২ মাসে বজ্রপাতে নিহত ১২৬

Lightning
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

চলতি বছরের মে ও জুন মাসে বজ্রপাতে সারাদেশে ১২৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। সেই সাথে আহত হয়েছেন ৫৩ জন।

বেসরকারি সংস্থা ‘সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরাম’ ১০টি জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিক, কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও টেলিভিশন স্ক্রল থেকে প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

আজ (৬ জুলাই) সংস্থাটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দুই মাসে বজ্রপাতে নিহতদের মধ্যে ২১ জন নারী, ৭ জন শিশু এবং ৯৮ জন পুরুষ।

ধান কাটার সময় বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি নিহতের ঘটনা ঘটেছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মারা গেছেন বৃষ্টি ও বজ্রপাতের সময় মাছ ধরতে গিয়ে। তৃতীয় ও চতুর্থ অবস্থানে আছে মাঠে গরু আনতে গিয়ে এবং টিন ও খড়ের ঘরে অবস্থান ও ঘুমানোর সময় বজ্রপাতের শিকার হওয়া। সেই সাথে বজ্রপাতের সময় অজ্ঞতার কারণে লম্বা গাছের নিচে আশ্রয় নেয়ার ফলে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

সবচেয়ে বেশি হতাহত হয়েছেন কিশোরগঞ্জ জেলায়। সেখানে দুই মাসে নিহত হয়েছেন ১৬ জন। এছাড়া, হবিগঞ্জে ৩, রাজশাহীতে ১০, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৯, পাবনায় ৬, দিনাজপুরে ৭, নীলফামারীতে ৪, জামালপুরে ৪, শেরপুরে ৪, নওগাঁয় ৬, সিরাজগঞ্জে ৫, নারায়ণগঞ্জে ৫, মৌলভীবাজারে ৩, খুলনায় ৪, সাতক্ষীরায় ১১ এবং টাঙ্গাইলে ৪ জন মারা গেছেন।

সেভ দ্য সোসাইটি জানায়, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আবহাওয়ার ধরনে পরিবর্তন, লম্বা গাছের সংখ্যা কমে যাওয়া, আকাশে কালো মেঘের পরিমাণ ও মেঘে মেঘে ঘর্ষণের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া, যত্রতত্র মোবাইল ফোনের টাওয়ার বসানো এবং বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে বজ্রপাত।

তাপমাত্রা যতো বাড়বে বজ্রপাতও ততো বাড়বে। তাপমাত্রা গড়ে এক ডিগ্রি বেড়ে গেলে বজ্রপাত ১০ শতাংশ বা এরচেয়ে বেশি বেড়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বজ্রপাতের সময় করণীয়

যে স্থান বা বস্তু যতো উঁচু সে স্থান মেঘের ততো সন্নিকটে থাকায় সেখানে বজ্রপাতের সম্ভাবনা ততো বেশি হয়। তাই বাড়ির ছাদ কিংবা উঁচুস্থানে অবস্থান করলে দ্রুত সেখান থেকে নেমে নিরাপদ স্থানে যেতে হবে।

ঘন কালো মেঘ (ঝড়ো মেঘ) দেখলেই সাবধান হতে হবে এবং বৃষ্টি শুরুর আগে নিরাপদস্থানে আশ্রয় নিতে হবে। পাকাবাড়িতে আশ্রয় নেওয়া বেশি নিরাপদ। তবে পাকা বাড়ি সুউচ্চ হলে সে ক্ষেত্রে বজ্র নিরোধক ব্যবস্থা থাকতে হবে। বজ্রপাতের সময় জানালার কাছে না থাকাই ভালো।

পায়ে রাবারের স্যান্ডেল থাকা এবং পানি ও যেকোনো ধাতব বস্তু যেমন সিঁড়ি বা বারান্দার রেলিং, পানির কল ইত্যাদির স্পর্শ থেকে বিরত থাকতে হবে। বিদ্যুৎ পরিবাহী যে কোনো বস্তুর স্পর্শ থেকে দূরে থাকতে হবে। পুকুর বা জলাশয়ে থাকা নিরাপদ নয়।

বাড়ির বৈদ্যুতিক জিনিসপত্রের বিদ্যুৎ ও ডিসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখা ভালো। এগুলো বন্ধ থাকলেও স্পর্শ থেকে বিরত থাকতে হবে।

মাঠের মধ্যে ফাঁকা জায়গায় থাকলে বজ্রপাতের সময় কানে আঙ্গুল দিয়ে চোখ বন্ধ করে নিচু হয়ে বসে থাকতে হবে। তবে মাটিতে শোয়া যাবে না, কেননা মাটিতে শুয়ে পড়লে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

বজ্রপাতের পরিস্থিতি তৈরি হলে গাড়ির মধ্যে থাকা নিরাপদ। তবে গাড়ির ধাতব কোনো অংশের সংস্পর্শ থেকে বিরত থাকতে হবে।

সেভ দ্য সোসাইটি আরও জানায়, বজ্রপাতের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে হলে তাল গাছ জাতীয় সুউচ্চ প্রজাতির গাছ প্রচুর পরিমাণে মাঠের মধ্যে লাগাতে হবে।

সংস্থাটির মতে, বজ্রপাতে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা বিদ্যুৎস্পৃষ্টে আহত ব্যক্তিদের মতোই। শরীর থেকে দ্রুত বৈদ্যুতিক চার্জ অপসারণে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। শরীর মালিশ করতে হবে। আহত ব্যক্তির অস্বাভাবিক আচরণে বিচলিত না হয়ে তাকে দ্রুত চিকিৎসা কেন্দ্রে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh women defend SAFF title with 2-1 win against Nepal

Bangladesh retained the title of SAFF Women's Championship with a 2-1 win against Nepal in an entertaining final at the Dasharath Stadium in Kathmandu today. 

11m ago