নুসরাতকে শ্লীলতাহানির মামলায় অধ্যক্ষ সিরাজের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা

sonagazi principal
সিরাজ উদ দৌলা। স্টার ফাইল ছবি

ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে শ্লীলতাহানির ঘটনায় তার মায়ের করা মামলায় সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে গতকাল বিকেলে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মোহাম্মদ শাহ আলম ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. জাকির হোসাইনের আদালতে এ অভিযোগপত্র জমা দেন।

আজ (৩ জুলাই) মামলার একমাত্র আসামি অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার উপস্থিতিতে অভিযোগপত্রের ওপর শুনানি ও মামলাটি বিচারিক হাকিম আদালত থেকে নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে প্রেরণের আদেশ দেওয়া হয়।

মামলার এজাহার ও সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে জানা যায়, গত ২৭ মার্চ সকাল পৌনে ১১টায় মাদ্রাসার পিয়ন নুরুল আমিনকে দিয়ে ওই মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে অধ্যক্ষের অফিস কক্ষে ডেকে পাঠানো হয়। রাফির সঙ্গে তার দুই বান্ধবী নাসরিন সুলতানা ও নিশাত সুলতানাও অধ্যক্ষের কক্ষের সামনে যায়। অধ্যক্ষ সিরাজ তখন নুসরাতের দুই বান্ধবী নাসরিন সুলতানা ও নিশাত সুলতানাকে ভেতরে ঢুকতে দেননি। নুসরাত একাই অধ্যক্ষের কক্ষে ঢোকে। সেখানে নুসরাতের গায়ে হাত দেওয়াসহ তার শ্লীলতাহানি করেন অধ্যক্ষ সিরাজ। এক পর্যায়ে নুসরাত অধ্যক্ষের কক্ষ থেকে বের হয়ে কান্না করতে করতে শ্রেণি কক্ষে যায় এবং সেখান থেকে বাড়ি চলে যায়।

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ কর্তৃক মেয়ের শ্লীলতাহানির কথা শুনে নুসরাতের মা আরও কয়েকজনসহ মাদ্রাসায় যান এবং অধ্যক্ষকে গালমন্দ করেন। অধ্যক্ষও নুসরাতের মাকে গালমন্দ করেন। এসময় মাদ্রাসার সহসভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিন ও সোনাগাজী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ইকবালও অধ্যক্ষের কক্ষে হাজির হন। কিছুক্ষণ পর নুসরাতকে আবার মাদ্রাসায় ঢেকে পাঠানো হয়। দ্বিতীয় দফা নুসরাত অধ্যক্ষের কক্ষে ঢুকেই সংজ্ঞা হারিয়ে (অচেতন) পড়ে যায়। অন্যরা তার মুখে পানি দেয়। উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে পুলিশ মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে থানায় নিয়ে যায়। থানায় অধ্যক্ষ সিরাজকে একমাত্র আসামি করে নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে মেয়ের শ্লীলতাহানির ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন।

মামলা দায়েরের পর নুসরাত ফেনীর বিচারিক হাকিম আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে ২৭ মার্চে অধ্যক্ষের কক্ষের ঘটনা বর্ণনা করে।

সূত্র জানায়, এ মামলায় দুইজন ম্যাজিস্ট্রেটসহ ২৯ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। তাছাড়া এ মামলার সঙ্গে নুসরাতকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা মামলার যোগসূত্র থাকার কারণে এ মামলার সাক্ষী নুসরাতের দুই বান্ধবী নাসরিন সুলতানা, নিশাত সুলতানা, মাদ্রাসার পিয়ন নুরুল আমিন ও নাইটগার্ড মো. মোস্তফার ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি এবং হত্যা মামলার আসামি অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, শাহাদাত হোসেন শামীম ও নুর উদ্দিনের ১৬৪ ধারায় আদালতে দেওয়া জবানবন্দি, মৃত্যুর আগে নুসরাতের দেওয়া জবানবন্দিসহ (ডায়িং ডিক্লারেশন) কিছু তথ্য ব্যবহার করা হবে।

মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী এম শাহজাহান সাজু গতকাল অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh women defend SAFF title with 2-1 win against Nepal

Bangladesh retained the title of SAFF Women's Championship with a 2-1 win against Nepal in an entertaining final at the Dasharath Stadium in Kathmandu today. 

11m ago