বাংলাদেশের সেমিফাইনাল খেলার কঠিন সমীকরণ

এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে কেবল বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে ভারত ও নিউজিল্যান্ড। স্বাগতিক ইংল্যান্ডের সম্ভাবনাও উজ্জ্বল। আশা টিকে আছে পাকিস্তান আর বাংলাদেশেরও।
bangladesh cricket team
ছবি: আইসিসি

এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে কেবল বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে ভারত ও নিউজিল্যান্ড। স্বাগতিক ইংল্যান্ডের সম্ভাবনাও উজ্জ্বল। আশা টিকে আছে পাকিস্তান আর বাংলাদেশেরও।

বর্তমান অবস্থা:

প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের সেমিতে খেলার স্বপ্ন নিয়ে এবার ইংল্যান্ডের মাটিতে পা রেখেছে বাংলাদেশ। সাত ম্যাচে টাইগারদের অর্জন ৭ পয়েন্ট। মাশরাফি বিন মর্তুজার দল জিতেছে তিনটিতে। হেরেছে সমানসংখ্যক ম্যাচে। বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়েছে বাকিটি।

বিশ্বকাপের পয়েন্ট তালিকা বলছে, বাংলাদেশের সেমিফাইনালে জায়গা করে নিতে হলে বাদ পড়তে হবে ইংল্যান্ড কিংবা নিউজিল্যান্ডের যে কোনো একটি দলকে। সমান আট ম্যাচ খেলে কিউইদের অর্জন ১১ পয়েন্ট, ইংলিশদের ১০।

এই তালিকায় ভারতও আছে। তবে তাদের হাতে রয়েছে দুটি ম্যাচ। শেষটি আবার দুর্বল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। তাছাড়া, ভারত রান রেটেও অনেক এগিয়ে (+০.৮৫৪)। তাই তাদের শেষ চারে খেলাটা একরকম নিশ্চিতই।

বিশ্বকাপের পয়েন্ট তালিকা:

দল

ম্যাচ

জয়

হার

পরিত্যক্ত

পয়েন্ট

রান রেট

১. অস্ট্রেলিয়া

১৪

+১.০০০

২. ভারত

১১

+০.৮৫৪

৩. নিউজিল্যান্ড

১১

+.০.৫৭২

৪. ইংল্যান্ড

১০

+১.০০০

৫. পাকিস্তান

-০.৭৯২

৬. বাংলাদেশ

-০.১৩৩

৭. শ্রীলঙ্কা

-১.১৮৬

৮. দক্ষিণ আফ্রিকা

-০.০৮০

৯. ওয়েস্ট ইন্ডিজ

-০.৩২০

১০. আফগানিস্তান

-১.৪১৮

 

বাংলাদেশের সেমিফাইনালের সমীকরণ:

১. বাংলাদেশের হাতে থাকা দুটি ম্যাচ যথাক্রমে ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে। আগামীকাল মঙ্গলবার (২ জুলাই) বার্মিংহামের এজবাস্টনে বিরাট কোহলিদের মোকাবেলা করার পর ৫ জুলাই লর্ডসে সাকিব-মুশফিকরা খেলবেন সরফরাজ আহমেদের দলের বিপক্ষে। দুটি ম্যাচেই জিততে হবে বাংলাদেশকে। এর কোনো বিকল্প নেই।

তাতেও অবশ্য সেমিফাইনালের টিকিট প্রাপ্তি নিশ্চিত নয়। তাকিয়ে থাকতে হবে অন্যান্য ম্যাচের ফলগুলোর দিকে। তবে নিজেদের কাজটা আগে সেরে নিতে হবে টাইগারদের অর্থাৎ দুটি ম্যাচেই তুলে নিতে হবে জয়। যে কোনো একটিতে হারলেই বেজে যাবে বিদায় ঘণ্টা।

দুই ম্যাচে জিতলে বাংলাদেশের পয়েন্ট দাঁড়াবে ১১।

২. বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের পরদিন লিগ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে মাঠে নামবে ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড। এই ম্যাচের ফল খুব গুরুত্বপূর্ণ মাশরাফিদের জন্য। স্বাগতিক ইংলিশরা যদি কিউইদের কাছে হেরে যায় তবে নিজেদের ম্যাচ দুটিতে জিতলেই বাংলাদেশ পাবে সেমিফাইনালের টিকিট।

তখন নিউজিল্যান্ডের অর্জন ঠেকবে ১৩ পয়েন্টে। পাকিস্তানের পয়েন্ট থাকবে ৯, ইংল্যান্ডের ১০ আর বাংলাদেশের ১১। পয়েন্টে এগিয়ে থাকায় সেমিতে যাবে বাংলাদেশ।

৩. উল্টোটা যদি ঘটে অর্থাৎ ইংল্যান্ড যদি জিতে যায় তবে ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে জয় পেতে হবে বাংলাদেশকে। কারণ, সেমিফাইনালে জায়গা করে নিতে রান রেট বাড়িয়ে নেওয়া ছাড়া তখন আর কোনো উপায় থাকবে না।

রান রেটে কিউইরা বেশ এগিয়ে বাংলাদেশের চেয়ে। তাদের রান রেট +০.৫৭২। বিপরীতে বাংলাদেশের -০.১৩৩। অর্থাৎ, বিস্তর ফারাক। এই ব্যবধান পুষিয়ে নিতে উপমহাদেশের দুই দলকে বড় রানের ব্যবধানে হারাতে হবে বাংলাদেশকে অথবা তাদের ছুঁড়ে দেওয়া লক্ষ্য অনেক বল হাতে রেখে পেরিয়ে যেতে হবে।

এমনটা ঘটলে ইংল্যান্ডের পয়েন্ট হবে ১২, নিউজিল্যান্ড ও বাংলাদেশের সমান ১১। রান রেটে এগিয়ে সেমিতে উঠবে বাংলাদেশ।

২০১৯ বিশ্বকাপ ও বাংলাদেশ:

ক্রিকেটীয় বিশ্লেষণ বলছে, এই সমীকরণের মারপ্যাঁচ মিলিয়ে ২০১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠাটা বাংলাদেশের জন্য অসম্ভব নয়, তবে খুব খুব কঠিন। দুর্দান্ত একটি বিশ্বকাপ কাটিয়ে বিশ্ববাসীর নজর কেড়ে নেওয়া মাশরাফি বাহিনী শেষ পর্যন্ত গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিতেও পারে।

তখন ঘুরে-ফিরে উঠে আসতে পারে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পণ্ড হওয়া ম্যাচটির কথা কিংবা অল্পের জন্য হাত ফসকে বেরিয়ে যাওয়া নিউজিল্যান্ড ম্যাচটির কথা। সেমিফাইনাল কিংবা ফাইনালে যেতে না পারলে ভক্ত-সমর্থকদের আবেগের বাড়াবাড়ি থাকবে-অপ্রাপ্তির আক্ষেপ থাকবে ঠিকই, কিন্তু অর্জনের বিশাল খাতার লেখাগুলো তো আর মুছে যাবে না।

ব্যাট-বল হাতে সাকিব আল হাসানের একের পর এক অনন্য কীর্তি, মুশফিকুর রহিমের ধারাবাহিক রান পাওয়া, মোস্তাফিজুর রহমান-মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনদের উইকেটের শিকারে দুই অঙ্কে পৌঁছানো, নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসের সর্বোচ্চ স্কোর, সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতা- এত সাফল্য বিশ্বকাপের একক কোনো আসরে আগে কখনওই তো পায়নি বাংলাদেশ।

Comments

The Daily Star  | English

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago