পাঁচ মাসে দ্বিতীয় দফায় পানির দাম বাড়াতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম ওয়াসা

এ বছরের মার্চে চট্টগ্রাম ওয়াসা পাঁচ শতাংশ পানির দাম বাড়িয়েছিলো। মাত্র পাঁচ মাসের ব্যবধানে আরও ৬০ শতাংশ পানির দাম বাড়াতে দ্রুত স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠাতে যাচ্ছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এ সংস্থা।
wasa

এ বছরের মার্চে চট্টগ্রাম ওয়াসা পাঁচ শতাংশ পানির দাম বাড়িয়েছিলো। মাত্র পাঁচ মাসের ব্যবধানে আরও ৬০ শতাংশ পানির দাম বাড়াতে দ্রুত স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠাতে যাচ্ছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এ সংস্থা।

আজ (৯ আগস্ট) চট্টগ্রাম ওয়াসার বোর্ড মিটিংয়ে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে আগামী দুই মাসের মধ্যে বর্ধিত দাম গ্রাহক পর্যায়ে প্রয়োগ করা হবে।

এ বছরের জুনে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম চট্টগ্রাম ওয়াসা পরিদর্শনে এসে সংস্থাটিকে স্বাবলম্বী হতে পরামর্শ দেওয়ার দুই মাসের মধ্যে দাম বাড়ানোর তোড়জোড় করে ওয়াসা। তখন মন্ত্রী বলেন, “ভালো পানি পেতে হলে টাকা দিতে হবে।”

এ বছরের মার্চে এক ইউনিট (এক হাজার লিটার) পানির দাম আবাসিক সংযোগে ৯ টাকা ৪৫ পয়সা থেকে ৯ টাকা ৯২ পয়সা আর অনাবাসিক সংযোগের ক্ষেত্রে ২৬ টাকা ২৫ পয়সা থেকে ২৭ টাকা ৫৬ পয়সার উন্নীত করা হয়।

এবার আবাসিক সংযোগের ক্ষেত্রে ইউনিট প্রতি ১৬ টাকা আর অনাবাসিকের ক্ষেত্রে ৪০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

বাংলাদেশ কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন (ক্যাব) চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের মতে, সিস্টেম লস, পানি চুরি ও নন রেভিনিউ ওয়াটার (এনআরডব্লিও) কমানো গেলে গ্রাহকদের ওপর এ বাড়তি মূল্য চাপাতে হয় না।

তবে, ওয়াসা কর্মকর্তাদের যুক্তি- তারা এসব কমানোর চেষ্টা করছেন। যেহেতু সরকার এ সংস্থাকে কোনো ভর্তুকি দিচ্ছে না, তাই উৎপাদন খরচ তুলতে দাম না বাড়িয়ে তাদের সামনে কোনো বিকল্প নেই।

ক্যাব চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের সভাপতি এম এম নাজের হোসাইন বলেন, “ওয়াসা যে উৎপাদন খরচের কথা বলে, সেটা বৈজ্ঞানিকভাবে সত্য নয়।”

“আমরা জানতে চেয়েছি কীভাবে এটা নির্ধারণ করা হয়, কিন্তু তারা সেটা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি সিস্টেম লস, পানি চুরি, ভূতুড়ে বিল ও পাইপলাইনে যে পানির অপচয় হয় সেটা কমাতে। কিন্তু তাদের মনোযোগ পানির দাম বাড়ানোর প্রতি যতটা, এগুলোর বিষয়ে ততটা দেখি নাই”, বলেন তিনি।

আর চট্টগ্রাম ওয়াসার বোর্ডে কোনো গ্রাহক প্রতিনিধি নাই। ফলে গ্রাহকবিরোধী যেকোনো সিদ্ধান্ত তারা বিনা বিরোধিতায় গ্রহণ করে ফেলেন বলে অভিযোগ ক্যাব সভাপতির।

চট্টগ্রাম ওয়াসার সভাপতি এ কে এম ফজলুল্লাহ বলেন, “প্রতি ইউনিট পানির উৎপাদন খরচ এখন ১৬ টাকা। কিন্তু আমরা বিক্রি করছি প্রায় দশ টাকায়। আমাদের প্রতি ইউনিটে ক্ষতি ছয় টাকা।”

তিনি আরও বলেন, “আন্তর্জাতিক লগ্নী সংস্থাগুলোর কাছে আমাদের প্রচুর ঋণ আছে, যা পরিশোধ করতে হবে। অন্যদিকে উৎপাদন খরচ বেশি। সরকারও কোনো ভর্তুকি দিচ্ছে না। সব মিলিয়ে যদি পানির দাম না বাড়াই, তাহলে চট্টগ্রাম ওয়াসা অস্তিত্ব রক্ষার সংকটে পড়ে যাবে।”

সিস্টেম লস, পানি চুরি ও পানির অপচয় রোধে ওয়াসা কাজ করে যাচ্ছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Ban on plastic bags a boon for eco-friendly sacks

Availability of raw materials now a challenge

1h ago