কাজের গতি বাড়ান: ডিসিদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
![](https://bangla.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/feature/images/pm-pid-dc.jpg?itok=snl919cD×tamp=1563106826)
দেশে চলমান উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রাখতে কাজের গতি বাড়ানোর জন্য জেলা প্রশাসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য উন্নয়নের গতিটা অব্যাহত রাখাটা জরুরি। আর এটা মাথায় রেখেই আপনাদের কাজ করে যেতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে তার কার্যালয়ে পাঁচ দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২০১৯ এর উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন।
জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, “আপনারা আপনাদের মেধা ও মনন দিয়ে এই দেশটাকে গড়ে তুলবেন। আর সুষ্ঠু পরিকল্পনা নিয়ে যেন কর্মক্ষেত্রে আপনাদের দক্ষতার পরিচয় রাখতে পারেন সেটাই আমি চাই।” তিনি বলেন, “বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে এবং জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব।”
তার সরকার একটি লক্ষ্য নিয়ে দেশ পরিচালনা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আপনাদের চাকরিতো দীর্ঘকালীন, আর আর আমাদের চাকরি স্বল্প মেয়াদের। পাঁচ বছরের জন্য আমরা নির্বাচিত হয়েছি। কাজেই এই পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের দেশটাকে একটা জায়গায় নিয়ে আসতে চাই এবং সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা যে বাজেট দিয়েছি বা পরিকল্পনা নিয়েছি বা নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা দিয়েছি। আর সেই লক্ষ্যটা হলো বাংলাদেশ ক্ষুধা মুক্ত, দারিদ্র্য মুক্ত, উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হবে।”
২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর আগেই দেশকে দারিদ্র্য মুক্ত করতে চান উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে আমাদের ২১ ভাগ দারিদ্র্য মুক্ত হয়েছে এবং আমি মনে করি, আমরা যদি আরেকটু প্রচেষ্টা নেই- আমাদের হাতে এখনো যে সময়টা রয়েছে তাতে ২০২১ সালের মধ্যে দারিদ্র্যের হার ২/৩ ভাগ কমাতে পারব।
তিনি বলেন, “আপনারা জানেন যুক্তরাষ্ট্রের দারিদ্র্যের হার ১৮ ভাগ। আমরা তার থেকে অন্তত এক ভাগ বেশি কমাতে চাই। আপনাদের প্রচেষ্টা থাকলে আমরা পারব।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা আমাদের একদিন বলেছিল, বাংলাদেশ ‘বটমলেস বাস্কেট’ হবে। তাদের দেখাতে চাই দারিদ্র্যের হার কমিয়ে এনেছি। ২০২৪ সালের মধ্যে এই হারকে আরও কমাব। আর ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ এই দক্ষিণ এশিয়ায়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, মন্ত্রী পরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বক্তব্য রাখেন এবং প্রধানমন্ত্রী মূখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ইলিয়াস হোসাইন, শেরপুর জেলা প্রশাসক আনারকলি মাহবুব এবং টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম ও বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাগণ, সংসদ সদস্যগণ, সিনিয়র সচিব এবং সচিবসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, অংশগ্রহণকারী বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা প্রশাসকবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এ বছরের ডিসি সম্মেলনে মোট ২৯টি অধিবেশন হবে এবং সম্মেলনে ৩৩৩টি প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে।
আইন-শৃঙ্খলা, ভূমি সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান সমূহের কার্যক্রম জোরদার, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, দারিদ্র্য দূরীকরণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন এবং সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীসহ গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জানায়, জেলা প্রশাসক এবং বিভাগীয় কমিশনারদের নির্দেশনা প্রদানে বিভিন্ন অধিবেশনে মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী এবং সচিবেরা অংশ নেবেন।
কর্ম অধিবেশনগুলো সচিবালয়ে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন মন্ত্রী পরিষদ সচিব।
জেলা প্রশাসকগণ সম্মেলন চলাকালে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
পাঁচ দিনব্যাপী এই সম্মেলন শেষ হবে ১৮ জুলাই।
Comments