রাখাইনকে বাংলাদেশের সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার কথা বলা অত্যন্ত গর্হিত কাজ: প্রধানমন্ত্রী

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ জুন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া সংক্রান্ত বাজেট আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসম্যান ও কংগ্রেসের এশিয়া-প্যাসিফিক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান ব্র্যাড শেরম্যান এক প্রস্তাবে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যকে বাংলাদেশের সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেন।
PM
৮ জুলাই ২০১৯, রাজধানীর গণভবনে চীন সফর নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ জুন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া সংক্রান্ত বাজেট আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসম্যান ও কংগ্রেসের এশিয়া-প্যাসিফিক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান ব্র্যাড শেরম্যান এক প্রস্তাবে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যকে বাংলাদেশের সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেন।

এ বিষয়ে আজ (৮ জুলাই) রাজধানীর গণভবনে চীন সফর নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসম্যান মিয়ানমারের রাখাইন স্টেটকে বাংলাদেশের সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু, আমার কথা হলো- বাংলাদেশ কেনো? আমাদের দেশের যে সীমানা রয়েছে- ৫৬ হাজার বর্গমাইল- আমরা তাতেই খুশি। অন্যের জমি বা প্রদেশ আমাদের সঙ্গে যুক্ত হওয়াকে আমরা সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করি। এটা আমরা কখনোই নিবো না। প্রত্যেকটা দেশ তার সার্বভৌমত্ব নিয়ে থাকবে। মিয়ানমার তার সার্বভৌমত্ব নিয়ে থাকবে। সেখানে বাংলাদেশের সঙ্গে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) রাখাইন স্টেটকে জুড়ে দিতে চায় কেনো?”

“এ ধরনের কথা বলা অত্যন্ত গর্হিত কাজ, অন্যায় কাজ” বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, “হতে পারে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) খুব বড় দেশ। সেই দেশের একজন কংগ্রেসম্যান এমন কথা বলেছেন। তারা কী তাদের অতীত ভুলে গিয়েছেন? তাদের যখন গৃহযুদ্ধ লেগেই থাকতো- সেই অতীত তো তাদের ভুলে যাওয়া উচিত না। সে পরিস্থিতি যে ভবিষ্যতে আসবে না তা তারা কীভাবে ভাবে?”

“রাখাইন স্টেটে প্রতিনিয়ত সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে” উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, “আমরা জেনে-বুঝে এ ধরনের গোলমেলে জিনিস আমাদের দেশের সঙ্গে যুক্ত করবো কেনো? এটা আমরা কখনোই করবো না। তাছাড়া, আমার প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার। সেখানে একটা ঘটনা ঘটেছে। সেখানকার লোকজন যখন আশ্রয় চেয়েছে মানবিক কারণে আমরা তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছি। আশ্রয় দেওয়ার অর্থ এটা নয় যে আমরা তাদের রাষ্ট্রের একটা অংশ নিয়ে চলে আসবো। এই মানসিকতা আমাদের নেই। এটা আমরা চাই না।”

“প্রত্যেকটি দেশ তার সার্বভৌমত্ব নিয়ে থাকবে” এমন প্রত্যাশা নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি এটা চাই যে (রাখাইন রাজ্যকে বাংলাদেশের সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার) কথা না বলে বরং মিয়ানমার যেনো তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়ে যায়- আমার মনে হয় কংগ্রেসম্যান শেরম্যানের সেটাই করা উচিত। সেটাই হবে মানবিক দিক। সেখানে সেসব মানবতা লঙ্ঘিত হয়েছে তাদের সেগুলো দেখা উচিত। কাজেই এভাবে একটা দেশের ভেতরে গোলমাল পাকানো কোনো মতেই ঠিক না। এবং যেখানে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) হাত দিয়েছে সেখানেই কিন্তু আগুন জ্বলছে। কোথাও কিন্তু শান্তি আসেনি বরং জঙ্গিবাদ ও অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে।”

“আমাদের এই অঞ্চলে আমরা একটু শান্তিপূর্ণভাবে থাকার চেষ্টা করছি- এখানেও তাদের আগুন লাগানোর প্রচেষ্টা। এটি কখনই গ্রহণযোগ্য না,” যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

আরো পড়ুন:

৬১ টাকায় গ্যাস কিনে ৯ টাকায় বিক্রি করছি: প্রধানমন্ত্রী

রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে চীন চেষ্টা করবে: প্রধানমন্ত্রী

আমি আমার খেলোয়াড়দের ধন্যবাদ দেই: প্রধানমন্ত্রী

Comments

The Daily Star  | English

Further uncertainty over Rooppur plant launch

The construction work for the transmission line through the Padma and Jamuna rivers for the Rooppur nuclear power plant has come to a grinding halt with the ouster of the Awami League government as the Indian contractor has left the site.

2h ago