আমরা বিশুদ্ধ পানি চাই: হাইকোর্ট

“ওয়াসা যদি সমস্যা সমাধান করতে পারে তাহলে ভালো। আমাদের দরকার পানি, বিশুদ্ধ পানি। আমরা বিশুদ্ধ পানি চাই।”
supreme court
সুপ্রিম কোর্ট ভবন। স্টার ফাইল ছবি

“ওয়াসা যদি সমস্যা সমাধান করতে পারে তাহলে ভালো। আমাদের দরকার পানি, বিশুদ্ধ পানি। আমরা বিশুদ্ধ পানি চাই।”

ঢাকা ওয়াসার দূষিত পানি নিয়ে আজ (২৪ জুলাই) শুনানিতে এমন মন্তব্য করেছেন বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

পানি পরীক্ষার জন্য আদালতের নির্দেশে গঠিত চার সদস্যের কমিটির প্রতিবেদন ৭ জুলাই উপস্থাপন করা হয়। এতে ঢাকা ওয়াসার ১০টি বিতরণ জোনের পানিতেই ব্যাকটেরিয়াজনিত দূষণ রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। আদালত এ প্রতিবেদন সম্পর্কে ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে চেয়ে ২৪ জুলাই পরবর্তী শুনানির দিন রেখেছিলেন।

আজ শুনানিতে ওয়াসার আইনজীবী ব্যারিস্টার এএম মাসুম বলেন, সমন্বিত পানি পরীক্ষার প্রতিবেদনে কিছু সুপারিশ ছিলো। সেগুলো বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সুপারিশ অনুসারে আইসিসিডিআর,বি ও বুয়েটে পানি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। পাতলা খান লেনের পানির প্রতিবেদন পাওয়া গেছে এবং মিরপুরের প্রতিবেদন রবিবার পাওয়া যাবে।

এরপর আদালত পরবর্তী শুনানির জন্য ৩০ জুলাই দিন ধার্য করেন।

পরে এএম মাসুম বলেন, “সমন্বিত প্রতিবেদন মিরপুর ও পাতলা খান লেনে পাওয়া ব্যাকটেরিয়া মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর বলে উল্লেখ করেছে। ওই প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুসারে আমরা একটার পর একটা সংশোধনে গিয়েছি। পাতলা খান লেনের ব্যাকটেরিয়া ঠিক করে আইসিসিডিআর,বি ও বুয়েটের প্রতিবেদন পাওয়া গেছে।”

হাইকোর্ট গত ২১ মে এক আদেশে ঢাকা ওয়াসার পানির উৎস, ১০টি বিতরণ জোন, গ্রাহকদের অভিযোগের ভিত্তিতে ১০টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান এবং দৈবচয়নের ভিত্তিতে ১০টি স্থান থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে নির্দেশ দেয়। এরপর ৩৪টি স্থান থেকে পানির নমুনা সংগ্রহ করে তা আইসিডিডিআর,বি, বুয়েট ও ঢাবি অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়।

এর মধ্যে আটটি নমুনাতে ব্যাকটেরিয়াজনিত দূষণ রয়েছে মর্মে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। প্রতিবেদনটি রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এম মোতাহার হোসেন সাজু আদালতে উপস্থাপন করেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বিতরণ জোন-১-এর পাতলা খান লেন, ৪-এর কাজীপাড়া ও ৭-এর শনির আখড়া ও ধনিয়া থেকে সংগ্রহ করা পানিতে কলিফর্ম পাওয়া গেছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর বিশ্বব্যাংক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষ অনিরাপদ উৎসের পানি পান করে। ৪১ শতাংশ পানির নিরাপদ উৎসগুলোতে রয়েছে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া। ১৩ শতাংশ পানিতে রয়েছে আর্সেনিক। পাইপের মাধ্যমে সরবরাহ করা পানিতে এই ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৮২ শতাংশ। ওই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে পত্র-পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবী তানভীর আহমেদ।

রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৬ নভেম্বর রাজধানী ঢাকায় পাইপের মাধ্যমে সরবরাহকৃত ওয়াসার পানি পরীক্ষার জন্য ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। পরে ঢাকা ওয়াসার পানি পরীক্ষার জন্য চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এবং আইসিডিডিআর,বি’র প্রতিনিধির সমন্বয়ে ওই কমিটি গঠিত হয়। এরপর ওই কমিটিকে গত ২১ মে পানি পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়।

Comments

The Daily Star  | English
Islami Bank's former managing director Abdul Mannan

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago