হতাশা বাড়িয়ে সিরিজ হারল বিবর্ণ বাংলাদেশ

ছবি: এএফপি

ধ্বংসস্তূপের মধ্যে লড়ে মুশফিকুর রহিম এনেছিলেন কিছুটা লড়াইয়ের পূঁজি। তবে বোলাররা তা নিয়ে দেখাতে পারলেন না কোন ঝাঁজ, ফিল্ডিং থাকল আগের মতই হতশ্রী।  আবিস্কা ফার্নেন্দোর ঝড়ে শুরুতেই টালমাটাল হয়ে পড়া বোলাররা এমন পরিস্থিতিতে আর পাননি কুল কিনারা। হতাশা বাড়িয়ে, উদ্বেগ চড়িয়ে বাংলাদেশ হেরেছে লড়াইবিহীনভাবে।

কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের দেওয়া ২৩৯ রানের লক্ষ্য স্বাগতিকরা পেরিয়েছে অনায়াসে। ৩২ বল হাতে রেখে জিতেছে ৭ উইকেটে। দলকে জেতাতে ৭৫ বলে ৮২ রান করেন ফার্নেন্দো। ম্যাথিউস ৫২ আর কুশল মেন্ডিস অপরাজিত থাকেন ৪১ রানে।

তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুইটিতেই দাপুটে জয়ে সিরিজও জিতে নিয়েছে দিমুথ করুনারত্নের দল। বেশ কয়েকদিন থেকে ধুঁকতে থাকা লঙ্কানরা ঘরের মাঠে পেল এমন সাফল্য। ২০১৫ সালের নভেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারানোর এতদিন পর ঘরের মাঠে আবার কোন ওয়ানডে সিরিজ জিতল তারা। আর বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর শ্রীলঙ্কায় গিয়ে র‍্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে থাকা দলের সঙ্গে সিরিজ হেরে বাংলাদেশ বাড়াল হতাশা। শ্রীলঙ্কা সফরে দুই ম্যাচেই বাংলাদেশকে দেখালো অবসাদগ্রস্ত, টানা খেলার মধ্যে থাকার ক্লান্তি আড়াল করতে পারেননি তারা।

শরীরী ভাষায় নেতিয়ে পড়া বাংলাদেশের বিপক্ষে ২৩৯ রান তাড়ায় দেখেশুনে শুরুর পর থিতু হয়ে তাণ্ডব চালান ফার্নেন্দো। মাঝারি লক্ষ্য তার আগ্রাসী ব্যাটে হয়ে পড়ে মামুলি। দ্বাদশ ওভারে করুনারত্নেকে বোল্ড করে উদ্বোধনি জুটি ভাঙেন মিরাজ। কিন্তু দ্বিতীয় উইকেটে কুশল পেরেরাকে নিয়ে ৫৮ রানের আরেক জুটি হয়ে যায় ফার্নেন্দোর। ফার্নেন্দো, পেরেরা দুজনকেই অল্প সময়ের মধ্যে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। কিন্তু ততক্ষণে আসলে বড্ড দেরি হয়ে গেছে।

বাংলাদেশের জেতার মতো পরিস্থিতি আর তৈরি হয়নি। অভিজ্ঞ অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস কুশল মেন্ডিসকে নিয়ে বাকি কাজ সেরেছেন হেসেখেলে।

এর আগে টপ অর্ডারদের ব্যর্থতায় টস জিতে ব্যাট করতে গিয়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় বাংলাদেশ। একশোর আগে ৫ উইকেট পড়ে যাওয়া দল ঘুরে দাঁড়ায় মুশফিকের চওড়া ব্যাটে। দায়িত্বের সব ভার একা নিয়ে শেষ পর্যন্ত টিকে মুশফিক করেন ৯৮। তবু দল যেতে ছুঁতে পারেনি আড়াইশ।

বোর্ডে ২৩৮ রান নিয়ে ম্যাচ জেতা যে ভীষণ কঠিন হবে ইনিংস বিরতিতেই সেই আঁচ পাওয়া যাচ্ছিল। বোলিংয়েও বাংলাদেশের হাতে ছিল না বড় কোন অস্ত্র। যদি মোস্তাফিজ দুর্দান্ত কিছু করতে পারতেন তাহলেও হয়ত সুযোগ মিলত। কিন্তু প্রথম ম্যাচের মতো এই পেসার এদিনও থাকলেন গড়পড়তা। শফিউল ইসলামরা দেখালেন তারা কেবল ঠেকায় কাজ চালানোর মতই।

৩১ জুলাই শেষ ম্যাচে হোটাইশওয়াশ এড়াতে নামতে হবে তামিম ইকবালের দলকে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ:  ৫০ ওভারে ২৩৮/৮  (তামিম ১৯,  সৌম্য ১১, মিঠুন ১২, মুশফিক ৯৮*,  মাহমুদউল্লাহ ৬, সাব্বির ১১, মোসাদ্দেক ১৩, মিরাজ ৪৩ , তাইজুল ৩, মোস্তাফিজ,; ধনঞ্জয়া ০/৩৯,  প্রদীপ ২/৫৩, উদানা ২/৫৮, কুমারা ০/৪২, আকিলা ২/৩৯)

শ্রীলঙ্কা:  ৪৪.৪ ওভারে ২৪২/৩ ( ফার্নেন্দো ৮২, করুনারত্নে ১৫, পেরেরা ৩০, মেন্ডিস ৪১*, ম্যাথিউস ৫২* ; মিরাজ ১/৫১, শফিউল ০/২৯, তাইজুল ১/৩৯, মোস্তাফিজ ২/৫০, মোসাদ্দেক ০/৩২, সাব্বির ০/২০ , সৌম্য ০/১৬)

ফল: শ্রীলঙ্কা ৭ উইকেটে জয়ী।

সিরিজ: এক ম্যাচ বাকি থাকতে শ্রীলঙ্কা ২-০ তে এগিয়ে থেকে জয়ী।

Comments

The Daily Star  | English

Parties agree on chief justice appointment, limiting emergency powers

Manifesto provision allows top-two judge choice; cabinet to approve emergency declaration

1h ago