জালে রূপালি ইলিশ, জেলেদের মুখে হাসি

দুই মাসের অধিক সময়ের নিষেধাজ্ঞা শেষে বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে রূপালি ইলিশ ধরা পড়ছে। এতে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাট, খুলনা ও সাতক্ষীরার হাট-বাজার ইলিশে ভরে গেছে।
hisha
স্টার ফাইল ছবি

দুই মাসের অধিক সময়ের নিষেধাজ্ঞা শেষে বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে রূপালি ইলিশ ধরা পড়ছে। এতে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাট, খুলনা ও সাতক্ষীরার হাট-বাজার ইলিশে ভরে গেছে।

সাগরে কাঙ্ক্ষিত রূপালি ইলিশ ধরা পড়ায় হাসি ফুটেছে জেলে, আড়তদার ও মাছ ব্যবসায়ীদের মুখে। ইলিশ বোঝাই ট্রলারগুলো বাগেরহাটের প্রধান মাছের আড়ত কেবি বাজারে ভিড়ছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, সাগর থেকে ১০টি ট্রলার ইলিশ বোঝাই করে ঘাটে ভিড়েছে। এসব ট্রলার থেকে ইলিশ নামানো হচ্ছে। কেউ ইলিশ মাছের ঝুড়ি টানছেন, কেউ প্যাকেট করছেন, আবার কেউ কেউ সেই প্যাকেট দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাতে তুলে দিচ্ছেন ট্রাকে।

খুচরা মাছবাজার ঘুরে দেখা গেছে, নিষেধাজ্ঞার সময় অনেক দোকান বন্ধ ছিলো। এখন তারা আবার দোকান খুলে বসেছেন। পর্যাপ্ত ইলিশ সরবরাহ থাকায় দামও কম।

খুলনার সবচেয়ে বড় ইলিশের পাইকারি বাজার কেসিসি রূপসা মৎস্য আড়ত এখন রূপালি ইলিশে ভরপুর। অলিগলি পাড়া-মহল্লায়ও ভোর থেকে রাত অবধি চলছে ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতাদের ইলিশ বিক্রির ধুম।

এক কেজি ওজনের প্রতিটি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার-১২শ’ টাকায়। তিন দিন আগে যা দ্বিগুণ ছিলো। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ার পর প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ায় দামও নাগালের মধ্যে। তাই আড়তদার, পাইকার, খুচরা বিক্রেতা সবার মধ্যেই স্বস্তি ফিরেছে। দাম কমায় মৌসুমে টাটকা ইলিশের স্বাদ নিতে খুলনার সবচেয়ে বড় এ আড়তে প্রতিদিন মাছ কিনতে হাজারও ক্রেতা ভিড় করছেন।

আড়তদাররা জানান, সপ্তাহখানেক আগেও যে ইলিশের দাম নাগালের বাইরে ছিলো, এখন তা অনেকটা সহনীয় পর্যায়ে নেমে এসেছে।

শুক্রবার পাইকারি বাজার কেসিসি রূপসা মৎস্য আড়তের মদিনা ফিশের মালিক আবু মুসা বলেন, “সাগর ও নদীতে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে প্রচুর ইলিশ। তাই মোকামগুলোতেও ইলিশের ছোট-বড় ট্রলার আসতে শুরু করেছে।”

তিনি জানান, সাগরের ৪০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৫০০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে। এক কেজি ওজনের মাছ পাওয়া যাচ্ছে ৮শ’-৯শ’ টাকায়।

আবু মুসা জানান, নদীর দেড় কেজি ওজনের ইলিশের পাইকারি মূল্য ১৫শ’-১৬শ’ টাকা। যা তিন দিন আগে ছিলো ২৬শ’। এক কেজি সাইজের ইলিশের পাইকারি দাম ১১শ’-১২শ’ টাকা। যা তিন দিন আগে ছিলো ১৭শ’- ১৮শ’। ৭-৮শ’ গ্রাম সাইজের ইলিশের দাম ৮০০-৯০০ টাকা। যা তিন দিন আগে ১৫শ’ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

তিনি জানান, খুচরা বাজারেও ইলিশের দাম প্রায় অর্ধেক কমেছে।

বেঙ্গল ফিশের আড়তদার লিটন বলেন, “২৩ জুলাইয়ের আগে প্রতিদিন পাঁচ টন মাছ আসতো। শুক্রবার ৬০-৭০ টন ইলিশ বাজারে এসেছে।”

তিনি বলেন, “ইলিশের সরবরাহ ভালো। সাগরের ইলিশে বাজার ভরপুর। তাই দাম কম।”

কেবি বাজার মৎস্য আড়তদার সমিতির সভাপতি এসএম আবেদ আলী জানান, দীর্ঘদিনের নিষেধাজ্ঞা থাকায় জেলেরা পরিবার-পরিজন নিয়ে খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করেছে। অপেক্ষা শেষে এখন জেলেদের জালে মাছ পড়তে শুরু করছে। মাছের সাইজও মোটামুটি ভালো। তবে নিয়মিত বৃষ্টি হলে আরও  বড় ইলিশ ধরা পড়বে বলে তিনি জানান।

বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মো. খালেদ কনক বলেন, “নিষেধাজ্ঞার সুফল জেলেরা পেতে শুরু করেছেন। সাগরেও মাছ ধরা পড়ছে। আগামীতে জেলায় ইলিশ আরও বেশি পাওয়া যাবে।”

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

5h ago