ঈদ যাত্রীদের জন্য খুলে দেওয়া হলো নারায়ণগঞ্জের ভুলতা ফ্লাইওভার
ঈদকে কেন্দ্র করে যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা ফ্লাইওভার যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে।
আজ (৯ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টায় আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা ছাড়াই এ সেতু খুলে দেওয়া হয়। আর সেতুটি খুলে দেওয়ার পর থেকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক, গাজীপুর-মদনপুর সড়কে (এশিয়ান হাইওয়ে বাইপাস হিসেবে পরিচিত) কোনো চাপ নেই।
ভুলতা এলাকার কাপড় ব্যবসায়ী গোবিন্দ সাহা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “দুই দিন আগেও যানজট ছিলো। কিন্তু আজকে দুপুরে হঠাৎ চোখে পড়ে ফ্লাইওভার দিয়ে গাড়ি চলাচল করছে। আর রাস্তায় কোনো যানজট নেই। রাস্তা ফাঁকা হয়ে গেছে। তবে রাস্তার পাশে ঈদে বাড়ি ফেরা মানুষ আছে প্রচুর।”
মেঘালয় পরিবহনের বাসচালক সোহেল মিয়া বলেন, “ঈদে যাওয়া ও ফেরা পর্যন্ত বাসের চাপটা বেশি থাকে। এখন ফ্লাইওভার খুলে দেওয়ায় আমাদের ও যাত্রীদের উভয়ের জন্য ভালো হয়েছে। দ্রুত ব্রিজের কাজটা শেষ করে পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হলে আরও ভালো হবে।”
ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক রফিকুল হক বলেন, “গত দুই দিন ধরে যানজট নিরসনে পুলিশ কাজ করছিলো। ফ্লাইওভার চালু হওয়ার পর থেকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত কোথাও কোনো যানজট নেই। আমাদের পুলিশের চাপও কমে এসেছে।”
ভুলতা ফ্লাইওভারের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) আবুল সালেহ মো. নুরুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “ঈদকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ধরে ভুলতা ফ্লাইওভারের সামনে যানজট ছিলো। আর তাই ঘরমুখী মানুষের যানজটের দুর্ভোগ কমাতে কোনো ঘোষণা ছাড়াই এ ফ্লাইওভার খুলে দেওয়া হয়েছে। এতে করে নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচল করতে পারছে। তবে আগামী ১৮ আগস্ট পর্যন্ত এ ফ্লাইওভার দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারবে।”
তিনি আরও বলেন, ট্রাফিক পুলিশ, স্থানীয় জনগণসহ বস্ত্রমন্ত্রী ও প্রশাসন এ বিষয়ে আবেদন করেছিলেন যাতে ঈদের সময় ফ্লাইওভার খুলে দেওয়া হয়। এর আগে গত ঈদুল ফিতরেও যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে ফ্লাইওভার খুলে দেওয়া হয়। এসব কিছু বিবেচনা করে ঊর্ধ্বতনদের পরামর্শ অনুযায়ী আজও খুলে দেওয়া হয়েছে।
নুরুজ্জামান বলেন, “ভুলতা ফ্লাইওভারের ৯৫ শতকরা কাজ শেষ। পাঁচ ভাগ কাজ বাকি আছে। সেটা হলো বৈদ্যুতিক বাতি, রঙসহ সৌন্দর্যবর্ধনের কিছু কাজ। সব কাজ শেষ হলে সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভুলতা ফ্লাইওভারের উদ্বোধন করবেন।”
নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক মোল্লা তাসলিম হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “গত কয়েক দিন ধরে মহাসড়কের ভুলতা অংশে যানজট ছিলো। এটা নিয়ে ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কথা হয়। এরপরই শুক্রবার সকাল থেকে ফ্লাইওভার খুলে দেয়। ফলে এখন সড়ক সম্পূর্ণ ফাঁকা। ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের অংশে কোথাও কোনো যানজট নেই।”
প্রসঙ্গত ২৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয় ২০১৩ সালের জুলাই মাসে। দুই বছরের মধ্যে অর্থাৎ ২০১৫ সালের জুনে কাজ শেষ করার লক্ষ্য ধরা ছিল। পরে ব্যয় না বাড়িয়ে মেয়াদ দুই বছর বাড়ানো হয়। ২০১৬ সালে সংশোধন করে ব্যয় বাড়িয়ে ২৬৩ কোটি টাকা করা হয়। এরপর মেয়াদ বাড়ানো হয় আরও এক বছর। এরপর ২০১৮ সালে আবারও ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ানো হয়। ওই সময় ব্যয় বাড়িয়ে করা হয় ৩৫৩ কোটি টাকা এবং মেয়াদ ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত দুই বছর বাড়ানো হয়।
Comments