নেতিবাচক খবর ভুল প্রমাণ করতেই হিরো হতে চেয়েছিলেন সাইফুদ্দিন
শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে মোস্তাফিজুর রহমান আউট হওয়ার পর অনেকক্ষণ ঠায় দাঁড়িয়েছিলেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। যেন পা নড়ছে না তার। বাংলাদেশ হেরে গেছে ২৮ রান। কিন্তু সাইফুদ্দিন অপরাজিত ৩৮ বলে ৫১ করে। তার বেশ আগেই স্বীকৃত ব্যাটসম্যানরা পাততাড়ি গুটিয়েছেন। তবু শেষ পর্যন্ত সাইফুদ্দিন নাকি একাই জিতিয়ে দেওয়ার বিশ্বাস রেখেছিলেন। চেয়েছিলেন হিরো হতে। আর তাকে নাকি তীব্র জেদি করে দিয়েছিল একটি নেতিবাচক খবর।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের আগে একটি জাতীয় দৈনিকে সাইফুদ্দিনের চোট নিয়ে বের হয় নেতিবাচক খবর। চোটের অজুহাত তিনি খেলছেন না বলে ইঙ্গিত ছিল তাতে।
ভারতের বিপক্ষে সাকিব আল হাসান আউট হওয়ার সময় সাইফুদ্দিন যখন ব্যাট করতে নামেন দলের জিততে দরকার ৯৭ বলে ১৩৬ রান। হাতে আর কেবল ৪ উইকেট। পেছনে পড়ে নেই আর কোন স্বকৃত ব্যাটসম্যান।
অমন পরিস্থিতিতে কেই বা বাজি ধরবে বাংলাদেশের পক্ষে। নিশ্চিত হারই দেখছিল সবাই। কিন্তু সাইফুদ্দিন নিজে নাকি ভাবছিলেন ভিন্ন। তাকে তাড়া করছিল একটি তীব্র জেদ। সেই জেদ থেকেই নাকি এমন অবস্থা থেকেও দলকে জেতাতে মরিয়া হয়ে নামেন তিনি। ভারতের কাছে ২৮ রানে হারার পর মিক্সড জোনে নিজের এই অনুভূতি জানান অলরাউন্ডার, ‘কিছুদিন আমাকে নিয়ে একটা খবর হয়েছিল যে আমি বড় দলের বিপক্ষে ভয়ে ম্যাচ থেকে ইনজুরির অজুহাত দেখিয়ে খেলিনি। এই জিনিসটা আমার মধ্যে জেদ হিসেবে কাজ করছিল যে আমি বড় দলের বিপক্ষে ম্যাচ জিতিয়ে হিরো হবো। ভারতের সঙ্গে মাঠে নামার পর প্রথম বল থেকে শেষ বল পর্যন্ত আমার তীব্র ইচ্ছা ছিল যেন জেতাতে পারি। যাতে আমার নামে এসব কথা ভুল প্রমাণ করতে পারি।’
চার মেরে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি করার পর বুকে হাত দিয়ে করছিলেন ভিন্ন রকম উদযাপন। সেই উদযাপনেও যে জবাব দিতে চেয়েছিলেন স্পষ্ট করেছেন তাও, ‘আমাদের খেলোয়াড়দের আসলে কিছু বলার নাই। আমাদের জবাব দিতে হয় মাঠে। আমি চেষ্টা করেছি মাঠেই জবাব দেওয়ার।’
তবে সঙ্গীর অভাবে শেষ পর্যন্ত পেরে উঠেননি সাইফুদ্দিন। দুই ওভার আগেই থামতে হয়েছে তাকে। অসম্ভব বড় কিছু করতে পারছিলেন না বলে এতটা খারাপ লাগছিল তার যে নড়তেও পারছিলেন না, ‘খারাপ লাগার মতো একটা দিন ছিল, কারণ আমরা টুর্নামেন্ট থেকে বের হয়ে গেছি। এরকম একটা সুযোগের জন্য বসে ছিলাম। ম্যাচ জেতানোর জন্য, হিরো হওয়ার জন্য। আজ আমার ব্যাটে বলে হচ্ছিলও। চাইছিলাম দলকে জিতিয়ে আসতে।’
Comments