‘এ যেন কল্পনার মহাসড়ক’
পবিত্র ঈদুল আযহার বাকি আর একদিন। কিন্তু এরই মধ্যে ফাঁকা হয়ে গেছে নারায়ণগঞ্জ অংশের ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক। নেই গাড়ির চাপ, নেই যানজট। এ যেন কল্পনার মহাসড়ক।
শনিবার সকাল থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত দুটি মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশের কোথাও কোন যানজটের খবর পাওয়া যায়নি। সাধারণ মানুষ সহ ট্রাফিক পুলিশের দাবি, সাধারণ দিনের চেয়েও যানবাহনের সংখ্যা কম। হাসি মুখে বাড়ি ফিরছে ঘরমুখো মানুষ।
নেত্রকোনা থেকে সকালে নারায়ণগঞ্জে আসেন মুবাশ্বির শ্রাবণ। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ঈদে প্রচণ্ড যানজট হয় তাই বৃহস্পতিবার বিকেলেই বাড়িতে চলে যাই। কিন্তু বিশেষ প্রয়োজনে আজ আবার নারায়ণগঞ্জে এসেছি। কিন্তু বিশ্বাস করেন এমন যানজট বিহীন মহাসড়ক দেখে মনে হচ্ছে আমি কল্পনার মধ্যে আছি।
তিনি বলেন, আমি সাত বছর ধরে নারায়ণগঞ্জে চাকরি করি। সেই সুবাদে প্রতিবছর ঈদে বাড়িতে যাওয়া হয়। ৭ বছরের মধ্যে এবারই মহাসড়ক এমন ফাঁকা দেখছি। সাধারণ সময়ে যেসব যানবাহন থাকে আজকে তাও নেই। ভোগান্তির কোনো চিহ্নই নেই। নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর সেতু, ভুলতা ফ্লাইওভার ও মেঘনা সেতু চালু হওয়ার কারণে এমনটা হয়েছে। নেত্রকোনা থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত আসতে মাত্র তিন ঘণ্টা লেগেছে। যেখানে আগে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা লাগতো।
এশিয়া এয়ারকন পরিবহনের চালক মজিবুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, কাঁচপুর সেতু, মেঘনা সেতুতেই বেশি যানজট লেগে যেতো। কিন্তু চার লেনের দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতু, মেঘনা দ্বিতীয় সেতু চালু হওয়ার পর সময় কম লাগছে। যাত্রীরা আরামে আসছে ও যাচ্ছে।
চট্টগ্রামের যাত্রী সালমা বেগম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, কোনো যানজট নেই। আরামে বাড়ি যাচ্ছি। খুব ভালো লাগছে।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কাইয়ুম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বৃহস্পতিবার দিন ও রাতে মহাসড়কে গাড়ি চাপ ছিল। কিন্তু শুক্রবার থেকেই গাড়ির চাপ কমে আসে। আজকে দুটি মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশের কোথাও যানজট নেই। শুধু নারায়ণগঞ্জ নয়, দুটি মহাসড়কের সিলেট ও চট্টগ্রাম পর্যন্ত কোথাও যানজটের খবর পাইনি।
নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক মোল্লা তাসলিম হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, তিনটি নতুন সেতু চালু হওয়ার পর থেকেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জ অংশে যানজট নেই। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শুধু ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতা ফ্লাইওভারের সামনে যানজট ছিল। শুক্রবার সকালে নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারটি চালু করে দেওয়ায় এখন সেটাও নেই।
তিনি বলেন, সাধারণ দিনে গাড়ির যে চাপ থাকে বর্তমানে সেটাও নেই। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে যাত্রী নিলেও যানজট লাগার সম্ভাবনা নেই। ফাঁকা রাস্তায় স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছে মানুষ। আশা করছি একই ভাবে মানুষ ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফিরতে পারবেন।
Comments