ওভারথ্রোতে ইংল্যান্ডের কত রান পাওয়া উচিত ছিল, ৬ না ৫?

ফাইনাল ম্যাচের শেষ ওভার। টান টান উত্তেজনা। ৩ বলে চাই ৯ রান। স্ট্রাইকে ইংল্যান্ডের বেন স্টোকস। ওভারের চতুর্থ বলটি করলেন নিউজিল্যান্ডের ট্রেন্ট বোল্ট। ডিপ মিডউইকেটে বল ঠেলে দিয়েই পড়িমরি করে দৌড় লাগালেন স্টোকস। লক্ষ্য ডাবল নেওয়া। স্ট্রাইকে ফেরত আসা। কিন্তু দ্বিতীয় রান পূরণের সময় ঘটল এমন এক ঘটনা, যা পাল্টে দিল ম্যাচের চিত্র।
stokes overthrow
ছবি: রয়টার্স

ফাইনাল ম্যাচের শেষ ওভার। টান টান উত্তেজনা। ৩ বলে চাই ৯ রান। স্ট্রাইকে ইংল্যান্ডের বেন স্টোকস। ওভারের চতুর্থ বলটি করলেন নিউজিল্যান্ডের ট্রেন্ট বোল্ট। ডিপ মিডউইকেটে বল ঠেলে দিয়েই পড়িমরি করে দৌড় লাগালেন স্টোকস। লক্ষ্য ডাবল নেওয়া। স্ট্রাইকে ফেরত আসা। কিন্তু দ্বিতীয় রান পূরণের সময় ঘটল এমন এক ঘটনা, যা পাল্টে দিল ম্যাচের চিত্র।

সীমানা থেকে মার্টিন গাপটিলের থ্রো স্ট্যাম্পের দিকে ছুটে আসছিল। তখনই ডাইভ দিলেন স্টোকস। বল তার ব্যাটে লেগে দিক পরিবর্তন করে থার্ডম্যান দিয়ে চলে গেল সীমানার বাইরে! দৌড়ে নেওয়া ২ রানের আর ওভারথ্রোতে বাউন্ডারি হওয়ায় সবমিলিয়ে ইংল্যান্ডের দলীয় স্কোরে যুক্ত হয় ৬ রান। সহকর্মী আম্পায়ারের সঙ্গে আলোচনা শেষে এই সিদ্ধান্ত দেন কুমার ধর্মসেনা। স্টোকস অবশ্য সঙ্গে সঙ্গে হাত উঁচু করে ক্ষমা চাওয়ার ভঙ্গি করেন। আর নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটাররা তখন যেন বাকরুদ্ধ!

ফলে শেষ ২ বলে যেখানে ৭ রানের সমীকরণ মেলানোর কথা ছিল ইংলিশদের, সেটা হয়ে যায় ২ বলে ৩! এর পরের ঘটনা ইতিহাস। লর্ডসে নির্ধারিত ৫০ ওভারের ফাইনালে আলাদা করা যায়নি কাউকে। ম্যাচ টাই। সুপার ওভারেও সমানে-সমান দুদল। ফের টাই। এরপর বাউন্ডারি বেশি মারার নিয়মের কল্যাণে বিশ্বকাপ জিতে গেছে ইংল্যান্ড। কিন্তু ওভারথ্রোর কারণে ওই বাড়তি ৪ রান না এলে ম্যাচ সুপার ওভারে না-ও গড়াতে পারত!

তবে বিতর্কের অবকাশ থাকছে ওভার থ্রোতে ইংল্যান্ডের আসলে কত রান পাওয়া উচিত ছিল সেটা নিয়ে, ৬ না-কি ৫? ক্রিকেটের আইনই সে প্রশ্ন তোলার সুযোগ করে দিচ্ছে। আইনের ১৯.৮ অনুচ্ছেদ অনুসারে, ওভারথ্রো বা ফিল্ডারের ইচ্ছাকৃতভাবে করা কোনো কাজের ফলে বাউন্ডারি হলে, সেই বাউন্ডারি ব্যাটিং করা দলের খাতায় যোগ হবে এবং ব্যাটসম্যানরা যত রান দৌড়ে পূরণ করেছেন সেটাও যোগ হবে যদি ওই থ্রো বা কাজের সময়ের আগে তারা একে অপরকে অতিক্রম করে ফেলেন।

গোলমালটা বেঁধেছে শেষ কথাগুলো নিয়ে। গাপটিল যখন থ্রো করেছিলেন, তখনও দ্বিতীয় রানের জন্য স্টোকস ও আদিল রশিদ একে অপরকে অতিক্রম করেননি। পরে ভিডিও ফুটেজ থেকে তা নিশ্চিত হওয়া গেছে। অর্থাৎ দৌড়ে মূলত ১ রান নিয়েছিলেন তারা। সঙ্গে বাউন্ডারি। ফলে ৫ রান পাওয়ার কথা ছিল ইংলিশদের। কিন্তু তারা পেয়েছে ৬। এই ১ রানও পরবর্তীতে নিউজিল্যান্ডের জন্য হতে পারত মহামূল্যবান।

তবে ফাঁক-ফোকর আছে এখানেও! থ্রোর পাশাপাশি বলা হয়েছে ফিল্ডারদের ইচ্ছাকৃত কোনো কাজের কথা। কিন্তু আইনের অস্পষ্টতায়, এই ইচ্ছাকৃত কাজের সময়টা স্টোকসের ব্যাটে বল লাগার মুহূর্ত থেকেও তো বিবেচনা করা যেতে পারে! সেক্ষেত্রে রশিদকে তো আগেই অতিক্রম করে গেছেন স্টোকস। ফলে দৌড়ে ২ রানই পূর্ণ হয়েছে ইংল্যান্ডের। তাছাড়া এমন ক্ষেত্রে ব্যাটসম্যানদের ভূমিকা নিয়েও কিছু বলা হয়নি। তবে ফাইনালে এমন কিছু হওয়ার পর এ আইন নিয়ে নতুন করে ভেবে দেখতে হতে পারে আইসিসিকে।

ওভারথ্রো নিয়ে বিতর্ক ওঠার আগে নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন অবশ্য জানিয়েছিলেন, 'এটা নিয়ে ভাববার অবকাশ নেই যে ওটাই (ওভারথ্রো) ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিয়েছে। ম্যাচে আরও অনেক ছোট ছোট বিষয় ঘটেছে যেগুলো গুরুত্বপূর্ণ ছিল।'

ফাইনাল ম্যাচের শেষ ওভার:

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

6h ago