১১৭ বছরের রেকর্ড ভাঙলেন স্মিথ
এর চেয়ে ভালো প্রত্যাবর্তন আর কি হতে পারতো। ১৬ মাস আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচে বল টেম্পারিং কাণ্ডে সাজা পেয়েছিলেন স্টিভ স্মিথ। আবার সাদা জার্সিতে ফিরেই করলেন সেঞ্চুরি। তাও আবার সবচেয়ে মর্যাদার টেস্ট সিরিজ অ্যাশেজে, যখন দরকার ছিল সবচেয়ে বেশি। শুধু যে সেঞ্চুরি করেছেন তাও নয়, রীতিমতো খাদের কিনারা থেকে দলকে টেনে তুলেছেন। ভেঙেছেন ১১৭ বছরের রেকর্ড।
এজবাস্টনে অ্যাশেজেই প্রথম দিনে তাই মূল নায়ক স্মিথই। বুক চিতিয়ে লড়াই করে দেখিয়ে দিলেন এ সংস্করণের রাজা তিনিই। নিষিদ্ধ হওয়ার আগে তিনিই ছিলেন টেস্ট র্যাংকিংয়ের শীর্ষে। অবশ্য স্মিথের সঙ্গে এদিন নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরেছিলেন দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার এবং ক্যামেরন ব্যানক্রফ্টও। কিন্তু দুইজনই ব্যর্থ হয়েছেন। শুধু তারা নয়, তাদের সঙ্গে পুরো ব্যাটিং লাইন আপই ভেঙে পড়েছে। ব্যতিক্রম ছিলেন কেবল স্মিথ।
এদিন অ্যাশেজের ১১৭ বছরের রেকর্ডও ভেঙেছেন স্মিথ। অ্যাশেজের প্রথম দিনে করেছেন ১৪৪ রান। যা এর আগে কেউ করতে পারেনি। এর আগে ১৯০২ সালে অসিদের বিপক্ষে প্রথম দিনে ১৩৮ রান করেছিলেন ইংলিশ ব্যাটসম্যান জনি টিলডেসলি। এতোদিন এটাই ছিল সর্বোচ্চ। তবে স্মিথ যদি প্রথম দিনের নায়ক হন তাহলে নিঃসন্দেহে পার্শ্ব নায়ক ইংলিশ পেসার স্টুয়ার্ট ব্রড। একাই ৫টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। সবচেয়ে বড় কথা অষ্টম বোলার হিসেবে অ্যাশেজে ১০০ উইকেট কিংবা তার বেশি নেওয়ার কৃতিত্ব দেখালেন এ পেসার।
এদিন টসটা জিতেছিল অস্ট্রেলিয়াই। বেছে নেয় ব্যাটিং। কিন্তু ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই ইংলিশ বোলারদের তোপে পরে দলটি। দুই ওপেনারকেই ছাঁটাই করেন স্টুয়ার্ট ব্রড। অন্য প্রান্তে ক্রিস ওকসও জ্বলে ওঠেন। ফেরান উসমান খাওয়াজাকে। তবে চতুর্থ উইকেটে স্টিভ স্মিথকে কিছুটা সঙ্গ দিয়েছিলেন ট্রাভিস হেড। ৬৪ রানের জুটি গড়েছিলেন। হেডকে ফিরিয়ে এ জুটিও ভাঙেন ওকস। তাতে আবার ভেঙে পরে অসিদের ব্যাটিং লাইন আপ। উইকেট তুলে নেওয়ার উৎসবে মাতেন ব্রড ও ওকস। সঙ্গে যোগ দেন বেন স্টোকসও।
২৩ রানের ব্যবধানে ৫ উইকেট হারিয়ে তখন অস্ট্রেলিয়া ধুঁকছিল দ্রুত গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায়। কারণ এক প্রান্তে স্মিথ থাকলেও অপর প্রান্তে লেজ বেড়িয়ে গেছে। হাতে আছে মাত্র ২টি উইকেট। তখন একাই লড়াই করা শুরু দেন স্মিথ। অবশ্য তাকে দারুণ সঙ্গ দেন ১০ নম্বর ব্যাটসম্যান পিটার সিডল। গড়েন ৮৮ রানের দারুণ এক জুটি। সিডলকে বিদায় করে এ জুটি ভাঙেন মইন আলি। কিন্তু এরপর ১১ নম্বর ব্যাটসম্যান নাথান লাওনকে নিয়েও দারুণ লড়াইকে করেন স্মিথ। শেষ উইকেট জুটিও আসে ৭৪ রান। ফলে প্রথম ইনিংসে ২৮৪ রানের সংগ্রহই পায় সফরকারীরা।
২১৯ বলে নিজের ইনিংসটি গড়েছেন স্মিথ। ১৬টি চার ও ২টি ছক্কায় সাজান নিজের ইনিংসটিকে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানটি আসে সিডলের ব্যাট থেকে। বোলার থেকে রীতিমতো ব্যাটসম্যান বনে গিয়েছিলেন এ পেসার। ৪৪ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনি। মূল কাজটি স্মিথকে স্ট্রাইক দেওয়া হলেও দারুণ সেট হয়ে গিয়েছিলেন। এছাড়া ৩৫ রান করেন হেড। ৮৬ রানের খরচায় ৫ উইকেট শিকার করেন ব্রড। ওকস পান ৩টি উইকেট।
নিজেদের প্রথম ইনিংসে এদিন মাত্র ২ ওভারের জন্য মাঠে নামলেও কোন নাইটওয়াচম্যান নামায়নি ইংল্যান্ড। দুই ওপেনার ররি বার্নস ও জেসন রয় ব্যাটিংয়ে নেমেছেন। অপরাজিত থেকেই মাঠ ছেড়েছেন। প্রথম দিনে তাদের সংগ্রহ বিনা উইকেটে ১০ রান।
Comments