেন না সাকিব।
ম্যাচের বিচারে আঁটসাঁট বল করেছেন অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। আরেকজন অফ স্পিনারের অভাব তখন টের পাওয়া গেছে তীব্র। আগেই চোটে থাকা মাহমুদউল্লাহ বল করতে পারবেন না জানাই ছিল। মোসাদ্দেক চোটে পড়ায় তাই বিপাকে পড়ে দল। তবে মোসাদ্দেককে যে কারণে দলে রাখা সেই অফ স্পিন তিনি এসব চোট নিয়ে চালিতে নিতে পারতেন কিনা, তা নিয়ে আছে আলোচনা। তার ব্যথা বাম কাঁধে। বল করেন ডানহাতে। কিন্তু চোট যেহেতু তার, নিজের পরিস্থিতি তিনিই ভালো বুঝবেন সবচেয়ে বেশি।
কারণ যাইহোক। ম্যাচের পরিস্থিতির কারণে অধিনায়ক তাকে যে ভীষণ মিস করেছেন তা লুকাননি, , ‘অন্য ম্যাচে মোসাদ্দেক করে (ওই সময় বোলিং)। ওদের বাঁহাতি দুজন ব্যাট করছিল। সাধারণত স্মিথ নামে তিনে। সাকিবকে মাথায় নিয়ে ওরা খাওয়াজাকে (বাঁহাতি) নামিয়েছে। এবং ওয়ার্নার ওকে চার্জ করছিল, এখানে একটু কঠিন হয়েছে। সৌম্য কাভার করেছে অনেকটু। কিন্তু মোসাদ্দেক থাকলে দুই পাশে দুটো অফ স্পিনার চালাতে পারতাম।’
Comments