চিকিৎসকরা ঠিকমত কাজ করছেন কী না, খোঁজ রাখা হচ্ছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

zahid malek
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। ফাইল ছবি

বর্তমান ডেঙ্গু পরিস্থিতিতে জনগণকে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি সার্বক্ষণিকভাবে তদারকির জন্য তার মন্ত্রণালয়ের ১০টি উচ্চ পর্যায়ের দল কাজ করে যাচ্ছে।

বার্তা সংস্থাটিকে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ে একটি সেলও চালু করা হয়েছে। ওই সেল চিকিৎসকরা ঠিকমত কাজ করছেন কী না, তার খোঁজ রাখছে। কারো বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

এছাড়া মন্ত্রণালয় থেকে হটলাইন চালু করা হয়েছে। যেখানে কেউ যদি ঠিকমত চিকিৎসা না পান বা বেশি বিল রাখা হচ্ছে এমন অনেক বিষয়ে অভিযোগ জানাতে পারবেন বলে জানান মন্ত্রী।

ডেঙ্গু নিয়ে উদ্বিগ্ন না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “জ্বর বা ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করুন। আমরা ঢাকাসহ সারাদেশে চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে যা যা করা দরকার তাই করছি।”

তিনি আরও বলেন, “ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা নিশ্চিতে শেখ হাসিনা বার্ন এন্ড প্লাস্টিক ইনস্টিটিউটকে এক হাজার শয্যায় উন্নীত করা হচ্ছে। রোগী বাড়লে আমরা প্রস্তুত আছি। তবে মনে হয় না সেটার প্রয়োজন হবে।”

ডেঙ্গু রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত বেড নেই বলে সাধারণ মানুষের অভিযোগ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “প্রয়োজন হলে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে আরও নতুন ১ হাজার বেড, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে এক হাজার বেড, শিশু হাসপাতালেও বেশ কিছু নতুন বেড স্থাপন করা যাবে। ইতিমধ্যেই মিটফোর্ডে ১০০টি এবং বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে নতুন ২০০টি বেড বৃদ্ধি করা হয়েছে।”

“সকলকে অনুরোধ করবো কোনো নেতিবাচকতা নয়, আতঙ্ক নয়। সকলে মিলে কাজ করছি যাতে করে মানুষ ডেঙ্গু থেকে মুক্তি পায় এবং যথাযথ চিকিৎসার মাধ্যমে যেনো মানুষকে সুস্থ রাখা যায়,” যোগ করেন তিনি।

তবে ঈদের সময় ঘিরে চিন্তা বাড়ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, “ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য বিভাগের সবার ছুটি বাতিল করা হয়েছে। চিকিৎসকরা দিন-রাত কাজ করছেন। প্রতিদিন ব্রিফিং করা হচ্ছে, মনিটরিং করা হচ্ছে। আসলে আমরা সকলে মিলে কাজ করছি।”

তিনি বলেন, “ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট, স্যালাইন, ডাক্তার ও নার্সের কোনোকিছুর অভাব নেই। আমরা এ বিষয়ে সারাদেশে সকল জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দিয়েছি এবং আরও সতর্কভাবে কাজ করতে বলেছি।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্বিক পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “তিনি সবসময় নজর রাখছেন। প্রথমদিকে কিটের কিছু অভাব দেখা দিয়েছিল। আমরা সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ নিয়ে ৫০ লাখ কিট আমদানির অনুমোদন দিয়েছি। ইতিমধ্যে দুই লাখ কিট চলে আসছে। আর কোনো সঙ্কট হবে না।”

ডেঙ্গুর উৎপত্তিস্থল ধ্বংসের চেষ্টা চলছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করতে পারলে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমে আসবে। এক্ষেত্রে আমাদের সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। কারণ মশা তো ঘরের ভেতরেও আছে। মশা তাড়ানোর জন্য তো ঘরে যারা থাকেন তাদেরও সচেতনতা দরকার।”

মানুষ ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্ক থেকেই কেবল ডেঙ্গু পরীক্ষা করাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “গত সপ্তাহে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একদিনে প্রায় ৬০০ জন ডেঙ্গু রোগের পরীক্ষা করেছেন, যাদের মধ্যে মাত্র ১৬ জনের ডেঙ্গু পজিটিভ ধরা পরে। ঢাকা শিশু হাসপাতালে ১৬৩ জন ডেঙ্গু পরীক্ষা করে পজিটিভ ধরা পরেছে কেবল ৭ জনের। তাই এটা নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে।”

এবছর সারাদেশে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে ডেঙ্গু। প্রতিদিন রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হাজারো রোগী ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতালে। সরকারি হিসাব মতে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে প্রাণ হারিয়েছেন ২৩ জন। শুধুমাত্র জুলাই মাসেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর আগস্ট মাসের প্রথম ছয় দিন মারা গেছেন তিনজন। তবে বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা আরও অনেক বেশি।

Comments

The Daily Star  | English

Smaller in size, larger in intent

Finance Adviser Salehuddin Ahmed has offered both empathy and arithmetic in his budget speech, laying out a vision that puts people, not just projects, at the heart of economic policy.

9h ago