অবসরে ‘রহস্য স্পিনার’ অজন্তা মেন্ডিস

ajantha mendis
অজন্তা মেন্ডিস। ছবি: এএফপি

হালের ক্রিকেটে ‘রহস্য স্পিনার’ শব্দটা ব্যবহার হয় প্রায়শই। ক্রিকেটে ভিডিও বিশ্লেষণ প্রযুক্তি যুক্ত হওয়ার পর এই তকমাটা যার নামের পাশে সবার আগে জুড়ে গিয়েছিল তিনি অজন্তা মেন্ডিস। ‘ক্যারম বল’-এর জনক শ্রীলঙ্কার এই ঘূর্ণি জাদুকর। স্পিন বোলিংয়ে নতুন মাত্রা যোগ করা ৩৪ বছর বয়সী মেন্ডিস ঘোষণা দিয়েছেন অবসরের। বুধবার (২৮ অগাস্ট) সব ধরনের ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন তিনি।

জাতীয় দলের জার্সিতে মেন্ডিস সবশেষ ম্যাচটি খেলেছিলেন চার বছর আগে। ২০১৫ সালে ক্রাইস্টচার্চে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওই ওয়ানডেটিই হয়ে থাকল তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। অবসর নেওয়ার আগে তিনি লঙ্কানদের হয়ে ১৯ টেস্টে ৭০ উইকেট, ৮৭ ওয়ানডেতে ১৫২ উইকেট ও ৩৯ টি-টোয়েন্টিতে ৬৬ উইকেট নিয়েছেন।

‘ক্যারম বল’ আবিষ্কার করে ব্যাটসম্যানদের রীতিমতো ভড়কে দিয়েছিলেন মেন্ডিস। তিনি মূলত ডানহাতি অফব্রেক বোলার। কিন্তু ক্যারম বোর্ড খেলার সময় স্ট্রাইকারে যেভাবে টোকা দেওয়া হয়, ঠিক সেভাবে লেগব্রেক ডেলিভারি দিয়ে ব্যাটসম্যানদের বোকা বানাতে তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত।

২০০৮ সালের এপ্রিলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অভিষেক হয়েছিল মেন্ডিসের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডেতে তিনি ৩ উইকেট নিয়েছিলেন ৩৯ রানে। এরপর এশিয়া কাপে দুর্দান্ত বোলিং করে সারা বিশ্বের কাছে নিজেকে পরিচিত করে তোলেন মেন্ডিস। আসরের প্রথম চার ম্যাচে ১১ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। তবে সেরাটা জমিয়ে রেখেছিলেন ফাইনালের জন্য। করাচিতে ভারতের বিপক্ষে ৬ উইকেট দখল করেছিলেন মাত্র ১৩ রানের বিনিময়ে। স্বাভাবিকভাবেই তার চোখ ধাঁধানো বোলিংয়ে ১০০ রানের বিশাল ব্যবধানে জিতে শিরোপা ঘরে তুলেছিল শ্রীলঙ্কা।

ওয়ানডেতে দ্রুততম ৫০ উইকেটে মালিক মেন্ডিস। মাত্র ১৯ ম্যাচ খেলে উইকেটের হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেছিলেন তিনি। তার কাছাকাছি থাকা ভারতের অজিত আগারকার ও নিউজিল্যান্ডের মিচেল ম্যাকক্লেনাঘান ৫০ উইকেট শিকার করতে ২৩টি করে ম্যাচ খেলেছেন।

এশিয়া কাপে আলো ছড়ানোর পর ওই বছর জুলাইতে টেস্ট দলে ডাক পান মেন্ডিস। ভারতের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। অভিষেকে ৮ উইকেটসহ তিন টেস্টের সিরিজে নিয়েছিলেন ২৬ উইকেট।

মেন্ডিসের বেশ কয়েকটি কৌশলে বল করতে পারতেন- দুইদিকেই বল ঘোরাতে পারতেন এবং স্কিড করাতেও পারতেন। ফলে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তিনি হয়ে উঠেছিলেন বিধ্বংসী। এই ফরম্যাটের ইতিহাসে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ডটাও মেন্ডিসের দখলে। ২০১২ সালে বিশ্ব টি-টোয়েন্টির উদ্বোধনী ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৮ রানে ৬ উইকেট পেয়েছিলেন তিনি।

তবে মেন্ডিসের রহস্যময় বোলিংয়ের নাড়ি-নক্ষত্র ব্যাটসম্যানরা বুঝে ফেলার পর তার পারফরম্যান্সের অবনতি ঘটে। তিনি হয়ে পড়েন আর দশটা গড়পড়তা বোলারের মতো। সঙ্গে যুক্ত হয় চোট সমস্যা। সেকারণে তিনি দলে হয়ে পড়েন অনিয়মিত। জায়গা পাননি ২০১৫ বিশ্বকাপের শ্রীলঙ্কা স্কোয়াডেও।

ওই বছরের নভেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ডাক পেলেও চোখে পড়ার মতো কিছু করে দেখাতে ব্যর্থ হন মেন্ডিস। পরের মাসে ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪৯ রান খরচ করলেও তিনি ছিলেন উইকেটশূন্য।

Comments

The Daily Star  | English
bad loans rise in Bangladesh 2025

Bad loans hit record Tk 420,335 crore

It rose 131% year-on-year as of March of 2025

5h ago