শিক্ষিকাকে উত্যক্ত করার অভিযোগ প্রধানশিক্ষকের বিরুদ্ধে

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার সীমান্তবর্তী তেলিবিল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক নোমান আহমদের (৫৬) বিরুদ্ধে স্কুলের এক সহকারী শিক্ষিকাকে উত্যক্ত করার অভিযোগ উঠেছে।
violence against women logo
প্রতীকী ছবি। স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার সীমান্তবর্তী তেলিবিল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক নোমান আহমদের (৫৬) বিরুদ্ধে স্কুলের এক সহকারী শিক্ষিকাকে উত্যক্ত করার অভিযোগ উঠেছে।

এ অভিযোগে গতকাল (২৫ জুলাই) সন্ধ্যায় ওই সহকারী শিক্ষিকা প্রধানশিক্ষক নোমান আহমদকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায় থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

এর আগে এই ঘটনার প্রতিকার ও নিরাপত্তা চেয়ে ১৭ জুলাই কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন ওই সহকারী শিক্ষিকা। পরে ইউএনও’র পরামর্শে কুলাউড়া থানা পুলিশ তদন্ত করলে ঘটনার সত্যতা বেরিয়ে আসে।

কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়ারদৌস হাসান গতরাত ৮টায় মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “আসামি নোমান আহমদকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”

জানা যায়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এনটিআরসির মাধ্যমে উপজেলার তেলিবিল উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ পান ওই শিক্ষিকা। যোগদানের পর শিক্ষিকার এমপিও পদ করার জন্য স্কুলের প্রধানশিক্ষক নোমান আহমদ তার সমস্ত কাগজাদি ও ফাইল রেডি করে যতো টাকা খরচ লাগবে তিনি সেই টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। বিনিময়ে ওই শিক্ষিকাকে তার দেওয়া নানা ধরণের যৌন হয়রানিমূলক আচরণ ও বিয়ের প্রস্তাবে রাজি হতে বলেন। এই প্ররোচনা দিয়ে বিভিন্ন সময়ে প্রধানশিক্ষক তার রুমে ডেকে নিয়ে শিক্ষিকাকে কুরুচিপূর্ণ, অনৈতিক প্রস্তাবনা দিয়ে যৌন হয়রানি করে আসছেন।

প্রধানশিক্ষক নোমান আহমদ ক্ষমতার দাপট খাটিয়ে বিভিন্ন সময় তার পরিবারের সদস্য ও স্কুলের দপ্তরির মাধ্যমে ওই শিক্ষিকাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন। কিন্তু শিক্ষিকা সেই প্রস্তাবে রাজি হননি। এরপর শিক্ষিকাসহ আরো দুজন শিক্ষিকাকে এমপিও করানোর কথা বলে ৬০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। বিষয়টি স্থানীয় এলাকায় চাউর হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে শুরু হয় কানাঘুষা। ন্যায়বিচারের জন্য ওই শিক্ষিকা কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেন।

অভিযোগের বিষয়ে ওই শিক্ষিকা জানান, “আমি বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে প্রধানশিক্ষক নোমান আহমদ আমার সাথে খারাপ আচরণ করে আসছেন। অনেকদিন সহ্য করেছিলাম। বাধ্য হয়ে শেষ পর্যন্ত অভিযোগ করেছি। এ ঘটনার সঠিক সমাধান না হলে আমি স্কুলে যাবো না। আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই।”

ওই শিক্ষিকার বাবা বলেন, “প্রধানশিক্ষকের বিভিন্ন আচরণে আমার মেয়ে নিরাপত্তাহীনতায় আছে। সপ্তাহখানেক থেকে সে স্কুলে যাচ্ছে না। একদিন এমপিও করার স্বাক্ষরের জন্য তাকে মৌলভীবাজার শিক্ষা অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তার বাড়ি আসতে দেরি দেখে আমি নিজে মৌলভীবাজার গিয়ে রাত ১১টায় মেয়েকে বাড়ি নিয়ে আসি। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আমার মেয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।”

এ বিষয়ে তেলিবিল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক নোমান আহমদ বলেন, “আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য নয়। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে।”

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আবুল লাইছ অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “প্রধানশিক্ষক কর্তৃক ঘটনার বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করার জন্য অভিযোগটি থানায় পাঠিয়েছি। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

Comments

The Daily Star  | English

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago