শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশের ভরাডুবি

সিরিজ শুরুর আগে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক তামিম ইকবাল বলেছিলেন, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তাদের মাটিতেই খেলা হওয়ায় এবং বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন তারকা ক্রিকেটার দলে না থাকায় কঠিন চ্যালেঞ্জ দেখছেন তিনি। সেই কঠিন পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হয়েছে টাইগাররা। লঙ্কাদ্বীপে ভরাডুবি হয়েছে বাংলাদেশের। তিন ম্যাচের প্রতিটিতেই অসহায় আত্মসমর্পণ করায় ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনের শিষ্যরা।
Tamim Iqbal

সিরিজ শুরুর আগে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক তামিম ইকবাল বলেছিলেন, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তাদের মাটিতেই খেলা হওয়ায় এবং বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন তারকা ক্রিকেটার দলে না থাকায় কঠিন চ্যালেঞ্জ দেখছেন তিনি। সেই কঠিন পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হয়েছে টাইগাররা। লঙ্কাদ্বীপে ভরাডুবি হয়েছে বাংলাদেশের। তিন ম্যাচের প্রতিটিতেই অসহায় আত্মসমর্পণ করায় ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনের শিষ্যরা।

বুধবার (৩১ জুলাই) কলম্বোতে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ১২২ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নামা লঙ্কানদের ছুঁড়ে দেওয়া ২৯৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে টাইগাররা অলআউট হয়েছে মাত্র ১৭২ রানে। তখনও বাকি ছিল ইনিংসের ১৪ ওভার!

বাংলাদেশের হয়ে ৮৬ বলে সর্বোচ্চ ৬৯ রানের ইনিংস খেলেন সৌম্য সরকার। তিনি সাম্প্রতিক সময়ের রানখরা কাটিয়ে হাফসেঞ্চুরি করলেও বাকি ব্যাটসম্যানরা ছিলেন নিষ্প্রভ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান আসে তাইজুল ইসলামের ব্যাট থেকে। তিনি নয় নম্বরে নেমে ২৮ বলে ৩৯ রান করে অপরাজিত থাকেন।

এছাড়া দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেন কেবল এনামুল হক বিজয় (১৪) ও মুশফিকুর রহিম (১০)। বাকিরা ছিলেন আসা-যাওয়ার মিছিলে। শ্রীলঙ্কার হয়ে দাসুন শানাকা ২৭ রানে ৩ উইকেট নেন। ২টি করে উইকেট পান কাসুন রাজিথা ও লাহিরু কুমারা।

শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় বাংলাদেশ। গড়ে ওঠেনি কোনো ভালো জুটি। সর্বোচ্চ জুটিটা মাত্র ২৬ রানের! অষ্টম উইকেটে সৌম্য ও তাইজুলের মধ্যে। অধিনায়ক তামিম (২), মোহাম্মদ মিঠুন (৪), মাহমুদউল্লাহ (৯) ও সাব্বির রহমান (৭) এদিনও ব্যর্থ হন।

এর আগে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৯৪ রান তোলে শ্রীলঙ্কা। দলীয় ১৩ রানের মাথায় আভিস্কা ফার্নান্দোকে এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন শফিউল ইসলাম। তার সংগ্রহ ৬ রান। এরপর করুনারত্নে ও পেরেরার ৮৩ রানের জুটি। তাতে তিনশো ছোঁয়া স্কোর গড়ার ভিত পেয়ে যায় লঙ্কানরা। জুটি ভাঙার পর এই দুজনকে অবশ্য অল্প রানের ব্যবধানে ফেরাতে পারেন টাইগার বোলাররা।

করুনারত্নে ৪৬ রান করে হন তাইজুল ইসলামের শিকার। পেরেরার ব্যাট থেকে আসে ৪২ রান। তার উইকেটটি নেন রুবেল হোসেন। দুই ব্যাটসম্যানই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন মুশফিকুর রহিমের হাতে।

শ্রীলঙ্কার দলীয় একশো রানের মধ্যে ৩ উইকেট তুলে নিতে পারলেও চাপটা ধরে রাখতে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ। চতুর্থ উইকেটে ১০১ রানের জুটি গড়েন মেন্ডিস ও ম্যাথিউস। ফিফটি তুলে নেওয়ার পরপরই অবশ্য মেন্ডিসকে ফেরান সৌম্য সরকার। সীমানার কাছে দুর্দান্ত ক্যাচ ধরেন সাব্বির রহমান।

৪০ ওভার পর্যন্ত ওভারপ্রতি পাঁচের নিচে থাকা লঙ্কানদের রান রেট বাড়ানোর কাজটা করেন এ ম্যাচের একাদশে সুযোগ পাওয়া শানাকা। উইকেটে গিয়ে তেড়েফুঁড়ে মেরে ১৪ বলে ৩০ রান করেন তিনি। লঙ্কান একাদশে সুযোগ পাওয়া আরেক ক্রিকেটার শিহান জয়সুরিয়া খেলেন ৭ বলে ১৩ রানের ক্যামিও ইনিংস। এ দুজনকে আউট করেন ম্যাচে শফিউল।

ইনিংসের শেষ ওভারে ম্যাথিউসকে বিদায় করেন সৌম্য। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৭ রানের ইনিংস খেলেন এই অভিজ্ঞ তারকা। তাকে আউট করার পরের বলে আকিলা দনঞ্জয়ার উইকেট তুলে নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন সৌম্য। তবে সেটা হয়নি। বরং খরুচে হয়ে যান তিনি। ওয়ানিদু হাসারাঙ্গা অপরাজিত থাকেন ৫ বলে ১২ রানে।

৪০ ওভার পর্যন্ত নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে টাইগাররা। তবে ডেথ ওভারে বোলিং ভালো হয়নি। উইকেট হাতে থাকায় আর থিতু হয়ে যাওয়া অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ও দাসুন শানাকা ঝড় তোলায় শেষ ১০ ওভারে ১০৬ রান আদায় করে নেয় শ্রীলঙ্কা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শ্রীলঙ্কা: ২৯৪/৮ (৫০ ওভার) (আভিস্কা ৬, করুনারত্নে ৪৬, পেরেরা ৪২, মেন্ডিস ৫৪, ম্যাথিউস ৮৭, শানাকা ৩০, জয়সুরিয়া ১৩, হাসারাঙ্গা ১২*, দনঞ্জয়া ০, রাজিথা ০*; শফিউল ৩/৬৮, রুবেল ১/৫৫, তাইজুল ১/৩৪, মিরাজ ০/৫৯, সৌম্য ৩/৫৬, মাহমুদউল্লাহ ০/২২)

বাংলাদেশ: ১৭২ (৩৬ ওভারে) (বিজয় ১৪, তামিম ২, সৌম্য ৬৯, মুশফিক ১০, মিঠুন ৪, মাহমুদউল্লাহ ৯, সাব্বির ৭, মিরাজ ৮, তাইজুল ৩৯*, শফিউল ১, রুবেল ২; জয়সুরিয়া ০/৪০, রাজিথা ২/১৭, দনঞ্জয়া ১/৪৪, শানাকা ৩/২৭, হাসারাঙ্গা ১/১৬, কুমারা ২/২৬)।

ফল: শ্রীলঙ্কা ১২২ রানে জয়ী।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

5h ago