ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সেমি-ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া

ছবি: রয়টার্স

২৭ বছর ধরে বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় পায়নি ইংল্যান্ড। তাদের অপেক্ষা বাড়ল কমপক্ষে আরও চার বছর। যদি না নক-আউট পর্বে দুই দলের দেখা না হয়। এদিন অসিদের বিপক্ষে ৬৪ রানের বড়  ব্যবধানেই হেরেছে ইংল্যান্ড। তাতে সেমি-ফাইনালের সমীকরণটা কিছুটা হলেও কঠিন হয়ে গেল। অন্যদিকে এ জয়ে সেমি-ফাইনাল নিশ্চিত হলো অস্ট্রেলিয়ার।

সাত ম্যাচে শেষে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ১২ পয়েন্ট। সমান সংখ্যক ম্যাচে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ৮ পয়েন্ট। সেমি-ফাইনালে যেতে শেষ দুই ম্যাচেই জিততে হবে তাদের। ভারত ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ রয়েছে তাদের। তাদের হারে কিছুটা হলেও সুবিধা হয়েছে বাংলাদেশের। নিজেদের শেষ দুই ম্যাচ জিতলে এবং ইংল্যান্ড শেষ দুই ম্যাচের একটিও হারলে সেমি-ফাইনালে নাম লেখাতে পাড়বে টাইগাররা। একই সঙ্গে টিকে রইল পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, উইন্ডিজের সেমি-ফাইনাল স্বপ্নও।

লক্ষ্য তাড়ায় ভালো হয়নি ইংলিশদের সূচনা। দলীয় ৫৩ রানেই টপ অর্ডারের চার উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে দলটি। দুই ওপেনারের সঙ্গে দারুণ ছন্দে থাকা জো রুট ও অধিনায়ক ইয়ন মরগানকে হারায় দলটি। তবে পঞ্চম উইকেটে জস বাটলারকে নিয়ে দলের হাল ধরেন আগের ম্যাচে দারুণ খেলা বেন স্টোকস। গড়েন ৭১ রানের জুটি। বাটলারের বিদায়ে এ জুটি ভাঙলে ক্রিস ওকসকে নিয়ে আবার দলের হাল ধরেন স্টোকস। ৫৩ রানের জুটি গড়ে ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেছিলেন তিনি। তবে দলীয় ১৭৭ রানে স্টোকস বিদায় নিলে কার্যত হার দেখতে থাকে দলটি। ৩২ বল বাকী থাকতেই ২২১ রানে গুটিয়ে যায় দলটি।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৯ রানের ইনিংস খেলেন স্টোকস। তিনি ছাড়া আর কোন ব্যাটসম্যানই দায়িত্ব নিতে পারেননি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানটি ওপেনার জনি বেয়ারস্টোর। ২৭ রান করেন তিনি। ইংল্যান্ডের পক্ষে ৪৪ রানের খরচায় ৫টি উইকেট নেন জ্যাসন বেহরেনডর্ফ। মিচেল স্টার্ক ৪টি উইকেট পান ৪৩ রানের বিনিময়ে।  

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ১২৩ রানের জুটি গড়ে বিশ্বকাপের নতুন রেকর্ড গড়েন দুই অসি ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। টানা পাঁচ ম্যাচে করলেন কমপক্ষে অর্ধশত রানের জুটি। যা বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম। এর মধ্যে আবার তিনটি ম্যাচে করেছেন শতরানের জুটি।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ৯৬ রানের জুটি গড়ার পর উইন্ডিজ ম্যাচে কিছু না করতে পারলেও পরের পাঁচ ম্যাচে আবার কমপক্ষে পঞ্চাশ রানের জুটি গড়েন ওয়ার্নার ও ফিঞ্চ। ভারতের বিপক্ষে ৬১, পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৪৬, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৮০ বাংলাদেশের বিপক্ষে ১২১ রানের জুটি গড়ার পর এদিন গড়েন ১২৩ রানের জুটি।

ওপেনিং জুটি ভাঙার পর দ্বিতীয় উইকেটে উসমান খাওজার সঙ্গে পঞ্চাশ রানের জুটি গড়েন ফিঞ্চ। কিন্তু এ জুটি ভাঙতেই আর কোন ব্যাটসম্যানই দায়িত্ব নিতে পারায় বড় হয়নি অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ১০০ রানের ইনিংস খেলেন ফিঞ্চ। ১১৬ বলে ১১টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে এ রান করেন তিনি। চলতি বিশ্বকাপে এটা তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি, ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ১৫তম। এবারের বিশ্বকাপে পঞ্চমবারের মতো নিজের পঞ্চাশোর্ধ্ব রান করেন, যার মধ্যে শেষ চারটি টানা। ওয়ার্নারও করেন আসরের পঞ্চম হাফসেঞ্চুরি। ৬১ বলে ৫৩ রান করেন তিনি।

এছাড়াও আসরে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে পাঁচশ রানের মাইলফলক স্পর্শ করে বাংলাদেশের সাকিব আল হাসানকে পেছনে ফেলে সর্বোচ্চ রানের তালিকার শীর্ষে উঠেছেন ওয়ার্নার। খুব বেশি পিছিয়ে নেই ফিঞ্চও। তিনিও ছাড়িয়েছেন সাকিবকে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এ ব্যাটসম্যানের সংগ্রহ ৪৯৬ রান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া: ৫০ ওভারে ২৮৫/৭ (ফিঞ্চ ৫৩, খাওজা ২৩, স্মিথ ৩৮, ম্যাক্সওয়েল ১২, স্টয়নিস ৮, ক্যারি ৩৮*, কামিন্স ১, স্টার্ক ৪; ওকস ২/৪৬, আর্চার ১/৫৬, উড ১/৫৯, স্টোকস ১/২৯, মইন ১/৪২, রশিদ ০/৪৯)।

ইংল্যান্ড: ৪৪.৪ ওভারে ২২১ (ভিন্স ০, বেয়ারস্টো ২৭, রুট ৮, মরগান ৪, স্টোকস ৮৯, বাটলার ২৫, ওকস ২৬, মইন ৬, রশিদ ২৫, আর্চার ১, উড ১*; বেহরেনডর্ফ ৫/৪৪, স্টার্ক ৪/৪৩, কামিন্স ০/৪১, লাওন ০/৪৩, স্টয়নিস ১/২৯, ম্যাক্সওয়েল ০/১৫)।

ফলাফল: ইংল্যান্ড ৬৪ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: অ্যারন ফিঞ্চ (অস্ট্রেলিয়া)।

Comments

The Daily Star  | English
bad loans rise in Bangladesh 2025

Bad loans hit record Tk 420,335 crore

It rose 131% year-on-year as of March of 2025

1h ago