নুসরাত হত্যাকাণ্ডের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু
ফেনীর সোনাগাজীর আলোচিত মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান ওরফে রাফি হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ আজ (২৭ জুন) সকালে শুরু হয়েছে।
এ প্রতিবেদন লেখার সময় আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছিলো।
আজ মামলার বাদি নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ও দুই সাক্ষী- নুসরাতের সহপাঠী নিশাত সুলতানা ও নাসরিন সুলতানা আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার কথা রয়েছে। এদিকে বাদি ও সাক্ষীদেরকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে স্থানীয়ভাবে অভিযোগ উঠেছে।
তবে মামলার বাদি ও নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান এবং দুই সাক্ষী- নুসরাতের সহপাঠী নিশাত সুলতানা ও নাসরিন সুলতানাকে বা তাদের পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে হুমকি দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তারা এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের সাথে কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি।
গত ২০ জুন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ এ মামলার অভিযোগপত্রের উপর শুনানি শেষে ১৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন এবং সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেন।
অভিযোগপত্রভূক্ত ১৬ আসামি হলেন, মাদ্রাসার সদ্য বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, উপজেলার আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. রুহুল আমিন, মাদ্রাসার প্রভাষক আফছার উদ্দিন, পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, হাফেজ আবদুল কাদের, ছাত্র নুর উদ্দিন, ইফতেখার উদ্দিন রানা, সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের, মো. শামীম, সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, আবদুর রহিম শরীফ, মহি উদ্দিন শাকিল, ইমরান হোসেন মামুন, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন্নাহার মনি এবং শাহাদাত হোসেন শামীম।
বাদি পক্ষের আইনজীবী এম শাহজাহান জানান, আজ সকালে সাক্ষ্য গ্রহণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ মে ফেনীর আমলি আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. জাকির হোসাইনের আদালতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) এর পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. শাহ আলম ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে ৮৬৯ পৃষ্ঠা সম্বলিত নথি ও অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর গত ৩০ মে মামলার ধার্য তারিখে আসামিদেরকে আদালতে হাজির করা হলে আদালত শুনানি না করে ওই মামলাটি ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে পাঠানোর আদেশ দেন। গত ১০ জুন মামলাটি আমলে নিয়ে শুনানির শুরু করা হয়।
উল্লেখ্য, সোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান ওরফে রাফিকে গত ৬ এপ্রিল গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। পরে ১০ এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে মারা যান।
এ ঘটনায় নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদি হয়ে আটজনকে আসামি করে সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। পরে মামলাটি পিবিআইতে স্থানান্তর করা হয়। পুলিশ ও পিবিআই এ মামলায় ২১ জনকে গ্রেপ্তার করে। এদের মধ্যে ১২ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
এর আগে গত ২৭ মার্চ নিজ কক্ষে ডেকে নুসরাতকে শ্লীলতাহানির করে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা। এ ঘটনায় নুসরাতের মা বাদি হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়।
Comments