আজ পবিত্র ঈদুল আজহা
আজ পবিত্র ঈদুল আজহা। বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা এবং যথাযথ ধর্মীয় মর্যদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে আজ (১২ আগস্ট) রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে উদযাপিত হচ্ছে মুসলমানদের অন্যতম প্রধান এই ধর্মীয় উৎসব।
মহান আল্লাহর অপার অনুগ্রহ লাভের আশায় ঈদুল আজহার জামাত শেষে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সামর্থ অনুযায়ী পশু কোরবানি করছেন।
বার্তা সংস্থা বাসস জানায়, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দেশবাসীসহ বিশ্বের সকল মুসলিম ভাইবোনদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, কোরবানি আমাদের মাঝে আত্মদান ও আত্মত্যাগের মানসিকতা সঞ্চারিত করে, আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর সঙ্গে সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে নেওয়ার মনোভাব ও সহিষ্ণুতার শিক্ষা দেয়। কোরবানির মর্ম অনুধাবন করে সমাজে শান্তি ও কল্যাণের পথ রচনা করতে আমাদের সংযম ও ত্যাগের মানসিকতায় উজ্জীবিত হতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে পবিত্র ঈদুল আজহার মর্মবাণী অন্তরে ধারণ করে নিজ-নিজ অবস্থান থেকে কাজের মাধ্যমে বৈষম্যহীন, সুখী ও সমৃদ্ধ, বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “শান্তি, সহমর্মিতা, ত্যাগ ও ভ্রাতৃত্ববোধের শিক্ষা দেয় ঈদুল আজহা। তাই আসুন, আমরা সকলে পবিত্র ঈদুল আজহার মর্মবাণী অন্তরে ধারণ করে নিজ-নিজ অবস্থান থেকে জনকল্যাণমুখী কাজে অংশ নিয়ে বৈষম্যহীন, সুখী, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তুলি।”
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে আজ বঙ্গভবনে সর্বস্তরের জনগণের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। এদিন বঙ্গভবনে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে অনুষ্ঠান শুরু হবে। ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখবেন।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ তার সরকারি বাসভবন গণভবনে দলীয় নেতা ও কর্মী, বিচারক এবং বিদেশী কূটনীতিকসহ সর্বস্তরের জনগণের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
এবার ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি’র উদ্যোগে রাজধানীর ৫৮২টি স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় জাতীয় ঈদগাহের প্রধান জামাতসহ ঈদুল আজহার ৩১২টি এবং উত্তর সিটি কর্পোরেশনে’র ২৭০টি স্থানে জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রতিবারের মত এবারও দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সরকারি এবং বেসরকারি ভবন ও বিদেশে বাংলাদেশ মিশনসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হচ্ছে। এছাড়াও ‘ঈদ মোবারক’ লিখিত ব্যানার ঢাকা মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ ট্রাফিক আইল্যান্ড ও লাইট পোস্টে প্রদর্শিত হচ্ছে। রাতে নির্দিষ্ট সরকারি ভবনসমূহ ও গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনাসমূহে আলোকসজ্জা করা হবে।
ঈদ উপলক্ষে গতকাল থেকে শুরু হয়েছে তিনদিনের সরকারি ছুটি। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে বরাবরের মতো এবারও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বড় শহর থেকে অগণিত মানুষ নাড়ির টানে গেছেন গ্রামের বাড়িতে।
সারাদেশে বিভাগ বা জেলা বা উপজেলা বা সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা বা সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ বা সরকারি সংস্থাসমূহের প্রধানগণ জাতীয় কর্মসূচির আলোকে নিজ নিজ কর্মসূচি অনুযায়ী ঈদ উদযাপন করছে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনসমূহে যথাযথভাবে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন করছে।
এদিকে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি গণমাধ্যমসমূহ যথাযোগ্য গুরুত্ব সহকারে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করছে।
ঈদ উপলক্ষে দেশের সকল সরকারি হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশু সদন, বৃদ্ধ নিবাস ও মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে।
ঈদের দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বিনা টিকেটে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন সকল শিশু পার্কে প্রবেশ এবং বিনোদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কুরবানীকৃত পশুর বর্জ্য দ্বারা যাতে দুর্গন্ধ না ছড়ায় সে বিষয়ে সকল প্রকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় এই উৎসব উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দও দেশবাসীকে ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
Comments